বাংলাদেশের হার, কান্না থামে না খুদে ভক্তের!
অপলক দৃষ্টি, চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে জল। তাকে বোঝাতে ব্যস্ত বাবা। একটি হারই তো, আরেক ম্যাচে জিতবে বাংলাদেশ! কিন্তু বাবার এসব কথায় কান্না থামে না ছোট্ট এই ক্রিকেট ভক্তের। মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের গ্র্যান্ড স্ট্যান্ড গ্যালারির উপরের রেলিং ধরে অঝরো কেঁদে যাচ্ছিল বাংলাদেশের এই খুদে ভক্ত।
পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে তেমন লড়াই-ই করতে পারেনি বাংলাদেশ। প্রতি ম্যাচে হতাশার ব্যাটিংয়ের পর বল হাতে ভালো করলেও ফল পক্ষে আনা যায়নি। প্রথম দুই ম্যাচে প্রতিরোধহীন হারই মেনে নিতে হয় বাংলাদেশকে। তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে ছোট পূঁজি নিয়ে জয়ের আশা জাগিয়েও হেরে যায় বাংলাদেশ। একেবারে কাছে গিয়েও জয় না পাওয়ার ব্যথায় চোখের পানি আটতে রাখতে পারেনি এই খুদে ভক্ত।
বাবা-মায়ের সঙ্গে বাংলাদেশ-পাকিস্তানের মধ্যকার তৃতীয় টি-টোয়েন্টি দেখতে মাঠে আসে ছোট্ট এই ক্রিকেট ভক্ত। ভিআইপি গ্যালারিতে বাবা-মায়ের সঙ্গে খেলা দেখছিল সে। শেষ ওভারে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ টানা দুই বলে দুই উইকেট নিলে উল্লাসে ফেটে পড়ে সে। মাঝে একটি ছক্কা হলেও পঞ্চম বলে উইকেট নিয়ে আশা বাঁচিয়ে রাখেন মাহমুদউল্লাহ। যদিও শেষ বলে মোহাম্মদ নওয়াজ চার মেরে জয় ছিনিয়ে নেন।
শেষ পর্যন্ত হেরে যাওয়ায় খুদে এই ক্রিকেট ভক্ত কাঁদতে শুরু করে। তার বাবা-মা বুঝিয়েও তার কান্না থামাতে পারছিলেন না। কেবল কান্নাই নয়, মাঠই ছাড়তে চাচ্ছিল না সে। রেলিংয়ের ওপর মাথা ঠেকিয়ে শূন্য দৃষ্টিতে কেঁদে যাচ্ছিল প্রথমবারের মতো মাঠে এসে খেলা দেখা খুদে এই ক্রিকেটভক্ত। অনেক বুঝিয়ে তাকে নিয়ে মাঠ থেকে বের হন তার বাবা-মা।
বাবা-মা বুঝিয়েও যখন রেলিং থেকে তাদের সন্তানকে সরাতে পারছিলেন না, তখন বাংলাদেশ দলের আইকনিক ফ্যান টাইগার শোয়েবকে ডাকেন তারা। শোয়েবও চেষ্টা করে তাকে সরাতে ব্যর্থ হন। শোয়েব দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'আমি অনেক মাঠে অনেক খেলা দেখেছি, অনেক বয়সী ভক্ত দেখেছি। কখনই এমন কাউকে দেখিনি। ও কেঁদেই যাচ্ছিল, রেলিং ছাড়ছিল না।'
সোমবার আগে ব্যাটিং করে ৭ উইকেটে ১২৪ রান তোলে বাংলাদেশ। জবাবে শেষ বলে গিয়ে ৫ উইকেটের জয় নিশ্চিত করে পাকিস্তান। শেষ ওভারে তাদের প্রয়োজন ছিল ৮ রান। দ্বিতীয় বলে সরফরাজ ও তৃতীয় বলে হায়দারকে ফেরান মাহমুদউল্লাহ। চতুর্থ বলে ছক্কা মারেন ইফতিখার আহমেদ। শেষ ২ বলে দরকার ২ রান, পঞ্চম বলে ইফতিখারের উইকেট তুলে নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। শেষ বলে ২ রান দরকার পড়লে নওয়াজ চার মেরে শেষ করেন।