বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি, ১০০ টাকা উপহার পেলেন মাহমুদুল
বিশ্ব জয় করে এসেছেন বাংলাদেশের যুবারা। আগামী বিশ্বকাপ পর্যন্ত আকবর আলী, তৌহিদ হৃদয়, মাহমুদুল হাসানদের গায়ে থাকবে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের সিল। বিশ্ব জয় করে বাড়ি ফিরলেও কোচদের কাছে বাংলাদেশ যুবারা এখনও সেই ছোট্ট শিষ্যই। তাই তো শিষ্যদের মন ভরাতে আগের মতো করেই উপহার দিয়ে যান কোচেরা।
একেবারেই ছোট্টবেলায় উপহার ছিল চকলেট। বয়স বাড়ার সাথে সাথে সেটা টাকায় রূপান্তর হয়েছে। বিকেএসপির কোচ মন্টু দত্ত ভালোবেসে নিজের স্বাক্ষর করা ১০০ টাকা নিয়মিতভাবে দিয়ে আসছেন বয়সভিত্তিক ক্রিকেটারদের। কোনো শিষ্য ৫ উইকেট নিলে বা ১০০ রান করলে তাকে এই উপহার দেন রাজশাহীর এই কোচ।
যুব বিশ্বকাপে সেঞ্চুরি করায় মন্টু দত্তর কাছে ১০০ টাকা পাওনা হয়েছিল মাহমুদুল হাসান জয়ের। বাড়ি ফিরে ব্যস্ততার কারণে কোচের ভালোবাসার উপহার নিতে পারেননি সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করা মাহমুদুল। সেটা নিলেন মঙ্গলবার বিকেএসপিতে।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বিসিবি একাদশের হয়ে দুই দিনের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলছেন মাহমুদুলসহ যুব দলের ছয় ক্রিকেটার। প্রথমদিনের খেলা শেষে ড্রেসিংরুমে ঢোকার পথে অপেক্ষা করছিলেন মন্টু দত্ত। খবর পেয়ে একটু পরই কোচের দিকে এগিয়ে আসেন মাহমুদুল। বুঝে নেন গুরুর স্বাক্ষরিত ১০০ টাকার একটি নোট।
কোচের এমন উপহার পেয়ে বরাবরের মতোই উচ্ছ্বসিত মাহমুদুল। উপহার হিসেবে পাওয়া ১০০ টাকার নোট হাতে নিয়ে বলেন, ‘খুবই ভালো লাগছে। আমি সব সময়ই স্যারের কাছ থেকে ১০০ টাকা নেওয়ার চেষ্টা করি। সামনে আরও নেব ইনশাআল্লাহ।’
এবারই প্রথম নয়, এর আগেও ১০০ রান করে মন্টু দত্তের কাছ থেকে এই উপহার বুঝে নিয়েছেন বাংলাদেশের এই যুবা। আগে আরও ৫বার এই উপহার পেয়েছেন মাহমুদুল।
কোচ মন্টু দত্ত বলেন, ‘খুব ভালো লাগে। আমি চাই ও সব সময় আমার কাছ থেকে ১০০ টাকা নিক। একবার ৯৯ রানে আউট হওয়ায় মিস করেছে। এ পর্যন্ত ছয়বার নিয়েছে আন্তর্জাতিক ম্যাচে। সবমিলিয়ে নিয়েছে ৯ বার।’
১০০ টাকা হলেই হয় না, কোচের স্বাক্ষর তাতে থাকতেই হবে। মন্টু দত্ত বলেন, ‘জয় একবার আমাকে ১০০ টাকা ফেরত দিয়ে বলেছিল, স্যার স্বাক্ষর নেই। আমি স্বাক্ষর করে সেই টাকা ওকে দিয়েছিলাম।’
শুধু মাহমুদুলই নন, অন্য শিষ্যদের এই উপহার দেন বিকেএসপির এই কোচ। যে কারণে প্রতি মাসে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণে অর্থ খরচ হয় তার। তিনি বলেন, ‘আমার মাসে প্রায় ১৫০০ থেকে ১৮০০ টাকা খরচ হয়। কেউ ৫ উইকেট বা ১০০ রান করলে তাকে আমি ১০০ টাকা করে দেই। এটা আমি ২০০০ সাল থেকে দিয়ে আসছি। আমার কাছে এটা উপহারের মতোই।’
মন্টু দত্তের কাছ থেকে সবচেয়ে বেশিবার উপহার নিয়েছেন জাতীয় দলের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান লিটন দাস। তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি লিটন নিয়েছে। অনূর্ধ্ব-১৪ পর্যায়ে থাকতেই ও পাঁচটা সেঞ্চুরি করেছে। ওকে ৫০০ টাকা দিতে হয়েছে। এখনও ঘরোয়া ক্রিকেটে সেঞ্চুরি করলে এসে উপহারটি নিয়ে যায়। এখনও ২০০ টাকা পাওনা ওর। ওকে এটা দিতে হবে।’