চলে গেলেন দেশের ক্রিকেটের অগ্রদূত রেজা-ই-করিম

চলে গেলেন স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটকে পথ দেখানো রেজা-ই-করিম। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর (১৯৩৮-২০২০)।
ঢাকার একটি হাসপাতালে রোববার সকালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন রেজা-ই-করিম। দীর্ঘদিন ধরে ক্যানসারসহ আরও শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন রেজা-ই-করিম। তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
বাংলাদেশ ক্রিকেট যখন কেবল পথচলা শুরু করেছে, তখন রেজা-ই-করিম ছিলেন কান্ডারির ভূমিকায়। পুরো দেশের ক্রিকেট ভার একাই কাঁধে তুলে নিয়ে সামনে এগিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রথম কার্যনির্বাহী সম্পাদক রেজা-ই-করিম। কাজ করেছেন সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও।
রেজা-ই-করিম কার্যনির্বাহী হিসেবে যখন কাজ শুরু করেন, বাংলাদেশের ক্রিকেটে তখন কিছুই ছিল না। বোর্ডে বিদ্যুৎ পর্যন্ত ছিল না। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের একটি কক্ষে আবদ্ধ ছিল ক্রিকেটের কার্যক্রম। সেই ঘরে একটি করে টেবিল-চেয়ারের পাশাপাশি ছিল একটি আলমারি। সেখান থেকেই ক্রিকেটের সব কার্যক্রম পরিচালিত হতো।
ক্রিকেট যে তখন আলোর পথ দেখেনি, কার্যালয়ের বর্ণনাতেই সেটা স্পষ্ট। তবু খেই হারাননি রেজা-ই করিম। আর্থিক দৈন্যতা কাটিয়ে উঠতে তিনি ছুঠেছেন শহরের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। সরকার থেকে শুরু করে হাত পেতেছেন ধন্যাঢ্য ব্যক্তিদের কাছে।
সংগঠক হিসেবে বাংলাদেশ ক্রিকেটে অতি পরিচিত মুখ ছিলেন রেজা-ই-করিম। পাকিস্তান আমলে ইগলেটস ক্রিকেট দলের হয়ে খেলেছেন তিনি। সে সময়ই সংগঠক হিসেবে বিভিন্ন কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন তিনি। ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ আইসিসির সহযোগী সদস্যপদ পায়। এর পেছনে বড় অবদান ছিল রেজা-ই-করিমের।
সংগঠক হিসেবে তার প্রথম বড় সাফল্য বিখ্যাত মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাবকে (এমসিসি) বাংলাদেশে নিয়ে আসা। এমসিসিকে প্রথম বিদেশি ক্রিকেট দল হিসেবে বাংলাদেশে নিয়ে আসার অন্যতম রূপকার ছিলেন তিনি। এমসিসিকে পাঠানো আমন্ত্রণপত্রটির খসড়া রেজা-ই-করিমই করেছিলেন। ওই ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবেও দায়িত্বও পালন করেন তিনি।
বাংলাদেশের ক্রিকেটে অনেক পরিচয়ই ছিল রেজা-ই-করিমের। বোর্ডের কোষাধ্যক্ষ, সংগঠক, আম্পায়ারিংয়ের পাশাপাশি নির্বাচক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। রোববার বাদ জোহর ফার্মগেটের বাইতুশ শরফ জামে মসজিদে রেজা-ই-করিমের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।