ছুটির চিঠিটি বিসিবির কেউ পড়েনি, দাবি সাকিবের
তৃতীয় সন্তানের জন্মের সময় যুক্তরাষ্ট্রে স্ত্রীর পাশে থাকতে নিউজিল্যান্ড সফর থেকে ছুটি নিয়েছেন সাকিব আল হাসান। আগামী মাসে শ্রীলঙ্কা সফরেও যাবেন না বাঁহাতি এই অলাউন্ডার। দুটি টেস্ট খেলতে বাংলাদেশ দলের শ্রীলঙ্কায় যাওয়ার কথা থাকলেও আইপিএল খেলতে সাকিব এই সফর থেকে ছুটির আবেদন করেন। তার আবেদন মঞ্জুর করে ছুটি দেয় বিসিবি।
ছুটি দিলেও সাকিবের সমালোচনা করেছিলেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। তিনি জানান, জোর করে কাউকে বাংলাদেশ দলে খেলোনো হবে না। বিসিবি সভাপতি জানিয়েছিলেন, সাকিবের যে টেস্ট খেলার ইচ্ছা নেই, সেটা আরও আগেই বোঝা গেছে। সাকিব যেন টেস্ট খেলেন, এই কারণেই সাদা পোশাকে তাকে অধিনায়ক করা হয়েছিল বলে জানান নাজমুল হাসান।
এ নিয়ে গত মাসে কম সমালোচনা হয়নি। সাকিবের দেশপ্রেমকেও কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে। তবে এ নিয়ে কিছুই বলতে দেখা যায়নি বিশ্বসেরা এই অলাউন্ডারকে। অবশেষে নিজের অবস্থান পরিস্কার করলেন সাকিব। ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ক্রিকফ্রেঞ্জির একটি লাইভে দেশসেরা এই ক্রিকেটার বলেছেন, টেস্ট খেলতে চান না, এমন কথা তিনি কখনই বলেননি।
শ্রীলঙ্কা সফর থেকে ছুটি নেওয়ার জন্য বিসিবিকে যে চিঠিটি পাঠিয়েছিলেন, সেটা বিসিবির কেউ পড়েননি বলে দাবি সাকিবের। তিনি বলেন, 'শুধু কথা হচ্ছে আমি টেস্ট খেলতে চাই না। আমি নিশ্চিত বিসিবিকে আমি যখন চিঠি দিয়েছি, যারাই বলছে যে আমি টেস্ট খেলতে চাই না বা টেস্ট খেলব না, তারা চিঠিটা পড়েনি। এটা একদম বড় কথা। আমি আমার চিঠিতে কোথাও উল্লেখ করিনি যে আমি টেস্ট খেলতে চাই না। আমি শুধু উল্লেখ করেছি, বিশ্বকাপ প্রস্তুতির জন্য এই সময়টাতে আইপিএল খেলতে চাই। শুধু এইটুকুই বলেছি।'
বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান আকরাম খান সম্প্রতি বলেছেন, সাকিব টেস্ট খেলতে চান না। আকরাম খানের কথা অসত্য দাবি করে সাকিব বলেন, 'আকরাম ভাই বারবার বলেছেন, আমি টেস্ট খেলতে চাই না। আমার ধারণা উনি চিঠিটি পড়েননি। আমি পাপন ভাইকে ধন্যবাদ দিতে চাই, উনি সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। খেলোয়াড়দের এই স্বাধীনতা থাকা উচিত। বোর্ড কিংবা বোর্ড প্রধান যদি কোনো ক্রিকেটারকে এভাবে সাহায্য করেন, তাহলে ক্রিকেটারের আত্মবিশ্বাস বাড়ে। পরে ক্রিকেটারদের জাতীয় দলের প্রতি দায়বদ্ধতাও বেড়ে যায়। সেদিক থেকে পাপন ভাইকে ধন্যবাদ দিতে চাই।'
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের আর দুটি ম্যাচ আছে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ দুটি জিতলে যে বাংলাদেশ ফাইনালে উঠে যাবে, তেমন নয়। সাকিব এটাও মনে করিয়ে দিলেন, 'সময় মতো সিরিজ হলে এই প্রশ্নই উঠত না। করোনা মহামারীর কারণে সব ওলটপালট হয়ে গিয়েছে। ম্যাচগুলো টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ। আমাদের আছেই এই দুটি ম্যাচ। আমরা আছি পয়েন্ট তালিকার তলানিতে। এমন না যে এই দুটি ম্যাচ জিতলে আমরা ফাইনাল খেলব। খুব বেশি একটা কিছু যে হবে, আমার মনে হয় না।'
এই দুই টেস্ট না খেলে আইপিএল খেললে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সেটা কাজে দেবে বলে বিশ্বাস সাকিবের। এ কারণে তিনি আইপিএলকে বেছে নিয়েছেন। বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার বলেন, 'এই বছর শেষে ভারতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আছে। যেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে আমাদের অনেক কিছু অর্জনের সুযোগ আছে। এই দুটি টেস্টে সেই সুযোগ নেই। অবশ্যই দল হিসেবে যদি দুটি টেস্ট জিতি তাহলে অনেক ভালো। কিন্তু বড় চিত্রটা দেখেন, বড় কিছু অর্জনের সুযোগ আছে আমাদের, সেটাকে ভালো সুযোগ মনে করি।'