পিছিয়ে যাচ্ছে লঙ্কা সফর, অন্ধকারেই বিসিবি
অপেক্ষা বেড়েই চলেছে, বাংলাদেশের শ্রীলঙ্কা সফর নিয়ে আসছে না কোনো সিদ্ধান্ত। শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের জবাবের অপেক্ষায় থাকা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এখনও আগের মতোই অন্ধকারে। শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট কী জানায়, তা জানার জন্য কেবল অপেক্ষাই করে যেতে হচ্ছে দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটিকে।
২৭ সেপ্টেম্বর শ্রীলঙ্কা যাওয়া হচ্ছে না, সেটা কদিন আগেই বোঝা গেছে। বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছিলেন, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়ায় সফরের সময় পেছাবে। তবে সিরিজ পেছানোর ব্যাপারে কিছু জানাননি তিনি। শনিবার বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্সের চেয়ারম্যান আকরাম খান জানালেন, সফরও পিছিয়ে যাচ্ছে।
শ্রীলঙ্কার সিদ্ধান্ত জানতে আরও দুই-তিন দিন অপেক্ষা করতে হবে বিসিবিকে। শ্রীলঙ্কায় আজ ও কাল ছুটি থাকায় সোম-মঙ্গলবার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে জানিয়েছেন আকরাম খান। ইতিবাচক সিদ্ধান্ত এলে আগামী ৭ থেকে ১০ অক্টোবরের মধ্যে শ্রীলঙ্কার উদ্দেশে বাংলাদেশ রওনা দেবে বলে জানান জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক।
নতুন কোনো তথ্য নেই বিসিবির কাছে। কোয়ারেন্টিনের সময়সীমা ও স্বাস্থ্য বিধি জানতে আগের মতো করে দুই-তিন দিনের কথাই বলা হচ্ছে। শনিবার দুই নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু ও হাবিবুল বাশারের সঙ্গে বৈঠকের পর আকরাম খান বলেন, 'দুই-তিন দিনের মধ্যে হয়তো প্রস্তাবটা আসবে শ্রীলঙ্কা থেকে। শেষ যেটা বলেছে, তা আগের কথাই। ব্যাপারটা ওদের হাতে নেই, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ব্যাপার। ওরা গতকালও আশা করেছিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে কিছু পাবে। ওরা আশা করছে দুই-তিনদিনের মধ্যে আমাদের জানাবে।'
বিসিবি ৭ দিনের বেশি কোয়ারেন্টিন করতে রাজি নয়। অন্যদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক ১৪ দিনে অনড় শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট। এ নিয়ে দেন-দরবার করতে করতে সময় চলে গেছে। এখন পিছিয়ে যাচ্ছে সিরিজ। যদিও সিরিজ পিছিয়ে যাওয়ার ব্যাপারটি নেতিবাচকভাবে দেখছে না বিসিবি। সময় থাকায় আরও অপেক্ষা করতে রাজি বিসিবি। আকরাম খানের ভাষায়, 'যেহেতু সিরিজ পেছাচ্ছে, আমাদের হাতে সময় আছে, সেক্ষেত্রে আমরা আরও কিছুদিন অপেক্ষা করব।'
'ওরা চেষ্টা করছে, আগে যেটা বললাম যেহেতু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ব্যাপার। ওরা চাচ্ছে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ওদের একটা নির্দেশিকা আমাদের দিতে। আমার মনে হয় যে আমরা আশাবাদী, ওরাও ইতিবাচক। আজ ও আগামীকাল বন্ধ থাকায় হয়তো সোম, মঙ্গলবারে জানাবে।' যোগ করেন আকরাম খান।
সবকিছু ইতিবাচকভাবে হলে আগামী ৭ থেকে ১০ অক্টোবরের মধ্যে বাংলাদেশ দল শ্রীলঙ্কায় যাবে বলে জানান আকরাম খান। লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগ (এলপিএল) পিছিয়ে যাওয়ায় অপেক্ষা করতে সমস্যা দেখছেন না তিনি, 'যদি সবকিছু ইতিবাচকভাবে এগোয়, আমরা আগামী মাসের ৭-১০ তারিখের মধ্যে যেতে পারি। ওদের টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট হওয়ার কথা ছিল, সেটা যথাসময়ে হচ্ছে না। তাই ওদের ও আমাদের কাছে সময় আছে। ওটা চিন্তার বিষয় না।'
গুঞ্জন ছিল সফর পেছালে একটি টেস্ট কমে যেতে পারে। তিন ম্যাচের বদলে দুই ম্যাচের সিরিজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। আকরাম খান জানালেন এমন কোনো সম্ভাবনা নেই, 'যেহেতু সময় আছে, ওদের টি-টোয়েন্টি লিগটা কিন্তু হচ্ছে না। যেহেতু টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে তিনটি টেস্ট ছিল, তিনটিই থাকবে। আমাদের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে কোন চিঠি বা মেইল আসেনি। আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু না এলে বাইরে কী হচ্ছে না হচ্ছে, তা নিয়ে তো কিছু বলতে পারব না।
সিরিজটি খেলা নিয়ে বিসিবির কোনো তাড়া নেই। যে কারণে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের সঙ্গে জোরাজুরি করছে না বিসিবি। আকরাম খান বলেন, 'ওদের সময় আছে, আমাদের কাছেও আছে। ওরা বারবার অনুরোধ করছে কিছুদিনের মধ্যে জানিয়ে দেবে। বিষয়টা এমন না যে ওরা চাচ্ছে না কিন্তু আমরা জোর করে যাচ্ছি। আমরা যদি যেতেই চাইতাম তাহলে ওদের শর্ত মেনেই চলে যেতে পারতাম।'
'আমাদের কোনো তাড়াহুড়ো নেই। প্রথম অগ্রাধিকার হলো খেলোয়াড়দের স্বস্তিতে থাকা, মানসিকভাবে যেন ক্লান্ত না থাকে। এভাবে ওদের কাছ থেকে পারফরম্যান্সটা বের করে আনা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আমরা গিয়েই যেন ভালো পারফরম্যান্স করতে পারি, তার জন্য যা যা করা দরকার তাই করব।' যোগ করেন আকরাম খান।
আগের সূচি অনুযায়ী ২৭ সেপ্টেম্বর শ্রীলঙ্কা যাওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশের। কোয়ারেন্টিন শেষ করে দুই সপ্তাহের অনুশীলনের পর মূল লড়াইয়ে মাঠে নামার কথা ছিল তামিম-মুশফিকদের। প্রথম টেস্ট শুরু হওয়ার কথা ছিল ২৪ অক্টোবর। এটা পিছিয়ে কবে নাগাদ যাবে, এ ব্যাপারে এখনও কিছু জানায়নি বিসিবি।