ফাইনাল শেষে হামলার শিকার ইতালিয়ান সমর্থকরা, গ্রেপ্তার ৪৫
ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ওঠার আনন্দে বাধনহারা হয়ে উঠেছিলেন ইংলিশ সমর্থকরা। উৎসব রূপ নিয়েছিলো উন্মাদনায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে রাস্তায় নামতে হয় লন্ডন পুলিশকে। সেই ঘটনায় ২০ জন ইংলিশ সমর্থককে গ্রেপ্তার করা হয়। ফাইনাল হারের পর ইংলিশ সমর্থকরা হয়ে উঠলেন বিধ্বংসী, তারা রীতিমতো ইতালিয়ান সমর্থকদের ওপর হামলা চালিয়েছেন।
ফুটবল ম্যাচকে ঘিরে বিবাদে জড়ানোর ঘটনা ইংলিশ সমর্থকদের জন্য অবশ্য নতুন কিছু নয়। ম্যাচের আগে-পরে অনেকবারই ঝামেলা পাকিয়েছেন 'হুলিগান' খ্যাত ইংলিশ সমর্থকরা। এবার তাদের হামলার শিকার শিরোপাজয়ী ইতালির সমর্থকরা।
ইউরোর ফাইনালে রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ের পর টাইব্রেকারে স্বপ্ন ভাগে ইংলিশদের। দীর্ঘ ৫৫ বছর পর বড় কোনো টুর্নামেন্টেও উঠেও হেরে যাওয়া মানতে পারছিলেন ইংলিশ সমর্থকরা। হারের বেদনায় তারা ক্ষুব্ধ হয়ে ওয়েম্বলিতে খেলা দেখতে আসা ইতালিয়ান সমর্থকদের ওপর হামলা চালান। অনেককে শারীরিকভাবে আক্রমণ করা হয়, মারধর করা হয়। অনেকে আবার বর্ণবাদী আক্রমণের শিকার হয়েছেন। এই ঘটনায় ৪৫ জন ইংলিশ সমর্থককে গ্রেপ্তার করেছে লন্ডন পুলিশ।
লন্ডন পুলিশ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, 'বিভিন্ন বিশৃঙ্খলার দায়ে ৪৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা বিরামহীনভাবে কাজ করে গেছেন।'
ম্যাচে দারুণ শুরু করে ইংল্যান্ড। ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটেই লুক শ-এর গোলে এগিয়ে যায় থ্রি লায়ন্সরা। ইউরোর ফাইনালের ইতিহাসে এটাই সবচেয়ে দ্রুততম গোল। ৬৭তম মিনিটে লিওনার্দো বোনুচ্চির গোলে সমতায় ফেরে ইতালি। এরপর অতিরিক্ত সময় হয়ে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। যেখানে নায়ক হয়ে ইতালিকে জেতান জিয়ানলুইজি দোনারুমা।
দীর্ঘ অপেক্ষার ইতি টানবে ইংল্যান্ড, এমন আশা নিয়ে লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে হাজির হয়েছিলেন ইংলিশ সমর্থকরা। কিন্তু আশা পূরণ হয়নি তাদের। মাঠ থেকে বেরোনোর সময় আর মেজাজ ঠিক রাখতে পারেনি তারা। ইতালিয়ান সমর্থকদের উল্লাস আরও ক্ষেপিয়ে তোলে তাদের। এ সময় ইতালির সমর্থকদের গালিগালাজ ও শারীরিকভাবে আক্রমণ করে তারা।
কেবল স্টেডিয়াম থেকে বের হওয়ার সময়ই নয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ইতালিয়ানদের বর্ণবাদী আক্রমণ করেছেন ইংলিশ সমর্থকরা। এই ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছে ইংলিশ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এফএ)। এক বিবৃতিতে বলঅ হয়েছে, 'দুর্ভাগ্যজনক এসব ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এফএ সব ধরনের বৈষম্যের বিরুদ্ধে কঠোর।'
কেবল ইতালিয়ান সমর্থকদের আক্রমণ করাই নয়, দেশটির পতাকা অবমাননার ঘটনাও ঘটেছে। ইতালির ভক্তদের কাছ থেকে পতাকা কেড়ে নিয়ে তাতে আগুন দেওয়া হয়। পতাকায় থুতু ছেটানো এবং পতকার ওপর দাঁড়িয়ে থাকার দৃশ্যও দেখা গেছে। এমনকি নিজ দলের খেলোয়াড় হয়েও বর্ণবাদ আচরণের শিকার হয়েছেন ট্রাইব্রেকারে পেনাল্টি মিস করা মার্কাস রাশফোর্ড ও বুকায়ো সাকা।