খানাপিনার মিথ
বাঙালি মেয়ে, বাংলাদেশের মেয়ে কিশোয়ার পান্তা ভাত আর আলুর ভর্তা অস্ট্রেলিয়ার মাস্টারশেফ দৌড়ে বহু দূর নিয়ে গেছেন। গরিবের পান্তা নিয়ে যাদের নাক সিটকানোর ব্যারাম ছিল কিশোয়ারের অগ্রযাত্রা তাদের অনেককেই এই নাসিকা রোগমুক্ত করার কথা। পান্তা ভাত নিয়ে তাদের এখন জ্ঞানগর্ভ নিউট্রিশন লেকচার শুনতে হচ্ছে।
১৭ শতকের পর্যটক সেবাস্টিয়ান মানরিখ বাংলায় এসে দেখলেন গ্রামের সাধারণ মানুষ পান্তাভাত লবন ও শাক দিয়ে পরম তৃপ্তির সাথে খাচ্ছে। ধনীদের বেলায় গরম ভাত ঘি, মাখন, সুস্বাদু তরকারি ও মিষ্টান্ন। আগে অভিজাতদের কাছে যতো উপেক্ষিতই থাকুক না এখন তাদের উৎসবের খানা পান্তা, মরিচ, আলুর ভর্তা। পুষ্টি বিজ্ঞানীরা দেখিয়েছেন মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট গরম ভাতের চেয়ে পান্তা ভাতে বেশি। তাই বলে এটা মনে করার কারণ নেই যে গ্রামের দরিদ্র মানুষ পুষ্টিজ্ঞানে সমৃদ্ধ হয়ে সচেতন ভাবে পান্তাভাতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
নৃতাত্ত্বিকদের ব্যাখ্যা হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার প্রোটো অস্ট্রালয়েড মানুষ দিনে একবার রান্না করত, সন্ধেবেলায়। সুতরাং বাকী ভাত যাতে নষ্ট না হয় সে জন্য নৈশাহারের পর ভাতের পাতিলে পানি ঢেলে দিত। ভোরে পান্তা ভাতের নাস্তা, দুপুরে পান্তার ভরপেট খাবার।
অবস্থাপন্ন ঘরে খাবারে বৈচিত্র ছিল। অন্নদামঙ্গলে ব্রাহ্মণসেবায় ভবানন্দের স্ত্রী আনন্দময়ীর রান্নার শেষ নেই :
নিরামিষ তেইশ রাঁধিলা অনায়াসে
আরম্ভিলা বিবিধ রন্ধন মৎস মাসে...
ঝাল ঝোল ভাজা রান্ধে চিতল ফলুই
কই মাগুরের ঝোল, ভিন্ন ভাজে কই।...
কণ্ঠা দিয়া রান্ধে কই কাতলার মুড়া
তিত দিয়া পচা মাছ রান্ধিলেক গুড়া।
আম দিয়া ষোল মাসে ঝোল চড়চড়ি
আড়ি বান্ধে আদা রসে দিয়া ফুলকড়ি।
বড়া কিছু সিদ্ধ কিছু কাছিমের ডিম
গঙ্গাফল তার নাম অমৃত অসীম।
উনো ভাতে দুনো বল, অতি ভাতে রসাতল- এই মিথ খণ্ডিত হবার নয়। চিকিৎসকের প্রথম পরামর্শ ভাত কম খাবেন। এটা অবশ্য পরিশ্রম বিমুখ স্থুলকায় নগর মানুষের জন্য। কিন্তু গ্রাম্য নারীর কাছে এ পরামর্শ অর্থহীন :
শাশুড়ি নাই, ননদ নাই, কারে বা করি ডর
আগে খাই পান্তাভাত শেষে লেপি ঘর।
আলু পুরান
