বিসিবি কর্তারা কি আদৌ অফিস করেন, প্রশ্ন মশরাফির
জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের ওয়ানডে দলে মাশরাফি বিন মুর্তজাকে বিবেচনা করেনি বিসিবি। পারফরম্যান্সের কারণে বাদ পড়া ওটাই মাশরাফির ক্যারিয়ারে প্রথম ঘটনা। এরপর বেশ সময় চলে গেলেও এ নিয়ে কথা বলেননি ওয়ানডের সফলতম অধিনায়ক। অবশেষে মুখ খুলেছেন তিনি। বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল একাত্তর টিভির সঙ্গে নিজের বাদ পড়া অনেক আক্ষেপের কথাই জানিয়েছেন তিনি।
ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে সিরিজ শুরুর আগে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলেছিলেন, 'ফিটনেসের দিক বিবেচনা করলে মাশরাফির বাদ পড়ার সম্ভাবনাই বেশি।' নির্বাচকদের কাছ থেকেও এ জাতীয় কথা শোনা গেছে। মাশরাফির আপত্তিটা এখানেই। তার প্রশ্ন, তথ্য জেনে কথা বলেন বিসিবির কর্তারা? তারা অফিস করেন কিনা, তা নিয়েও সংশয় আছে অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটারের।
পুরো ক্যারিয়ারে ফিটনেস টেস্টে ফেইল নেই জানিয়ে মাশরাফি বলেন, 'আমার ফিটনেস টেস্টে কখনও ফেইলই নেই। অনেককে বলতে শুনেছি মাশরাফি হয়তো পুরোপুরি ফিট নাও থাকতে পারে। আমি তো অবাক হয়েছি উনারা কতটুকু তথ্য রাখেন। বাইরের একজন দর্শক বলছেন, এটা খুবই স্বাভাবিক যে অনেক কিছু না জেনেই তিনি বলতে পারেন। কিন্তু বিসিবির সাথে সম্পৃক্ত থেকে যারা বলছে, খুবই অবাক লাগে। উনারা কি আসলে কোনো তথ্য রাখেন, আদৌ অফিস করেন।'
হাঁটুতে সাতটি অস্ত্রোপচার নিয়েও দেশের হয়ে খেলে এসেছেন মাশরাফি। অবিরত ইনজুরিও তাকে দমাতে পারেনি। মাশরাফির কাছে ব্যাপারটি গর্বের। সাবেক ওয়ানডে অধিনায়ক বলেন, 'আমার যতো ইনজুরি আসুক, যাই আসুক, বিগত ২০ বছরে আমার একটা ফিটনেস টেস্ট ফেইল নেই। ২০০১ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত আমাকে একটা ফিটনেস টেস্ট বের করে দেখান যে মাশরাফির ফেইল আছে। বিপ টেস্ট, স্কিল টেস্ট; একটা জায়গায় আপনি আমাকে ফেইল এনে দেখান।'
'যদি দিতে পারেন, তারপর আপনি কথা বলেন। মারিওর (মারিও বিল্লাভারায়েন, সাবেক ফিটনেস ট্রেনার) কাছ থেকে চেয়ে নেন, ওর কাছে ডাটা থাকবে। ক্রিকেট বোর্ডের কাছে যদি না থেকে থাকে তাহলে তো অপেশাদার। বিগত দিনে কার কি ঠিটনেস টেস্টের ফল, ক্রিকেট বোর্ডের কাছে তো থাকতে হবে। ডাটাগুলো বের করে একটু দেখুন, আমার একটা ফিটনেস টেস্টে ফেইল আছে কিনা।' যোগ করেন মাশরাফি।
মাশরাফির সঙ্গে আলোচনা করেই তাকে বাদ দেওয়া হয়েছে, এমন বলেছিলেন প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু। কিন্তু মাশরাফি বলছেন, সত্য কথা আশা করেছিলেন তিনি, 'না, নান্নু ভাইয়ের সাথে আমার কথা হয়েছিল, কিন্তু এসব কোনো কিছু না। এরচেয়ে বেশি বিস্তারিত বলতে যাব না। শুধু এতটুকু বলি, কিছুটা সত্যি কথা আমি আশা করেছিলাম। যতটুকু বলেছে, পুরো সত্যি না বলতো, কিছুটা সত্যি কথা আমি আশা করতেই পারি।'
প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গোও এ নিয়ে মাশরাফির সঙ্গে কথা বলেননি। তবে প্রোটিয়া কোচের সঙ্গে কফি পানের অপেক্ষায় আছেন তিনি। রাসেল ডমিঙ্গোর সাথে আমার এ বিষয়ে কথা হয়নি সম্প্রতি। ডমিঙ্গো আমাকে এক কাপ কফির প্রস্তাব দিয়ে রেখেছিল। আমি এখনও তার প্রস্তাবের জন্য অপেক্ষা করছি। তিনি আমাকে প্রস্তাবটা দিয়েছিলেন পাকিস্তান সিরিজের আগে।'
কোচের সঙ্গে সে সময়কার আলোচনা নিয়ে মাশরাফি বলেন, 'তখন বোর্ডে ডেকেছিলেন আমাকে। আকরাম ভাইরা ছিলেন ওই রুমে। বিভিন্ন খেলোয়াড় নিয়ে কথা হচ্ছিল। তখন বলছিল আমার পরিকল্পনা কী। আমি তাকে বলেছি, বিশ্বকাপে যে পারফর্ম করেছি, আমি কিছু আশা করি না। তবে আমি জানি না তোমার কী পরিকল্পনা আছে। তোমার যে পরিকল্পনাই থাকুক, আমাকে একটু আগে জানিও। বাদ দিলেও আগে জানিও। নিলেও একটু আগে জানিও। দুটির জন্যই আমার মানসিক একটা প্রস্তুতির দরকার আছে। তারপর আর কথা হয়নি।'