টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২১: যা জানা প্রয়োজন
অবশেষে আসতে চলেছে আরও একটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। মাঠের খেলা শুরু হবে কবে?
সত্যিই, পাঁচ বছরের বিরতির পর, আবারও আমরা পেতে চলেছি একটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। ১৭ অক্টোবর শুরু হতে যাচ্ছে টুর্নামেন্টটি, এবং প্রথম দিনেই রয়েছে ডাবল হেডার। প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হবে ওমান ও পাপুয়া নিউ গিনি। দিনের দ্বিতীয় খেলায় বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ স্কটল্যান্ড। ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে ১৪ নভেম্বর।
এবারের বিশ্বকাপের আয়োজক কারা?
মূল আয়োজক বিসিসিআই, কিন্তু ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হবে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ওমানে। টুর্নামেন্টটি ভারত থেকে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে জুন মাসে, দেশটিতে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি ও সংক্রমণের একটি তৃতীয় ঢেউয়ের সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে।
এ টুর্নামেন্টে কয়টি দল অংশ নিচ্ছে?
১৬টি।
এ তো আইপিলে অংশগ্রহণকারী দলের দ্বিগুণ! কোন ফরম্যাটে খেলা হবে?
টুর্নামেন্টটি আয়োজিত হবে দুই রাউন্ডে। প্রথম রাউন্ডে থাকবে আটটি দল, যারা দুটি গ্রুপে বিভক্ত:
গ্রুপ এ | শ্রীলংকা, আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, নামিবিয়া |
গ্রুপ বি | বাংলাদেশ, স্কটল্যান্ড, পাপুয়া নিউ গিনি, ওমান |
গ্রুপ পর্বে প্রতিটি দল একে অন্যের সঙ্গে একবার করে খেলবে। আল আমিরাত, শারজাহ ও আবুধাবিতে ১২টি ম্যাচের পর, প্রতিটি গ্রুপের সেরা দুই দল যাবে পরের রাউন্ড, অর্থাৎ সুপার ১২-এ। সেখানে এই চার দল যোগ দেবে টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ আট দলের সঙ্গে। সুপার ১২ পর্বে দলগুলো ফের দুটি গ্রুপে বিভক্ত হবে।
গ্রুপ ১ | ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, এ১, বি২ |
গ্রুপ ২ | ভারত, পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ড, আফগানিস্তান, বি১, এ২ |
পুনরায় গ্রুপ পর্বে দলগুলো একে অপরের বিরুদ্ধে একবার করে খেলবে। এই রাউন্ডে থাকবে মোট ৩০টি ম্যাচ, এবং সেগুলো অনুষ্ঠিত হবে শারজাহ, আবুধাবি ও দুবাইতে। প্রতি গ্রুপের সেরা দুই দল যাবে সেমিফাইনালে।
পয়েন্ট সিস্টেম কী এবং যেকোনো রাউন্ডে দলগুলোর মধ্যে টাই হলে কী হবে?
প্রতিটি রাউন্ডেই, দলগুলো একটি জয়ের জন্য পাবে দুই পয়েন্ট; টাই, নো রেজাল্ট বা ম্যাচ পরিত্যক্তের জন্য পাবে এক পয়েন্ট; এবং হারের জন্য শূন্য পয়েন্ট।
যদি দুই বা ততোধিক দল সমান পয়েন্ট নিয়ে নিজেদের গ্রুপের খেলা শেষ করে, তাহলে শ্রেষ্ঠ দুই দল নির্ধারণের পরবর্তী বিবেচ্য সূচকগুলো হবে নিচের মতো :
- জয়ের সংখ্যা
- নেট রান রেড
- হেড-টু-হেড ফলাফল (প্রথমে পয়েন্ট, তারপর ওই ম্যাচে নেট রান রেট)
- প্রকৃত প্রথম রাউন্ড/সুপার ১২-এর সিডিং
ডিআরএস সুবিধা কি পাওয়া যাবে?
হ্যাঁ, প্রথমবারের মতো পুরুষদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে রিভিউ থাকবে। প্রতিটি দল এক ইনিংসে সর্বোচ্চ দুটি অসফল আবেদনের সুযোগ পাবে, যেমনটি মহামারির বিরতি শেষে ক্রিকেট পুনরায় শুরুর পর থেকেই টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিকে চলে আসছে।
ম্যাচ টাই হলে কী হবে?
