তিন ফরম্যাটেই চোখ মুস্তাফিজের
টেস্ট ফরম্যাটে মুস্তাফিজুর রহমানের তেমন আগ্রহ নেই; অভিযোগ নয় তবে এমন কথা ক্রিকেট পাড়ার মানুষদের বেশ আগে থেকেই জানা। বাংলাদেশের বাঁহাতি এই পেসারকে টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে আলাদাভাবে খুব কমই কথা বলতে দেখা গেছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও (বিসিবি) মুস্তাফিজের ওপর বোঝা চাপায়নি।
বাকি দুই ফরম্যাটে সেবা নিতে বেশিরভাগ সময়ে মুস্তাফিজকে ছাড়াই টেস্টের হিসাব কষেছে বিসিবি। ৫ বছরে মাত্র ১৩টি টেস্ট খেলেছেন মুস্তাফিজ। সর্বশেষ কেন্দ্রীয় চুক্তিতেও টেস্টে তাকে বিবেচনা করা হয়নি। তবে বিসিবির ভাবনায় পরিবর্তন এসেছে। শ্রীলঙ্কা সফরে টেস্ট দলে বিবেচনা করা হচ্ছে বাঁহাতি এই পেসারকে।
মুস্তাফিজও বলছেন টেস্ট খেলার কথা। তিন ফরম্যাটেই নিয়মিত হতে চান কাটার দিয়ে শুরুর কয়েক বছর ২২ গজে রাজত্ব কায়েম করা বাংলাদেশের এই পেসার। সোমবার মিরপুরে অনুশীলন শেষে মুস্তাফিজ বলেন, 'আমি তো চাই সব ফরম্যাটে খেলতে। ফিটনেস, বোলিং স্কিলের কোন কাজগুলো করলে আমি সব ফরম্যাটে নিয়মিত হতে পারি, এখন চেষ্টা করছি সেগুলো করার।'
মুস্তাফিজের প্রধান অস্ত্র ছিল কাটার। শুরুতে অপ্রতিরোধ্য থাকলেও ধীরে ধীরে তার কাটারের ধার কমেছে। সঙ্গে ছিল ইনজুরির ছোবলও। ইনজুরি কাটিয়ে মাঠে ফিরলেও আগের মুস্তাফিজকে পাওয়া যায়নি। কাটার ঘষামাজাসহ বোলিংয়ে আরও বৈচিত্র্য আনতে কাজ করে যাচ্ছেন দেড় বছর আগে টেস্ট খেলা মুস্তাফিজ। আপতত তার মিশন ইনসুইং রপ্ত করা।
জাতীয় দলের পেস বোলিং কোচ ওটিস গিবসনের পরামর্শে নির্দিষ্ট করে এই ব্যাপারটি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন মুস্তাফিজ। তিনি বলেন, 'করোনার আগে গিবসন আমাকে কিছু গ্রিপ দেখিয়ে দিয়েছিল যে, কী করলে বল ভেতরে ঢুকবে (ইনসুইং)। ওটা নিয়ে কাজ করছিলাম, এখনও ভালো যাচ্ছে। আরও কাজ করতে হবে, ভালোভাবে কাজ করতে পারলে বল ভেতরে ঢোকানো তাড়াতাড়ি আয়ত্ব করতে পারব।'
২০ সেপ্টেম্বর থেকে দলীয় অনুশীলন শুরু করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। দলীয় অনুশীলন শুরু করে মুস্তাফিজ বুঝতে পারছেন একক অনুশীলনের সঙ্গে এটার কতটা পার্থক্য, 'বাড়িতে অনুশীলনের ব্যাপারটা অন্যরকম। বাইরে যতই করেন না কেন, (একক অনুশীলন) দলীয়ভাবে অনুশীলন করাটা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়। বাড়িতে আমরা সবাই কম বেশি কাজ করেছি। এখানে শুরুতে কষ্ট হচ্ছিল একটু, তবে এখন খুব ভালো যাচ্ছে।'
করোনার লম্বা বিরতির পর কীভাবে মানিয়ে নিয়েছেন, সেই প্রক্রিয়ার কথাও জানালেন মুস্তাফিজ। বললেন, 'আমি ঢাকা এসেছি এক মাস পাঁচ দিন হলো। প্রথমে শর্ট রান আপে, দুই তিন স্টেপে বোলিং করেছি, বাড়িতেও করেছি। এখানে আসার পর আবার প্রথম থেকে শুরু করলাম। শুরুতে রানিং, জিম করেছি। পরে একজন ব্যাটসম্যানকে দুইজন বোলার বোলিং করেছি। এখন সবকিছু ভালোই যাচ্ছে।'
কোয়ারেন্টিন জটিলতায় শ্রীলঙ্কা সফর নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হলেও বিসিবি পরিকল্পনামাফিক প্রস্তুতির কাজ চালিয়ে নিচ্ছে। সোমবার দ্বিতীয় দিনের মতো অনুশীলন করেছেন ক্যাম্পে ডাক পাওয়া ক্রিকেটাররা। আগামীকাল, ২২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে শ্রীলঙ্কা সফর নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সফর চুড়ান্ত হলে আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর শ্রীলঙ্কার উদ্দেশে রওনা দিতে পারে বাংলাদেশ। এই সফরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। প্রথম টেস্ট আগামী ২৪ অক্টোবর ক্যান্ডিতে শুরু হওয়ার কথা।