নিজেকে আলুখোর হিসেবে পরিচয় দিতে আপনি যত লজ্জাই বোধ করুন না কোনো তাতে কিছু এসে যায় না। আপনি বাস্তবিকই আলুখোর। মাথাপিছু আলুভোগের হিসেবে পুরুষ-নারী নির্বিশেষে বাংলাদেশের মানুষের অবস্থান পঞ্চম স্থানে। বাংলাদেশের উপরে আছে কোন চারটি দেশ : রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও চীন। পৃথিবীতে প্রায় সোয়া চারশ মিলিয়ন মেট্রিক টন আলু উৎপন্ন হয় এবং তার প্রায় পুরোটাই আমাদের ভোগে লাগে।
ষোড়শ শতকে স্পেন থেকে আসা আলু যতটা সম্বর্ধিত হবার কথা ছিল তা পায়নি। ইউরোপ ও আমেরিকা খুব সন্দিহান ছিল: এটা খাওয়া ঠিক হবে না হবে না। আলুর কদাকার আকৃতি অনেক ইউরোপিয়ানকে বিশ্বাস করিয়ে ছাড়ে যে এটা কুষ্ঠ ও সিফিলিসের মতো রোগ সৃষ্টি করে।
১৬১৯ সালে ফ্রান্সের বার্গান্ডিতে আলুচাষ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। জার্মানিরা আলু থেকে মুখ এতোটাই ফিরিয়ে নিয়েছিল যে ১৭৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের সময় সমাট ফ্রেডেরিখ দ্য গ্রেট যখন ক্ষুধার্তদের বিনে পয়সায় আলু সরবরাহ করার নির্দেশ দিলেন অনেকে তা প্রত্যাখ্যান করে। ইউরোপিয়ানদের এমনই ভাগ্য আলু নিয়ে তাদের মধ্যে এখন কাড়াকাড়ি, টাকা দিয়েও চাহিদা অনুযায়ী আলু পাচ্ছে না।
আলু নিয়ে আরো কিছু মিথ প্রচলিত ছিল এখনও আছে, এসবের অনেকগুলোরই বৈজ্ঞানিক ভিত্তি প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
আলু মানুষকে মোটা বানায় এটা ঠিক নয়, আলু নিজে ফ্যাট ফ্রি।
আলুর চামড়া ক্ষতিকর-এটা মিথ্যে কথা, এর পুষ্টিমান বেশি এবং আঁশও বেশি, কাজেই আলুর ত্বক ছিলার দরকার নেই।
আলু হচ্ছে আইরিশ খাবার তা আংশিক সত্য। সারা পৃথিবীর মানুষ আলু খায়। সবচেয়ে বেশি উৎপন্ন হয় চীনে আর সবচেয়ে বেশি খায় বেলারুশের মানুষ, মাথাপিছু বেলারুশরা বছরে ১৮২ কিলোগ্রাম আলু খায়।
দুগ্ধ পুরান
সেকালের পুরান: দুধ হাড় শক্ত করে। এটা একালেরও পুরান। কিন্তু দুই যুগ ধরে ৭২ হাজার নারীর উপর পরিচালিত হাভার্ড বিশ^বিদ্যালয়ের সমীক্ষা এমন কোন প্রমাণ পায়নি যে দুধ হাড়ভাঙ্গা ঠেকাতে বা বৃদ্ধ বয়সের অস্ট্রিওপরোসিস ঠেকাতে সমর্থ হয়েছে। বরং ৯৬ হাজার মানুষের উপর পরিচালিত সমীক্ষায় দেখা গেছে টিন এজার অবস্থায় যারা বেশি দুধ খেয়েছেন প্রাপ্ত বয়স্ক অবস্থায় তারা বেশি হাড়ভাঙ্গার শিকার হয়েছে। অপর একটি সমীক্ষা দেখিয়েছে ডেয়ারির দুগ্ধজাত খাবারের মাধ্যমে যারা বেশি ক্যালসিয়াম খেয়েছেন তাদের ঝুঁকি, যারা কম খেয়েছে তাদের চেয়ে বেশি।
আর একটি দুগ্ধ পুরান: দুধ হচ্ছে প্রকৃতির সবচেয়ে সুষম খাবার।
