স্থলমাইন খুঁজে সোনার মেডেল জিতে নিল ইঁদুর
কম্বোডিয়ার ভূমিতে স্থলমাইন খুঁজে দেওয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য সম্মানজনক স্বর্ণপদক পেয়েছে আফ্রিকান ইঁদুর মাগাওয়া। গন্ধ শুঁকেই সে মাটির নিচে লুকিয়ে থাকা এই ভয়ানক বিস্ফোরক খুঁজে বের করে। নিজের এই গুরুত্বপূর্ণ ক্যারিয়ারে ৩৯টি স্থলমাইন ও ২৮টি অবিস্ফোরিত বোমা খুঁজে বের করেছে সাহসী মাগাওয়া।
'নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কম্বোডিয়ার ভূমিতে ভয়ানক স্থলমাইন খুঁজে বের অসংখ্য জীবন বাঁচানো'র অবদানের জন্য মাগাওয়াকে এই সম্মানজনক পদক দিয়েছে ব্রিটেনের দাতাসংস্থা পিডিএসএ।
এর আগে আরও ৩০টি প্রাণী এই পদক লাভ করেছে। তবে এই প্রথম কোন ইঁদুর এই পুরষ্কার পেল। পিডিএসএ'র এই পদকের গায়ে খোদাই করে লেখা আছে 'সাহসিকতা বা দায়িত্ব পালনে অবদানের জন্য'।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ কম্বোডিয়ায় এখনও প্রায় ৬০ লাখের মতো স্থলমাইন পোঁতা আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সাত বছর বয়স্ক মাগাওয়াক ইঁদুরটিকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে তানজানিয়াভিত্তিক প্রতিষ্ঠান 'আপোপো'। ১৯৯০ সাল থেকে প্রতিষ্ঠানটি 'হিরোর্যাট' বা সাহসী নায়ক ইঁদুরদের স্থলমাইন খুঁজে বের করার প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। এক বছর প্রশিক্ষণের পর এই ইঁদুরদের সনদপত্র দেওয়া হয়।
আপোপো'র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ক্রিস্টোফ কক্স বলেন, 'এই পদক পাওয়া আমাদের জন্য অত্যন্ত সম্মানের। তবে শুধু আমাদের জন্যই নয়, কম্বোডিয়াসহ বিশ্বের অনেক দেশেই স্থলমাইনের কারণে ঝুঁকিতে আছে অনেক মানুষ। তাদের জন্যও এটা তাৎপর্যপূর্ণ'।
সাহসী ইঁদুর মাগাওয়া
মাগাওয়া'র জন্ম ও বেড়ে ওঠা দুইই তানজানিয়ায়। এর ওজন প্রায় দেড় কেজি ও লম্বায় ২৮ ইঞ্চি। যদিও অন্যান্য ইঁদুরের তুলনায় মাগাওয়া অনেক বড়, তবু এর ওজন এত কম যে স্থলমাইনের উপর দিয়ে হেঁটে গেলে এর চাপে মাইন বিস্ফোরিত হয় না।
এই বিস্ফোরক মাইনের ভেতর এক ধরণের রাসায়নিক উপাদান আছে। ইঁদুরদের এই উপাদানটির গন্ধ শুঁকেই মাইন চিহ্নিত করার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। যখনই তারা কোন মাইনের অস্তিত্ব খুঁজে পায়, মাটিতে আঁচড় কেটে মানুষ সহযোদ্ধাদের জানিয়ে দেয় তারা।
মাগাওয়া টেনিস কোর্টের সমান এলাকা ২০ মিনিটের মধ্যে তন্নতন্ন করে খুঁজে ফেলতে পারে। মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে এই এলাকা খুঁজতে মানুষের চারদিন পর্যন্ত সময় লেগে যায়।