বিশ্বকাপের আগে শেষ ম্যাচে হতাশার হার সিরিজ জয়ী বাংলাদেশের
শুরুর চার ব্যাটসম্যানের তিনজনই কিছু করতে পারলেন না। নিউজিল্যান্ডের দেওয়া চ্যালেঞ্জিং স্কোর তাড়া করতে নেমে দলকে বিপদে ফেলেই ফিরে গেলেন লিটন দাস, সৌম্য সরকার, মুশফিকুর রহিমরা। কিছুটা ব্যতিক্রম নাঈম শেখ, করেন ২৩ রান। ৯ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোরে তাকিয়ে আশার কিছু মিলছিল না, ৪ উইকেটে ৪৬ রান। জিততে দরকার ছিল ১১ ওভারে ১১৬ রান।
কঠিন পথ জেনেও হাল ছাড়লেন না অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও আফিফ হোসেন ধ্রুব। এই জুটিতে দ্রুতই এগিয়ে যেতে থাকে বাংলাদেশ, জেগে ওঠে আশা। কিন্তু মাহমুদউল্লাহর বিদায়ে আবারও বিবর্ণ জয়ের স্বপ্ন। নুরুল হাসান সোহান, শামীম পাটোয়ারীদের নিয়ে লড়তে চাইলেও কাউকে পাশে পেলেন না ঝড়ো ইনিংস খেলা আফিফ। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দলের সিরিজের শেষটা হলো হার দিয়ে।
সিরিজের পঞ্চম ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২৭ রানে হেরে গেছে বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচে ব্যাটিং-বোলিংয়ে শুধু হতাশাই মিললো। তবু বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি যে, পাঁচ ম্যাচের সিরিজ ৩-২ ব্যবধানে জিতেছে তারা।
শুক্রবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নেমে ৫ উইকেটে ১৬১ রান তোলে নিউজিল্যান্ড। চলতি সিরিজে এটাই কিউইদের সর্বোচ্চ সংগ্রহ। ৫০ রানের সর্বোচ্চ ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন কিউই অধিনায়ক টম ল্যাথাম, জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। ৪১ রান করেন ফিন অ্যালেন।
বাংলাদেশের শরিফুল ইসলাম ২টি উইকেট নেন। এ ছাড়া একটি করে উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ, নাসুম আহমেদ ও আফিফ হোসেন। পাঁচ ম্যাচে ৮ উইকেট নিয়ে সিরিজ সেরার পুরস্কার জিতেছেন নাসুম। দুই হাফ সেঞ্চুরিতে সিরিজের সর্বোচ্চ ১৫৯ রান করা ল্যাথামকেও দেওয়া হয়েছে সিরিজ সেরার পুরস্কার।
জবাবে ব্যাটিং সহায়ক উইকেটেও শুরু থেকেই উল্টো পথে হাঁটা বাংলাদেশের হয়ে কেবল তিনজন ব্যাটসম্যান লড়লেন। যা জয়ের জন্য যথেষ্ট হলো না। আফিফ হোসেনের দারুণ লড়াইয়ের পরও ঘরের মাঠের দলটির ইনিংস শেষ হয় ১৩৪ রানে। ৩৩ বলে ২টি চার ও ৩টি ছক্কায় অপরাজিত ৪৯ রান করেন আফিফ। নাঈম ২৩, মাহমুদউল্লাহ ২৩ ও লিটন ১০ রান করেন। নিউজিল্যান্ডের এজাজ প্যাটেল ও স্টক কুগলেইন ২টি করে উইকেট নেন। বোলিং করা বাকি চারজন একটি করে উইকেট নেন।
এই ম্যাচে বাংলাদেশের নিয়মিত চারজন ক্রিকেটার ছিলেন না। সাকিব আল হাসান, মুস্তাফিজুর রহমান, শেখ মেহেদী ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছিল। তাদের জায়গায় সুযোগ পাওয়া সৌম্য সরকার, শামী হোসেন পাটোয়ারী, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলামরা পার্থক্য গড়ে দিতে পারেননি।
মুশফিকের বিদায়, ঘোর সঙ্কটে বাংলাদেশ
সাবধানী শুরুর পর বাংলাদেশের যে উইকেট পতন শুরু হয়েছে, থামার খবর নেই। একে একে ফিরে গেছেন লিটন, সৌম্য, নাঈম। এবার থামলেন মুশফিকুর রহিমও। ১৬২ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৪৬ রান তুলতেই ৪টি উইকেট হারিয়ে ফেলেছে বাংলাদেশ। ওভারও চলে গেছে ৯টি।
জিততে হলে ১১ ওভারে বাংলাদেশকে করতে হবে ১১৬ রান। যা কঠিন পরীক্ষার মতোই হবে ঘরের মাঠের দলটির জন্য। আফিফ হোসেন ধ্রুব ২ ও অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ শূন্য রানে ব্যাটিং করছেন।
রবীন্দ্রর দারুণ ক্যাচে সাজঘরে সৌম্য, ফিরলেন নাঈমও
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম চার ম্যাচে জায়গা হয়নি সৌম্য সরকারের। শেষ ম্যাচে একাদশে ফিরে কিছুই করতে পারলেন না বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। লিটন কুমার দাসের পর সৌম্য ফিরে গেলেন। কোল ম্যাকনকির বলে অসাধারণ এক ক্যাচ নিয়ে সৌম্য ফিরিয়েছেন রাচিন রবীন্দ্র।
এর পরের ওভারেই থামেন নাঈম শেখ। ফেরার আগে ২৩ রান করেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। সিরিজে সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করতে নেমে বিপাকেই পড়ে গেছে বাংলাদেশ। ৮ ওভার শেষে ৩ উইকেটে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪৪ রান। মুশফিকুর রহিম ২ ও আফিফ হোসেন ধ্রুব ২ রানে ব্যাটিং করছেন।
সাবধানী শুরুর পর লিটনের বিদায়
পাঁচ ম্যাচ সিরিজের আগের চার টি-টোয়েন্টিতে সেভাবে রানই তুলতে পারেনি নিউজিল্যান্ড। ফলও পক্ষে যায়নি। চার ম্যাচের তিনটিতে হেরে সিরিজ হেরেছে কিউইরা। শেষ ম্যাচে হারানোর কিছু ছিল না বলেই যেন জ্বলে উঠলেন তাদের কয়েকজন ব্যাটসম্যান। সিরিজে সবচেয়ে বেশি ১৬১ রান স্কোর গড়েছে তারা।
বাংলাদেশের সামনে সিরিজের সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করার চ্যালেঞ্জ। জয়ের লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে সাবধানী শুরু করেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার লিটন কুমার দাস ও নাঈম শেখ। ৪ ওভারে ২৪ রান তোলেন তারা।
সাবধানী শুরুর পরও রক্ষা হয়নি। পঞ্চম ওভারে ফিরে গেছেন ১০ রান করা লিটন। পুরো সিরিজেই নিজের ছায়া হয়ে থাকলেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। এজাজ প্যাটেলের বলে দারুণ এক ক্যাচ নিয়ে লিটনকে ফেরান স্কট কুগলেইন।
পাওয়ার প্লে ৫ ওভার শেষে ১ উইকেটে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৭ রান। নাঈম ১৫ ও সৌম্য সরকার ১ রানে ব্যাটিং করছেন।