গবেষকরা বলছেন গরুর ছানার জন্য তার দুধ আদর্শ হতে পারে। কিন্তু মানুষের জন্য মোটেও নয়। পৃথিবীর ৬০ শতাংশের বেশি মানুষ ল্যাকটোস সহ্য করতে পারে না। দুগ্ধজাত ডেয়ারির খাবার ক্যান্সার প্ররোচিত করে।
সেকালের আর একটি দুগ্ধ পুরান: এসিড দিয়ে দুধকে বিশুদ্ধ করতে হয়। ভিক্টোরিয়ান যুগে গৃহবধু ও নারী গৃহকর্মীরা দুধে বোরাকিক এসিড চালত। তাতে দুধের টক হয়ে যাওয়া বন্ধ হতো বেশি সময় খোলা জায়গায় রাখা যেত। সে সময় নির্ভরযোগ্য ফ্রিজ ছিল না। কিন্তু এই এসিডই ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া সৃষ্টি করত তাতে মেরুদণ্ড ও অভ্যন্তরীণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হতো। ভিক্টোরিয়া যুগে ৫০ লক্ষ শিশুর মৃত্যু রেকর্ড করা হয়েছে। এদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ দুগ্ধ বিষয়ক জটিলতা থেকে মারা গেছে।
আপেল পুরান
একালের মানুষও চারটা আপেলকে স্মরণ করে : আদমের আপেল যা খেয়ে তার স্বর্গচ্যুতি ঘটল, তিন দেবীর আপেল, যে আপেল হেরা, এথিনা ও আফ্রোডাইটের মধ্যে অ্যাপল অব ডিসকর্ড সৃষ্টি করল, নিউটনের আপেল যা অল্পের জন্য মাথায় না পড়ে তার সামনে পড়ল এবং তাকে দিয়ে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি আবিষ্কার করাল এবং স্টিভ জবসের আপেল অ্যাপল ম্যাকিনটোশ কম্পিউটার। স্বর্গের নিষিদ্ধ ফল আপেল আদমকে খাইয়ে ইভ সব লণ্ডভণ্ড করে মানুষের জন্য বিপদ ডেকে আনলেন, মানুষের মধ্যে আপেল আতঙ্ক বিরাজ করতে শুরু করল। তারা আপেলের বিরুদ্ধে প্রচারণাও চালালেন।
আপেলের বদনাম কিছুটা ঘুচল যখন ঐতিহাসিকরা বলতে শুরু করলেন, আদমকে খাওয়ানো ফলটি আসলে আপেল ছিল না, ওটা ডালিম।
চুইংগাম পুরান
শৈশবের স্মৃতি স্মরণ করুন। চুইংগাম হঠাৎ পেটে চলে গেছে। সর্বনাশ। কেউ না কেউ বলবে জুতোর তলায় আটকে যাওয়া চুইংগাম যেমন সহজে সড়ানো যায় এটাও পেটে ভেতর নাড়ি-ভুঁড়ি এমনভাবে আকড়ে থাকবে যে সহজে বের হবে না। অবশ্য ইউরোপের পুরানটি ছিল কিছুটা কম আতঙ্কের, চুইংগাম হজম হতে এক সপ্তাহ সময় লাগে। ভয় দেখিয়ে শিশুদের কয়েকদিন চুইংগাম থেকে দূরে রাখা যায়। তারপর তারা আবার খেতে শুরু করে।
বাস্তবতা : মাঝে মধ্যে এমন দু'একটা চুইংগাম গিলে ফেললে সমস্যা নেই। ডিউক ইউনিভার্সিটি হেলথ সিস্টেমের গবেষণায় দেখা গেছে এটাও অন্য খাবারের মতোই হজম হয়, এবং অন্য খাবারের মতোই কিছুটা বর্জ্য নিঃসরন ঘটে।
