কোভিড রোগীদের জন্য বাড়ি ছেড়ে দিতে বাধ্য করা হচ্ছে সাংহাইয়ের বাসিন্দাদের, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ

চীনের সাংহাইয়ে বেড়েই চলেছে কোভিডের সংক্রমণের তীব্রতা। করোনায় আক্রান্তদের আইসোলেশনের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা নেই শহরটিতে। এ পরিস্থিতি সামাল দিতে শহরবাসীদের বাড়িই বসল সাংহাইয়ের প্রশাসন।
এক নির্দেশি জারি করে শহর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কোভিড রোগীদের আইসোলেশনের জন্য বাড়ি ছেড়ে দিতে হবে বাসিন্দাদের। প্রশাসনের নির্দেশমাফিক সেই পদক্ষেপই নেয় সাংহাইয়ের ঝাংজিয়াং গ্রুপ।
৩৯টি পরিবারকে বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। জানানো হয়, তাদের বাড়িতে করোনা রোগীদের থাকার ব্যবস্থা হবে। এই নির্দেশ পাওয়ার পর থেকেই ক্ষোভে ফুঁসছে সাংহাইবাসী। তার জেরে শুরু হয় বিবাদ। রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখান শহরবাসী। পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধও হয় তাদের।
সাংহাইবাসীর বিক্ষোভ ও সংঘর্ষের একটি ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে সাদা কিট পরা পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছে বহু শহরবাসী। একসময় পুলিশের ব্যারিকেডও ভেঙে দেন তারা। তারপরই শুরু হয় দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ।
আরেকটি লাইভ ভিডিওতে এক মহিলাকে কাঁদতে দেখা যাচ্ছে। পুলিশকর্মীদের জিজ্ঞাসা করতে শোনা যাচ্ছে, 'একজন বয়স্ক মানুষকেও এভাবে কেন নিয়ে যাচ্ছেন?'
যদিও ঝাংজিয়াং গ্রুপ জানিয়েছে যে তারা ভাড়াটেদের ক্ষতিপূরণ দিয়েছে এবং তাদের একই কম্পাউন্ডের অন্য ইউনিটে স্থানান্তর করেছে।
পুলিশের সঙ্গে যারা হাতাহাতিতে হাতাহাতিতে জড়িয়েছেন, তাদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সাংহাই প্রশাসনের কড়া নীতিতে খাবার কেনার জন্যও বাড়ি থেকে বের হওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। লকডাউনে সাংহাইবাসীর বাড়িতে খাদ্যসামগ্রী পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে প্রশাসন। কিন্তু অনেকক্ষেত্রে তা না হওয়ায় বিভিন্ন সুপারমার্কেটে ভিড় করেন শহরবাসীদের একাংশ। ভিড়ের মধ্যে খাদ্যসামগ্রীর জন্য চলতে থাকে হাতাহাতি, লুটপাট।
উহানে কোভিড সংক্রমণের সুত্রপাতের দু-বছর পর এখন করোনার কেন্দ্র হয়ে উঠেছে সাংহাই। আড়াই বাসিন্দার এই শহরে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে একের পর এক কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে প্রশাসন। কঠোর নিয়মনীতির গ্যাঁড়াকলে পড়ে হাঁসফাঁস করছে শহরের বাসিন্দারা। তার মধ্যে নতুন এই আদেশ শহরবাসীর ক্ষোভের আগুনের যেন ঘি ঢেলে দিয়েছে।
- সূত্র: গার্ডিয়ান, হিন্দুস্তান টাইমস