বড় মঞ্চে ঠিকই নবাব সাকিব, বাংলাদেশের সামনে ছোট লক্ষ্য
নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে মাঠে ফেরার অনেকদিনই হয়ে গেছে। একটি টুর্নামেন্টও খেলে ফেলেছেন সাকিব আল হাসান। যেখানে ব্যাটে-বলে অন্য এক সাকিবের দেখা মিলেছিল। ৯ ম্যাচ খেলেও কিছু করতে না পারায় চলছিল হা-হুতাশ। কোথায় হারালেন সেই সাকিব; উঠছিল এমন প্রশ্ন। নিষেধাজ্ঞার পর প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নেমেই বল হাতে সেই উত্তর দিয়ে দিলেন বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার।
বুধবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে সেই আগের সাকিবকে দেখা গেল, দেখা গেল তার সেই স্পিন ঘূর্ণিও। ৪৮৬ দিন পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে নামা বাংলাদেশ অলরাউন্ডারের বল খেলতেই পারেনি ক্যারিবীয়রা। মুস্তাফিজুর রহমানের পর সাকিবের স্পিন বিষে নীল হয়ে ১২২ রানেই গুটিয়ে গেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস। ৩ উইকেট নিয়ে বড় অবদান রেখেছেন অভিষিক্ত হাসান মাহমুদও।
বাংলাদেশের সব বোলারের বিপক্ষেই ধুঁকেছেন উইন্ডিজের ব্যাটসম্যানরা। এর মধ্যে সাকিবের বিপক্ষে রীতিমতো অসহায় ছিলেন জেসন মোহাম্মদ ও আন্দ্রে ম্যাকার্থিরা। প্রথম স্পেলে টানা ৭ ওভার বোলিং করেন বাঁহাতি এই স্পিনার। ৭ ওভারে মাত্র ৮ রান খরচায় সাকিব তুলে নেন তিনটি উইকেট। ম্যাচে ৭.২ ওভারে ৮ রান খরচায় তার শিকার ৪ উইকেট।
এই চার উইকেটে দেশের মাটিতে ওয়ানডেতে ১৫০ উইকেট পূর্ণ হয়েছে সাকিবের। ঘরের মাঠে এখন তার ১৫৩ উইকেট, যা বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ। ১৫০ উইকেটের মাইলফলকে পৌঁছাতে সাকিবকে খেলতে হয়েছে ১০০টি ওয়ানডে ম্যাচ। বাঁহাতি এই স্পিনারের পরই আছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। দেশের মাটিতে ১০৩ ওয়ানডেতে সাবেক এই অধিনায়কের উইকেট ১৪৭টি।
সাকিবের স্পিন পাকেই মূলত বিধ্বস্ত হয় ক্যারিবীয়দের টপ অর্ডার। যেখান থেকে আর ঘুরে দাঁড়ানো হয়নি সফরকারীদের। চেষ্টা করলেও পরে অভিষিক্ত হাসান মাহমুদ আগুনে বোলিং করে উইন্ডিজ ব্যাটসম্যানদের কোণঠাসা করে ফেলেন। ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়ানডে খেলতে নেমেই ২৮ রান খরচায় ঝুলিতে ৩ উইকেট পুড়েছেন ডানহাতি এই তরুণ পেসার। টানা দুই উইকেট নিয়ে তৈরি করেছিলেন হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও।
বল হাতে অবশ্য বাংলাদেশকে ভালো শুরু এনে দেন মুস্তাফিজ। বাঁহাতি এই পেসার ২৪ রানের মধ্যেই উইন্ডিজের দুই ওপেনার সুনীল আমব্রিস ও জশুয়া ডা সিলভাকে ফিরিয়ে দেন। মুস্তাফিজের পর সাকিবের স্পিন ভেল্কি, এরপর হাসানের গতিময় আক্রমণ। তাতে দিশেহারা উইন্ডিজ। মাঝে একটি উইকেট নেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
ক্যারিবীয়দের হয়ে সর্বোচ্চ ৪০ রানের ইনিংস খেলেন অভিষিক্ত কাইল মেয়ার্স। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৮ রান করেন মারকুটে ব্যাটসম্যান রভম্যান পাওয়েল। আন্দ্রে ম্যাকার্থি ১২ ও অধিনায়ক জেসন মোহাম্মদ ১৭ রান করেন। বাকিদের কেউ-ই দুই অঙ্কের ঘরে যেতে পারেননি।