চলে গেলেন আম্পায়ার নাদির শাহ

হাসপাতালের বিছানায় আধাশোয়া, শীর্ণ দেহ। নাকে অক্সিজেনের নল লাগানো। এরপরও মুখে সেই চিরচেনা হাসি। হাসতে হাসতেই নাদির শাহ বলেছিলেন-'ডাক্তার বলছে, ঠিক হয়ে যাব। কদিনের মধ্যে বাসায় ফিরব।' তা আর হলো না, জীবন যুদ্ধে হেরে গেছেন তিনি।
শুক্রবার ভোর পৌনে চারটার দিকে রাজধানীর আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় মারা যান সাবেক ক্রিকেটার ও আইসিসি প্যানেলের আম্পায়ার নাদির শাহ। ক্রিকেটের অন্তপ্রাণ, অফুরান প্রাণশক্তির মানুষ নাদির শাহর বয়স হয়েছিল ৫৭ বছর। শুক্রবার বাদ জুমা ধানমন্ডির ৭ নং রোড মসজিদে তার নামাজে জানাজা হবে।
গত দুই বছর ধরে ফুসফুসের ক্যান্সারে ভুগছিলেন নাদির শাহ। কয়েক দফায় দেশের বাইরে গিয়ে চিকিৎসা নেন তিনি। কিন্তু সুস্থতা মেলেনি। শারীরিক অবস্থার বেশি অবনতি হলে কিছুদিন আগে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত দুই দিন ধরে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল তাকে।
ক্রিকেটার এবং আম্পায়ার; দুই ভূমিকাতেই বর্ণিল ছিলেন নাদির শাহ। বাংলাদেশের ক্রিকেটে তিনি ছিলেন প্রিয় চরিত্র। সব সময় হাসি-মজায় মেতে থাকতেন। ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর আন্তর্জাতিক আম্পায়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। আইসিসি'র আন্তর্জাতিক প্যানেলের আম্পায়ার ছিলেন নাদির শাহ। তিনি জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার জাহাঙ্গীর শাহ বাদশার ছোট ভাই।

ক্রিকেটার নাদির শাহ ছিলেন লেগ স্পিনার, ব্যাটিংও জানতেন। ঢাকা লিগে দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে খেলেছেন তিনি। আবাহনী, মোহামেডান, বিমান, ব্রাদার্স ইউনিয়ন, সূর্য তরুণ, আজাদ বয়েজ, ধানমন্ডি ও কলাবাগান ক্লাবের হয়ে খেলেছেন নাদির শাহ।
ঘরোয়া ক্রিকেটে আম্পায়ারিং শুরু করে প্রশংসা কুড়ান নাদির শাহ, হয়ে ওঠেন এক নম্বর আম্পায়ার। ৭৩টি প্রথম শ্রেণি ও ১২৭টি লিস্ট 'এ' ম্যাচে আম্পায়ারিং করেন তিনি। ২০০৬ সালের মার্চে আম্পায়ার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় তার।
৪০টি ওয়ানডে ও ৩টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে আম্পায়ারের দায়িত্ব পালন করেছেন নাদির শাহ। টিভি আম্পায়ার হিসেবে ৬টি টেস্ট ও ২৩টি ওয়ানডেতে দায়িত্ব পালক করেন নাদির তিনি। সর্বশেষ ২০১৯ সালের অক্টোবরে মিরপুরে জাতীয় লিগের ম্যাচে আম্পারিং করেন নাদির শাহ।