নিউজিল্যান্ডের পর পাকিস্তান সফর বাতিল করতে পারে ইংল্যান্ডও
১৮ বছর পর পাকিস্তান সফরে এসেছিল নিউজিল্যান্ড। রাউলপিন্ডিতে সিরিজের প্রথম ম্যাচ মাঠে গড়ানোর কথা ছিল আজ (১৭ই সেপ্টেম্বর)। কিন্তু টসের মাত্র কয়েক মিনিট আগে নাটকীয়ভাবে এই সফর বাতিল করেছে কিউইরা।
নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে নিউজিল্যান্ডের সড়ে দাঁড়ানোর পর এবার অনিশ্চয়তায় পড়েছে ইংল্যান্ডের পাকিস্তান সফরও। আগামী মাসে নারী ও পুরুষ উভয় দল নিয়েই পাকিস্তান সফরের আসার কথা থাকা ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবে সফরের চূড়ান্ত পরিণতি কী হতে যাচ্ছে।
আজ নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "নিউজিল্যান্ড সরকারের পক্ষ থেকে জানানো (নিরাপত্তা) ঝুঁকির মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় এবং বোর্ডের নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের পরামর্শের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে ব্ল্যাকক্যাপরা এই সফর চালিয়ে যাবে না।"
পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এককভাবে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিউজিল্যান্ড। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্নের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করে আশ্বস্ত করেছেন যে স্থানীয় গোয়েন্দারা কোনো নিরাপত্তা হুমকি শনাক্ত করেনি। কিন্তু এরপরও সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে নিউজিল্যান্ড।
পিসিবির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "পিসিবি এবং পাকিস্তান সরকার সফরকারী সকল দলের জন্য পূর্ণ নিরাপত্তার ব্যবস্থা রেখেছে। নিউজিল্যান্ড দলের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা এখানে থাকার সময় পাকিস্তান সরকারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে সবসময়ই সন্তুষ্ট ছিলেন।"
নিউজিল্যান্ডের এই আকস্মিক সিদ্ধান্তে হতবাক হয়ে গেছে পাকিস্তানের ক্রিকেট শিবির। পিসিবি চেয়ারম্যান রমিজ রাজা নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে আইসিসির কাছে বিচার দেওয়ার হুমকিই দিয়ে বসেছেন সরাসরি।
টুইটারে দেওয়া এক বিবৃতিতে সাবেক পাকিস্তানি পেসার শোয়েব আখতার বলেছেন, "নিউজিল্যান্ড মাত্র পাকিস্তান ক্রিকেটকেই খুন করে ফেললো।"
এদিকে ২০০৫ সালের প্রথমবারের মতো পাকিস্তান সফরের পরিকল্পনা করা ইসিবিও নজর রাখছে পাকিস্তানে চলমান এই টালবাহানার উপর। গতবছর তীব্র করোনাকালীন সংকটের মাঝেও ইংল্যান্ড সফর করায় পিসিবির প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বরূপ এই সিরিজে সায় দিয়েছিল ইংল্যান্ড।
কিন্তু এখন তাদের সেই শুভেচ্ছা সফরও পড়ছে পরীক্ষার মুখে। আজ ইসিবির এক মুখপাত্র বলেন, "আমরা আমাদের নিরাপত্তা দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি, যারা পরিস্থিতি পুরোপুরি বুঝতে পাকিস্তানের মাটিতে রয়েছে। আগামী ২৪-৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ইসিবি সিদ্ধান্ত নিবে আমাদের পরিকল্পিত সফর আলোর মুখ দেখবে কি না।"
নিউজিল্যান্ড বোর্ডের মতো না করে ইসিবি শেষ পর্যন্ত সিরিজ নিয়ে আগানোর সিদ্ধান্ত নিলেও আরেকটা 'কিন্তু' থেকে যাবে। তখন আলোচনায় আসবে ক্রিকেটারদের সিদ্ধান্ত। ২০১৬ সালে নিরাপত্তা-জনিত কারণ দেখিয়ে বাংলাদেশ সফরে আসতে অস্বীকৃতি জানানো এউইন মরগানের এবারের সিদ্ধান্তও এই সফরের উপর প্রভাব ফেলবে।
- সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান