টেস্ট অবসরের চার মাস পর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা মাহমুদউল্লাহর
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ যে আর টেস্ট খেলবেন না, সেটা জানা গিয়েছিল গত জুলাই মাসেই। জিম্বাবুয়ে সফরে একমাত্র টেস্টের মাঝপথে মাহমুদউল্লাহ সতীর্থদের জানান, ওটাই তার শেষ টেস্ট ম্যাচ হতে যাচ্ছে। এরপর তার টেস্ট অবসর নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। কিন্তু মুখ খোলেননি তিনি। অবশেষে এলো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা।
টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার। বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিষয়টি জানিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। বিবৃতিতে মাহমুদউল্লাহ বলেছেন, 'অনেক দিন ধরে খেলা আসা ফরম্যাটকে বিদায় বলা সহজ কাজ নয়। আমি সব সময় উন্নতি করার চেষ্টা করেছি এবং আমি বিশ্বাস করি টেস্টকে বিদায় জানানোর জন্য এটাই সঠিক সময়।'
মাহমুদউল্লাহ আরও বলেছেন, 'টেস্ট দলে ফেরার সময় সমর্থন দেওয়ার জন্য বিসিবি সভাপতিকে আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমাকে উৎসাহ দেওয়া ও আমার সামর্থ্যের ওপর বিশ্বার রাখার জন্য সতীর্থ ও সাপোর্ট স্টাফদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। বাংলাদেশের হয়ে টেস্ট ক্রিকেট খেলতে পারাটা পরম সম্মান ও সৌভাগ্যের বিষয় এবং অনেক স্মৃতি আমি রোমন্থন করব।'
'যদিও আমি টেস্ট থেকে অবসর নিচ্ছি, আমি ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলে যাব এবং সাদা বলে খেলার সময় আমি দেশের জন্য সর্বোচ্চটা দেওয়ার চেষ্টা করব।' যোগ করেন মাহমুদউল্লাহ।
গত জুলাইয়ে জিম্বাবুয়ে সফরে ১৬ মাস পর টেস্ট ক্রিকেটে ফিরে নিজের কার্যকারিতা প্রমাণ করেন মাহমুদউল্লাহ। একে দলের দুঃসময়, এর সঙ্গে নিজের ফেরার পর্ব; কিন্তু চাপের বোঝা মাথায় নিয়েও ১৫০ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলেন অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার। সবখানে যখন তার বীরোচিত ফেরার গল্প লেখা হচ্ছিল, তখন টেস্ট থেকে তার বিদায় নেওয়ার বিষয়টি সবখানে ছড়িয়ে পড়ে।
টিম মিটিংয়ে টেস্ট অবসরের বিষয়টি জানান মাহমুদউল্লাহ। সে সময় নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাতীয় দলের এক ক্রিকেটার দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেছিলেন, 'সবাইকে রীতিমতো অবাক করে দিয়েছেন রিয়াদ ভাই। আমাদের কোনো ধারণাই ছিল না। উনি টিম মিটিংয়ে হঠাৎ বলে ওঠেন, টেস্ট থেকে অবসর নেবেন। উনি বলেন, "এটাই হবে আমার শেষ টেস্ট। এরপর আর টেস্ট খেলতে চাই না আমি।"
টেস্টের শেষ দিন মাঠে নামার সময় পুরো দল মাহমুদউল্লাহকে 'গার্ড অব অনার' দেয়। টিভি ধারাভাষ্যকাররা জানান, টেস্ট থেকে বিদায়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। এরপর জাতীয় দলের অনেক ক্রিকেটার টেস্ট অবসরের বিষয়টি উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মাহমুদউল্লাহকে শুভ কামনা জানান। অবশেষে অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডার জানিয়ে দিলেন তার বিদায়ের কথা।
২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয় মাহমুদউল্লাহর। এরপর অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে বাংলাদেশ থিতু হতে হয় তাকে। বাংলাদেশের হয়ে ৫০টি টেস্ট খেলেছেন মাহমুদউল্লাহ। ৫টি সেঞ্চুরি ও ১৬টি হাফ সেঞ্চুরিসহ ৩৩.৪৯ গড়ে ২ হাজার ৯১৪ রান করেছেন তিনি। ক্যারিয়ারের শেষ ইনিংসে ১৫০ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। বল হাতে ৪৩টি উইকেটও আছে তার নামের পাশে।