গাজর পুরান
১. চোখের জ্যোতি বাড়াতে গাজর খান।
শাকসবজি এমনিতে স্বাস্থের জন্য ভালো। চোখের জন্য গাজরও ভালো কিন্তু তার চেয়ে বেশি ভালো ঘন সবুজ পাতার শাক ও সবজি। তাতে আরো বেশি অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি ও ভিটামিন ই রয়েছে যা চোখের জন্য কল্যাণকর।
২. গাজরে সুগার বেশি, খাবেন না।
কিঞ্চিৎ বেশি তো বটেই। তার আগে জেনে রাখুন গাজরের ৮৫ ভাগই পানি। এক পাউন্ড গাজরে সর্বোচ্চ তিন চা চামচ চিনি পেতে পারেন। এক ক্যান কোকা কোলাতে খাচ্ছেন আট চামচ চিনি। গাজরে যেসব ফাইটোকেমিক্যাল যেমন বিটা ক্যারোটিন ও আঁশ রয়েছে তা আসলে আপনার রক্তের চিনি কমাতে সাহায্য করবে।
৩. কাঁচা গাজরের খাদ্য মূল্য সেদ্ধ গাজরের চেয়ে বেশি।
অনেক খাবারের বেলায় কাচাটাই উত্তম, কিন্তু গাজর সেদ্ধ করলে ক্যারোটিনয়েড (অ্যান্টি -অক্সিডেন্ট) ৯৪ ভাগ বেড়ে যায়। কিন্তু গাজর তেলে ভাজলে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট কমে যায়। সুতরাং কাচার বদলে সেদ্ধটা খাওয়াই উত্তম।
স্বাস্থ্য পুরান
ভিটামিন সি ঠান্ডা থেকে বাঁচায়।
বিশ্বাস করবেন না। ভিটামিন সি শরীরের অনেক কাজে লাগে কিন্তু ঠান্ডা লাগা প্রতিরোধ করে এমন সুনিদিষ্ট প্রমাণ এখনও আসেনি।
মাখনের চেয়ে মার্জারিন ভালো
মাখনের বিকল্প হিসেবে মার্জারিন ভেষজ উৎস থেকে উৎপাদন করা শুরু হয়। ক্যালরির হিসেবে দুটোই সমান। কিন্তু 'ট্রান্স ফ্যাট' থাকার কারণে মার্জারিন বিপদজনক।
ডিম খাবেন না, কোলেস্টোরেল বেশি হার্ট অ্যাটাক হবে
ডিমের উপর নাখোশ হয়ে কারা এই বদনাম রটিয়েছে সনাক্ত করা দরকার। গত শতকে ডিম নিয়ে যা শুনেছেন, এই শতকে ঠিক উল্টোটা শুনছেন। ডিম খেতে বলছেন। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন দিনে দুটো ডিম স্বাভাবিক খাবারে অন্তর্ভুক্ত করতে সুপারিশ করেছে।
চামড়া ছিলে মুরগি রান্না করবেন
সমস্ত স্নেহ নাকি মুরগির চামড়ায়। সুতরাং অপসারণ করা দরকার। একালের ডাক্তার ও পুষ্টি বিশেষজ্ঞ বলছেন, চামড়াসহ মুরগি রান্না করুন। পরিবেশন করার আগে চামড়া ছাড়িয়ে নেবেন।
বাদাম জাঙ্ক ফুডের মতোই বাজে
ক'বছর আগে এটা সত্য বলে প্রায় সবাই বিশ্বাস করতেন। এখন উল্টো। শোনা যাচ্ছে : বাদাম হৃদরোগ প্রতিরোধ করে। প্রতিদিন বাদাম খাবেন।
মশলাযুক্ত খাবার থেকে আলসার হয়
মোটেও না। আলসার হয় ভিন্ন কারণে। আলসার হলে মশলাযুক্ত খাবার পরিহার করা দরকার কারণ মশলা আলসারকে প্ররোচিত করে।
