নারী বডিবিল্ডিংয়ে বাংলাদেশের মাকসুদার ইতিহাস
বাংলাদেশের প্রথম নারী বডিবিল্ডার হিসেবে আন্তর্জাতিক বডিবিল্ডিং টুর্নামেন্টে পদক জিতলেন মাকসুদা আক্তার। মুম্বাইয়ে চলমান আইএইচএফএফ অলিম্পিয়া অ্যামেচার বডিবিল্ডিং ছিল তার প্রথম আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট। এই আসরে প্রাথমিক বাছাই থেকে সেরা আটে ওঠা মাকসুদা তৃতীয় রানার্সআপ হয়েছেন।
বিভিন্ন দেশের ৩০ জন বডিবিল্ডারের মধ্য থেকে পদক জেতেন মাকসুদা। উইমেন ফিজিক ক্যাটাগরিতে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। গত বছর জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়া মাকসুদা চলতি বছর অনুষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ গেমসে স্বর্ণপদক জেতেন। এরপর বাংলাদেশের প্রথম নারী বডিবিল্ডার হিসেবে আইএইচএফএফ অলিম্পিয়া অ্যামেচার বডিবিল্ডিংয়ে অংশ নেন তিনি।
প্রথম আন্তর্জাতিক পদক জিতে উচ্ছ্বসিত মাকসুদা বলেন, 'যারা আমাকে এতো দূর আসতে সহযোগিতা করেছেন, বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে উৎসাহ দিয়েছেন; তাদের সেসব অনুপ্রেরণামূলক কথা আমাকে এখানে এনেছে।'
'২০১৯ সালে আমি যখন বডিবিল্ডিং শুরু করি, তখন সবাই জানতেন আমার প্রস্তুতি কেমন ছিল। এরপর আরও বেশি প্রস্তুতি নিয়ে দুটি জাতীয় প্রতিযোগিতা ও বাংলাদেশ গেমসে অংশ নিই। এরপর এলাম অলিম্পিয়া অ্যামেচার প্রতিযোগিতায়। এখানে এসে পদক জিততে পেরে খুব ভালো লাগছে।' যোগ করেন মাকসুদা।
ছোট বেলা থেকেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করার স্বপ্ন ছিল মাকসুদার। সেই স্বপ্ন পূরণ করতে পেরে উচ্ছ্বাসের শেষ নেই তার, 'আমাদের দেশে মেয়েদের বডিবিল্ডিং নিয়ে এখনও একটা ট্যাবু আছে। সেই বাধার দেয়াল ভাঙার চেষ্টা করছি আমি, যেন আমাদের দেশের অন্য মেয়েরাও বডিবিল্ডিংয়ে আসতে পারে। প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক আসরে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পেরে খুব ভালো লাগছে।'
পতেঙ্গা নৌবাহিনী স্কুল এন্ড কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন মাকসুদা। এরপর টেক্সটাইল ডিজাইনের ওপর পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন করতে ২০১৭ সালে ভারতের পাঞ্জাবে যান তিনি। সেখানে পড়াশোনার পাশাপাশি নিয়মিত জিম করতেন নারী এই বডিবিল্ডার। একটা সময়ে শরীরচর্চা তার নেশায় পরিণত হয়। শরীরচর্চা নিয়েও পড়াশোনাও করেছেন কিনি। বর্তমানে ঢাকার একটি জিমে প্রশিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন মাকসুদা। তার লক্ষ্য এবার ফ্রান্সের বডিবিল্ডিং চ্যাম্পিয়নশিপের প্রাক–বাছাইয়ে অংশ নেওয়া।