ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অসহায় আত্মসমর্পণে বাংলাদেশের বড় হার
বাংলাদেশের ব্যাটিং দেখে মনে হয়েছিল এই উইকেটে ব্যাটিং করা খুব কঠিন। স্পিনে বাংলাদেশও কাঁপিয়ে দেবে ইংল্যান্ডকে। কিন্তু অদ্ভুতভাবে কিছুক্ষণের মধ্যে পাল্টে গেল উইকেটের চেহারা! একই উইকেটে হেসেখেলে রান তুললেন ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যান। প্রথমে বল হাতে শাসন করা ইংলিশরা পরে ব্যাট হাতেও দাপুটে পারফরম্যান্সে বাংলাদেশকে হারিয়ে দিল কোনো পরীক্ষা না দিয়েই।
বুধবার আবু ধাবিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার টুয়েলভে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরে গেছে বাংলাদেশ। ইংলিশদের বিপক্ষে ব্যাটে-বলে সামান্যতম লড়াইও করতে পারেনি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। সেমি-ফাইনাল স্বপ্নের কথা বলে দেশ ছাড়লেও টানা দুই হারে বাংলাদেশ এখন দিকহারা এক দল।
টস জেতা বাংলাদেশ হতাশার ব্যাটিং করে। দলের কোনো ব্যাটসম্যানই শক্ত হাতে দায়িত্ব পালন করতে পারেননি। ৯ উইকেটে ১২৪ রানে থামে বাংলাদেশ। জবাবে ম্যাচসেরা জেসন রয় ও দাভিদ মালানের দারুণ ব্যাটিংয়ে ২ উইকেটে ১৪.১ ওভারেই জয় তুলে নেয় ইংল্যান্ড।
ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৫৫ রানে অলআউট করে বড় জয় তুলে নেওয়া ইংল্যান্ড দ্বিতীয় ম্যাচেও একই ছন্দে। ইংল্যান্ড দেখাল, কেন তারা টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর দল। ইংলিশদের বিপক্ষে এটাই বাংলাদেশের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ ছিল। প্রথম অভিজ্ঞতাটা মনে রাখার মতো হলো না সাকিব-মুশফিকদের।
জয়ের লক্ষ্য ব্যাটিংয়ে নেমে দাপুটে শুরু করেন দুই ইংলিশ ওপেনার জেসন রয় ও জস বাটলার। ৪.৫ ওভারে ৩৯ রান যোগ করেন তারা। ১৮ রান করা বাটলারকে নাসুম ফেরালেও কোনো চাপে পড়তে হয়নি ইংল্যান্ডকে। নির্ভার ব্যাটিংয়ে ৭৩ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের একেবারে কাছে পৌঁছে দেন রয় ও দাভিদ মালান।
মাত্র ৩৮ বলে ৫টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৬১ রান করে জেসন রয় ফেরার পর জয় তুলে নেওয়ার পথে বাকি থাকা সামান্য কাজটুকু করেন মালান ও জনি বেয়ারস্টো। মালান ২৫ বলে ৩টি চারে ২৮ ও বেয়ারস্টো ৮ রানে অপরাজিত থাকেন। বাংলাদেশের স্পিনার নাসুম আহমেদ ও তরুণ পেসার শরিফুল ইসলাম একটি করে উইকেট নেন।
এর আগে পুরো ইনিংসে ধুঁকে ধুঁকে ব্যাটিং করে বাংলাদেশ। ক্রিস ওকস, লিয়াম লিভিংস্টোনদের দারুণ বোলিংয়ের সামনে কেউই বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। শেষের দিকে নেমে স্পিনার নাসুম আহমেদ কেবল টি-টোয়েন্টিসুলভ ব্যাটিং করেন। বাংলাদেশের ইনিংস থেকে আসে ২টি ছক্কা, দুটিই নাসুমের ব্যাট থেকে।
৩০ বলে ৩টি চারে সর্বোচ্চ ২৯ রানের ইনিংস খেলেন মুশফিকুর রহিম। ৯ বলে একটি চার ও দুটি ছক্কায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৯ রান করে অপরাজিত থাকেন নাসুম। ১৯ রান আসে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ব্যাট থেকেও। এ ছাড়া লিটন দাস ৯, নাঈম শেখ ৫, সাকিব আল হাসান ৪, আফিফ হোসেন ধুব ৫, শেখ মেহেদি ১১, নুরুল হাসান সোহান ১৬ ও মুস্তাফিজুর রহমান ০ রান করেন।
আগুনে বোলিং করেন ইংল্যান্ডের পেসার ক্রিস ওকস। ডানহাতি এই পেসার ৪ ওভারে মাত্র ১৪ রান খরচায় একটি উইকেট নেন। বাংলাদেশের ইনিংসে শুরুতেই আঘাত হানা মঈন আলী ৩ ওভারে ১৮ রানে ২টি উইকেট নেন। লিয়াম লিভিংস্টোন ২টি ও টাইমাল মিলস ৩টি উইকেট নেন।