তামিমের অনন্য কীর্তি

হোক আন্তর্জাতিক কিংবা ঘরোয়া ম্যাচ, তিনি যখন ব্যাট হাতে নামেন, ক্রিকেট অনুরাগীরা অনেক আশা নিয়ে তাকিয়ে থাকে তার দিকে। যেদিন সফল হন, সেদিন ২২ গজের মঞ্চে কোনো সাধারণ ব্যাটসম্যান নয়, বরং যেন এক দারুণ জাদুকরের দেখা পায় সবাই। এমনই এক জাদুকরি দিন আজ কাটালেন তিনি। দেশের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে হলেন এক ইনিংসে সর্বোচ্চ রানের মালিক। বলছি তামিম ইকবালের কথা।
মিরপুরে বাংলাদেশ ক্রিকেট লীগের ম্যাচে ইস্ট জোনের এই ব্যাটসম্যান করেছেন অপরাজিত ৩৩৪ রান। প্রতিপক্ষ সেন্ট্রাল জোনের বোলারদের চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করার ছিল না যেন! ৪২৬ বল খরচ করেও তারা এতটুকু টলাতে পারেননি দীর্ঘদিন ধরেই জাতীয় দলের এই প্রধান উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানকে। উল্টো ৪২ বার মাটি কামড়িয়ে আর ৩ বার উড়িয়ে বলকে করেছেন সীমানা পার।

পুরো ম্যাচে তামিম কতটা আত্মবিশ্বাসী ছিলেন, তার প্রমাণ পাওয়া যায় জীবনের প্রথম ট্রিপল সেঞ্চুরির দ্বার প্রান্তে দাঁড়িয়েও তার নির্ভীকভাবে শুভাগত হোম ও মুস্তাফিজুর রহমানকে বাউন্ডারি হাঁকানোর মধ্য দিয়ে। তার এই মহাকাব্যিক ইনিংসের দিনে, ঘটনাচক্রে প্রতিপক্ষ দলের খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে ছিলেন সেই রকিবুল হাসান, যিনি ১৩ বছর আগে ৩১৩ রানের ইনিংস খেলে হয়েছিলেন প্রথম শ্রেণি ক্রিকেটে দেশের প্রথম ও আজকের আগ পর্যন্ত একমাত্র ট্রিপল সেঞ্চুরিয়ান।
চার দিনের ম্যাচটির আজ ছিল তৃতীয় দিন। সকালে ২২২ রান ঝুলিতে নিয়ে মাঠে নামেন তামিম। প্রথম সেশন শেষে রান দাঁড়ায় ২৭৯। দ্বিতীয় সেশনে তার ব্যাটিং আরও ক্ষুরধার হয়ে ওঠে। পিনাক ঘোষের সঙ্গে উদ্বোধনী জুটিতে ৬২, তারপর মমিনুল হকের সঙ্গে ২৯৬ রানের জুটিতে তামিম যে রেখেছেন সেনাপতির ভূমিকা, সে কথা বলাই বাহুল্য।
২ উইকেটে ৫৫৫ রানের মাথায় ইনিংস ঘোষণা করা না হলে কে জানে, তামিম হয়তো ৪০০ রানের মাইলফলকও ছুঁয়ে ফেলতে পারতেন!