মনের বিরুদ্ধে টেস্ট খেলে আসছেন সাকিব!

'এমন তো না যে আমি আর ক্রিকেটই খেলব না। অবশ্যই খেলব, কেন খেলব না! আমার ইচ্ছা সবার পরে টেস্ট থেকে অবসর নেওয়ার। আগে টি-টোয়েন্টি আর ওয়ানডে থেকে অবসর নেব, সবার শেষে টেস্ট থেকে।' ২০১৭ সালে টেস্ট ক্রিকেট থেকে ছয় মাসের ছুটি চাওয়ার পর কথাগুলো বলেছিলেন সাকিব আল হাসান। সাকিব বুঝিয়েছিলেন, টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি তার নিবেদন সবচেয়ে বেশি।
তিন বছর পর এসে সেই সাকিবই টেস্ট ক্রিকেটকে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছেন। আগামী এপ্রিলে বাংলাদেশ যখন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলবে, সাকিব তখন ব্যস্ত থাকবেন কলকতা নাইট রাইডার্সের হয়ে খেলায়। দলের দুঃসময়ে সাকিবের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটার ছুটি নেওয়ায় বিসিবি সভাপতি রীতিমতো হতভম্ব। নাজমুল হাসান পাপনের দাবি, টেস্টের প্রতি তেমন আগ্রহ নেই সাকিবের।
সাকিবের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটারকে বিসিবি সব সময়ই দলে চেয়েছে। ফরম্যাটটির প্রতি সাকিবের অতোটা আগ্রহ নেই বুঝে ২০১৭ সালে তাকে অধিনায়ক করা হয়। অর্থাৎ, অনেকটা জোর করেই সাকিবকে দিয়ে টেস্ট খেলানোর চেষ্টা করে আসছে বিসিবি। ঘুরিয়ে বললে দাঁড়ায়, মনের বিরুদ্ধেই টেস্ট খেলে আসছেন বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার।
সাকিব যে টেস্ট খেলতে চান না, সেটা আরও একবার মনে করিয়ে দিলেন নাজমুল হাসান। নিউজিল্যান্ড সফরের আগের দিন (সোমবার) ক্রিকেটার, কোচিং স্টাফদের সঙ্গে বৈঠকের পর বিসিবি সভাপতি বলেন, 'সাকিবকে কি খেলানো যাবে না জোর করে? ওকে ছুটি না দিলে কি করতো? হয়তো খেলতো। কিন্তু আমরা এটা চাই না। আমরা চাই খেলাটাকে ভালোবেসেই খেলুক। সাকিব তো আরও তিন বছর আগেই খেলতে চায়নি টেস্ট। ও তো এমনিতেই টেস্টের প্রতি অতো আগ্রহ দেখায়নি, চাচ্ছিল না খেলতে। তখন ওকে টেস্ট অধিনায়ক করে দেওয়া হলো।'
সাকিবের সঙ্গে জোর করে ফল ভালো হচ্ছে না বলে মনে করেন নাজমুল হাসান। তার মতে আরও পিছিয়ে পড়তে হচ্ছে, 'জোর করে তো চেষ্টা করলাম। কিন্তু জোর করে খেলানোর মানে হয় না। তাতে করে আমরা ভবিষ্যতে এগোতে পারছি না, পেছনের দিকে যাচ্ছি। এখন কাউকে জোর করব না। আমরা যখন জানব, এই কজন খেলোয়াড় টেস্ট খেলতে চায় না, তখন তাদের বিকল্প নিয়ে চিন্তা করতে হবে আমাদের। হয়তো এক বা দেড় বছর সময় লাগবে, লাগুক। কিন্তু ভবিষ্যতের জন্য আমরা পাব।'
সাকিবের ছুটি চাওয়াতে যেন একটা শিক্ষাই হয়ে গেল বিসিবির। এ কারণে চুক্তিতে পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে বিসিবি। নাজমুল হাসান বলেন, 'যারা ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টি খেলবে, তারা বলে দেবে আমরা টেস্ট খেলব না। কোথায় কোথায় টুর্নামেন্ট হবে, ফ্র্যাঞ্চাইজি হবে, ওগুলো খেললে আমরা টেস্ট খেলবো না বলে দিক। আমরা লিখিত নিয়ে নিচ্ছি। কিন্তু যে বলবে জাতীয় দলে খেলবে, তাকে খেলতেই হবে।'