বলপূর্বক গুমে ‘মৌন সম্মতির নীতি’র বিষয়ে কমিটি গঠন পাকিস্তান সরকারের

গুম কীভাবে 'রাষ্ট্রীয় নীতি'তে পরিণত হয়েছে, তার ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য রোববার সরকারপ্রধানদের নির্দেশ দিয়েছিলেন পাকিস্তানের ইসলামাবাদ হাই কোর্ট (আইএইচসি)।
আইএইচসির এ নির্দেশের পর আজ সোমবার ফেডারেল সরকার গুমে 'মৌন সম্মতির নীতি'র বিষয়ে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করেছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, আইন ও বিচারমন্ত্রী আজম নাজির তারার নেতৃত্বে গঠিত কমিটিতে থাকবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ, পাওয়ার অ্যালেভিয়েশন অ্যান্ড সোশ্যাল সেফটি মন্ত্রী শাজিয়া মারি, যোগাযোগমন্ত্রী আসাদ মাহমুদ, প্রতিরক্ষা উৎপাদন মন্ত্রী মুহাম্মদ ইসরার তারিন, সমুদ্রবিষয়ক মন্ত্রী ফয়সাল আলী সাবজওয়ারী এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী আগা হাসান বালুচ।
কমিটির সুপারিশ বা প্রতিবেদন বিস্তারিত আলোচনার জন্য ফেডারেল মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হবে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, 'স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবে।'
রোববার আইএইচসির প্রধান বিচারপতি আতহার মিনাল্লাহ রোববার সাংবাদিক মুদাসসর নারুসহ আরও পাঁচ ব্যক্তির গুম হওয়া নিয়ে দায়ের করা পিটিশনের চূড়ান্ত যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের মামলায় ১৫ পৃষ্ঠার একটি আদেশ জারি করেন। আদেশে মিনাল্লাহ বলেন, বলপূর্বক গুমের নীতিকে নীরব অনুমোদন দিয়ে এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে বিশেষ করে সামরিক বাহিনীকে এর সঙ্গে জড়িয়ে জাতীয় নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে সংবিধান লঙ্ঘনের অভিযোগের জন্য পারভেজ মোশাররফ ও তার পরবর্তী সব শাসকের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, এর ব্যাখ্যা দিতে হবে তাদের।
আইএইচসির প্রধান বিচারপতির এ আদেশের পরই এই কমিটি গঠন করা হলো।
রোববার দেওয়া আদেশে মিনাল্লাহ বলেন, 'পারভেজ মোশাররফ তার আত্মজীবনী "ইন দ্য লাইন অভ ফায়ার"-এ অকপটে স্বীকার করেছেন যে "বলপূর্বক গুম" রাষ্ট্রের একটি অঘোষিত নীতি ছিল।'
ইসলামাবাদ হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি আদেশে বলেন, চরম রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধের কেন তাদের বিচার করা হবে না, তার ব্যাখ্যা দেওয়া সব শাসকের দায়িত্ব।
প্রধান বিচারপতি তার পর্যবেক্ষণে আরও বলেন, মানবাধিকার ও নাগরিকদের স্বাধীনতা লঙ্ঘন করার মতো কর্মকাণ্ডে সশস্ত্র বাহিনীর জড়িত থাকলে—এমনকি তারা জড়িত আছে, এমন সন্দেহ উদ্রেক হলেও—আইনের শাসন দুর্বল হয়ে পড়ে।
- সূত্র: ডন