নারিকেল পুরান
দুনিয়া জুড়ে সমাদৃত নারিকেল, খাওয়া নিয়ে নিষেধাজ্ঞা নেই। কিন্তু কেমন করে তা মনুষ্য সমাজে এলো এ নিয়ে ভয়ঙ্কর পৌরানিক কাহিনী আছে। এই কাহিনীতে যাদের বিশ্বাস তাদের কেউ কেউ নারিকেল খান না। নিউ ব্রিটেনের অনেকেই জানতেন একটি বালক মাছ ধরতে সমুদ্রে এসেছিল; হাঙ্গর তাকে ধরে ফেলে। শরীরের সবটুকু সানন্দে খেয়ে মাথাটা ছেড়ে দেয়। মাথাটি ভেসে সৈকতে এসে ধাক্কা খায় তার উপর বালির আস্তরণ পড়ে। সেখান থেকে একটি বৃক্ষ গজায় আর এটাই পৃথিবীর প্রথম নারিকেল গাছ।
প্রতিটি নারিকেলের ভেতর সেই বালকের মাথাটি লুকিয়ে থাকে সেই মাথা কি আমাদের ভাঙ্গা উচিত?
প্যাসিফিক আইল্যান্ডের অধিবাসীরা জানে গল্পটা তাদের নিজেদের। ওটা শুধু মাথা নয়, পুরো একটি মুখখণ্ডল। তার দুটো চোখ ও মুখ আছে কারণ সেই বালকটির মুখমণ্ডলের আদলেই তো অন্যান্য নারিকেলগুলোর বেড়ে উঠার কথা।
ব্রেডফ্রুট পুরান
দ্য মিউটিনি অব দ্য বাউন্টি সিনেমাটি যারা দেখেছেন তারা জানেন ব্রেডফ্রুট কতটা গুরুত্বপূর্ণ। হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের অধিবাসীরা দুটো কাহিনী জানেÑ ব্রেডফ্রুট রুটিও না আবার ফলও না।
স্থানীয় একটি বালক তার পরিবারের জন্য নিজেকে বিসর্জন দিল। তার মৃত্যুর পর মরদেহ যখন সৈকতে এসে লাগল তার অণ্ডকোষ থেকে একটি গাছ সৃষ্টি হলো। সেই গাছের ফল ব্রেডফ্রুট। দ্বীপের ৪৪০০০ দেবতা এই ফল এক সাথে খেলেন কিন্তু খাবার পর শুনলেন বালকের অণ্ডকোষ থেকে এই ফলবৃক্ষের সৃষ্টি। তারা ওয়াক থু করে মুখের বিচিটা ছুড়ে ফেললেন। পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে গিয়ে এই বিচি পড়ল এবং সেখানেই ব্রেডফ্রুট গাছ জন্মালো।
আর একটি মিথ হচ্ছে পৃথিবীতে দুর্ভিক্ষ লেগেছে। হাওয়াইয়ান দেবতা কু ভাবলেন মানুষকে না খেয়ে মরতে দেওয়া ঠিক হবে না। পরিবারের সদস্যদের তার ইচ্ছের কথা জানাতেই তিনি যেখানে দাঁড়িয়েছিলেন সেখানে তিনি তলিয়ে গেলেন। সেখানে একটি চারাগাছ জন্মাল, তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের অশ্রুতে ভিজে গাছটি বড় হল, তাতে উলু ফলটি ধরল, এর বিচি থেকে উলু পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ল। এই ফলই ব্রেডফ্রুট। বাস্তবে তৃতীয় শতকে পলিনেশিয়ান নাবিকরা নিউ গিনি থেকে এই ফল হাওয়াই নিয়ে আসে। এই ফল ক্ষুধা পীড়িত মানুষের কাছে আদরনীয় হয়ে ওঠে।