দুর্নীতির দায়ে ৮ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হিথ স্ট্রিক
দুর্নীতির দায়ে সাবেক জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক হিথ স্ট্রিককে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে ৮ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছে আইসিসি।
২০১৬ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে জিম্বাবুয়ের কোচ হিসেবে এবং অন্যান্য দেশীয় দলের কোচ হিসেবে থাকাকালীন দুর্নীতি দমন নীতিমালার বেশ কয়েকটি আইন ভঙ্গ করেন স্ট্রিক।
ম্যাচ পাতাতে সহায়তা করতে পারে, দলের এমন অভ্যন্তরীণ তথ্য ফাঁস করে দেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে স্ট্রিকের উপর। আরো সুনির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে, তিনি ২০১৮ সালের জিম্বাবুয়ে, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ট্রি-সিরিজ, ২০১৮ সালের জিম্বাবুয়ে বনাম আফগানিস্তান সিরিজ, ২০১৮ আইপিএল এবং ২০১৮ এপিএল-এর ম্যাচগুলো সম্পর্কিত ভেতরের তথ্য ফাঁস করেন।
শুধু তাই নয়, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অনৈতিক কাজে জড়ানোর জন্য অন্য কোন খেলোয়াড়কে উস্কানি দেয়া বা উৎসাহিত কিংবা প্রলুব্ধ করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তিনি একজন জাতীয় অধিনায়কসহ চারজন খেলোয়াড়কে নিজের পরিচিত একজন ম্যাচ পাতানো জুয়াড়ির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে সহায়তা করেছেন অথবা খেলোয়াড়দের দলের ভেতরের তথ্য দিতে প্রলুব্ধ করেছেন বলে প্রমাণ পেয়েছে আইসিসির দুর্নীতি দমন কমিশন।
তারা বলছে, স্ট্রিকের বিরুদ্ধে রয়েছে দলের তথ্য দেয়ার বিনিময়ে এক বা একাধিক ব্যক্তির থেকে উপহার গ্রহণ করার অভিযোগ, যা ক্রিকেটের সুনাম ক্ষুণ্ণ করতে পারে। সেসব উপহার গ্রহণের কোন বৈধ কারণ বা রশিদও তিনি দেখাতে পারেননি।
দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত এমন কোনো ব্যক্তির থেকে আমন্ত্রণ পাওয়ার কোনো বিস্তারিত তথ্য স্ট্রিক এসিইউ-কে দিতে পারেননি। এই দুর্নীতির তালিকায় রয়েছে ২০১৭ সালের বিপিএল, ২০১৮ সালের পাকিস্তান সুপার লীগ, ২০১৮ সালের আইপিএল এবং ২০১৮ সালের এপিএল-এর ম্যাচগুলো।
স্ট্রিকের বিরুদ্ধে আর্টিকেল ২.৪.৭ অনুযায়ী আনা সর্বশেষ অভিযোগটি হলো, তদন্তে বাধা দেয়া বা দেরি করানোর চেষ্টা করা, বল ট্যাম্পারিং বা আইসিসির দুর্নীতি-দমন কোড অনুযায়ী তদন্তে কাজে লাগতে পারে এমন সব দলিল-প্রমাণ নষ্ট করা।
তবে আইসিসির নীতিমালার অধীনে নিজের দোষ স্বীকার করেছেন স্ট্রিক এবং দুর্নীতি দমন ট্রাইবুনালের শুনানিতে যাওয়ার পরিবর্তে তার উপর আনা নিষেধাজ্ঞা মেনে নিয়েছেন। খেলা সম্পর্কিত অবৈধ কাজে জড়িত থাকার দায় থেকে স্ট্রিক মুক্তি পাবেন ২০২৯ সালের ২৮ মার্চ।
আইসিসির ইন্টেগ্রিটি ইউনিটের জেনারেল ম্যানেজার অ্যালেক্স মার্শাল বলেন, "হিথ স্ট্রিক একজন অভিজ্ঞ আন্তর্জাতিক খেলোয়াড় এবং জাতীয় দলের কোচ। তিনি অসংখ্য অনৈতিক কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন এবং আইসিসির বিধান সম্পর্কে তিনি সম্পূর্ণ অবগতও ছিলেন।"
"একজন সাবেক অধিনায়ক ও কোচ হিসেবে তিনি বিশ্বাসযোগ্য একটি অবস্থানে ছিলেন এবং তার উচিত ছিল খেলার মর্যাদা বজায় রাখা। কিন্তু তিনি বিভিন্ন সময়ে আইন ভঙ্গ করেছেন এবং আমাদের তদন্তের দেরি করিয়েছেন। তবে তার কাজগুল কোনো ম্যাচের ফলাফলে প্রভাব ফেলেনি এবং স্ট্রিক আইসিসির দুর্নীতি দমন কমিশনের শিক্ষা প্রোগ্রামের সঙ্গে সহযোগিতা করতে রাজি হয়েছেন বলে আমরা কৃতজ্ঞ," বলেন মার্শাল।