অংশগ্রহণকারী দলগুলো একটি সুপার ওভার খেলবে। যদি সুপার ওভারও টাই হয়, তাহলে যতক্ষণ পর্যন্ত না একটি দল জয়ী হয়, সুপার ওভার চলতে থাকে। যদি কোনো কারণে সুপার ওভার সম্ভব না হয়, যেমন ধরুন আবহাওয়া পরিস্থিতি বা সময়স্বল্পতা, তাহলে ম্যাচটি টাই ঘোষিত হবে এবং উভয় দল এক পয়েন্ত কোড়ে পাবে।
যদি সেমিফাইনালে কোনো ফল বের করা সম্ভব না হয় (কিংবা ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়), তাহলে সুপার ১২ গ্রুপে যে দল উপরের অবস্থানে থেকে শেষ করেছে, তারা ফাইনালে চলে যাবে। তবে ফাইনালেও যদি একই ধরনের পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, তাহলে উভয় দলকেই যুগ্মভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা হবে।
খারাপ আবহাওয়ার কথা চিন্তা করে কোনো রিজার্ভ ডে কি রাখা হয়নি?
গ্রুপ পর্বের ম্যাচগুলোর জন্য কোনো রিজার্ভ ডে নেই। কেবল সেমিফাইনাল ও ফাইনালের জন্য রিজার্ভ ডে রয়েছে। ম্যাচ অফিশিয়ালরা চেষ্টা করবেন নির্ধারিত দিনেই ম্যাচ শেষ করার। কিন্তু তা যদি সম্ভব না হয়, তাহলে রিজার্ভ ডে-তে ম্যাচের বাকি অংশ শুরু হবে।
কোনো ম্যাচে যদি পূর্ণাঙ্গ ৪০ ওভার খেলার মতো সময় না থাকে, তবে গ্রুপ পর্বের কোনো ম্যাচে ফল নির্ধারণের জন্য উভয় দলকে অন্তত পাঁচ ওভার করে ব্যাট করতে হবে। সেমিফাইনাল ও ফাইনালের ক্ষেত্রে এই ন্যূনতম সংখ্যাটি দাঁড়াবে দশ ওভার।
এই টুর্নামেন্ট জয়ের জন্য ফেবারিট কারা?
কোনো একটি দলকে যদি ফেবারিট হিসেবে ভাবতে হয়, তবে সেটি হবে ইংল্যান্ড। তবে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ভারতও যথেষ্টের চেয়ে বেশি সক্ষম ইংল্যান্ডকে পেছনে ফেলতে। এছাড়া নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তানকেও হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই।
বিজয়ীরা কী পুরস্কার পাবে?
চ্যাম্পিয়ন দল পাবে ১.৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। রানার্স-আপ দল পাবে ৮,০০,০০০ মার্কিন ডলার। আর সেমিফাইনালে হেরে যাওয়া দুই দল পাবে ৪,০০,০০০ মার্কিন ডলার করে। সুপার ১২ ও রাউন্ড ১ এর প্রতিটি ম্যাচে জয়ের জন্য দলগুলো পাবে ৪০,০০০ মার্কিন ডলার করে। এছাড়া সুপার ১২ থেকে বাদ পড়া দলগুলো প্রত্যেকে পাবে ৭০,০০০ মার্কিন ডলার এবং রাউন্ড ১-এ বাদ পড়া দলগুলো প্রত্যেকে পাবে ৪০,০০০ মার্কিন ডলার।
ম্যাচের ভেন্যুগুলোকে কি দর্শকদের প্রবেশ করতে দেওয়া হবে?
হ্যাঁ, দর্শকদের প্রবেশ করতে দেওয়া হবে, কিন্তু সীমিত পরিসরে। ওমানের আল আমিরাত স্টেডিয়ামে একটি সাময়িক কাঠামো তৈরি করা হয়েছে ৩,০০০ ভক্তের জন্য। ওমান সরকার বাধ্যতামূলক করে দিয়েছে যে তাদের দেশে এবং স্টেডিয়ামে প্রবেশকারী সকলকে পুরোপুরি ভ্যাকসিনেটেড হতে হবে। এদিকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সকল ভেন্যুতে তাদের সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতার ৭০ শতাংশের মতো দর্শক প্রবেশ করতে পারবে।
*আবুধাবির স্টেডিয়ামে প্রবেশের জন্য দর্শকদের ডাবল ভ্যাকসিনেটেড হতে হবে। তবে দুবাই ও শারজাহে এই বাধ্যবাধকতা নেই। অবশ্য সেখানে সবাইকে মাস্ক পরে ঢুকতে হবে।
- সূত্র: ইএসপিএন ক্রিকইনফো