মিয়ানমারে সেনানিয়ন্ত্রিত ব্যাংক থেকে টাকা তোলার হিড়িক
মিয়ানমারে অভ্যুত্থানবিরোধী আন্দোলনকারীরা সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত বাণিজ্যিক কার্যক্রম বয়কটের ডাক দেওয়ার পর সেনানিয়ন্ত্রিত ব্যাংকগুলো থেকে টাকা তোলার হিড়িক পড়ে গেছে।
মঙ্গলবার ইয়াঙ্গুনে সেনানিয়ন্ত্রিত 'মিয়াওয়াদ্দি ব্যাংক' থেকে টাকা তোলার জন্য দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। এর আগে, সোমবার সেনানিয়ন্ত্রিত ব্যাংকগুলো শুধু আধাবেলা খোলা থাকলেও সেগুলোর সামনে মিয়ানমারে দেশব্যাপী 'আইন অমান্য আন্দোলনে'র অংশ হিসেবে জনসাধারণের প্রচণ্ড ভিড় দেখা যায়।
মঙ্গলবার মিয়াওয়াদ্দি ব্যাংকের ইয়াঙ্গুন শাখার এক কর্মচারী গ্রাহকদের জানিয়ে দেন, ব্যাংক থেকে একদিনে শুধু ২০০ জন টাকা তুলতে পারবেন এবং কেউই একবারে ৫ মিলিয়ন কিয়াটসের (৩৫৫০ ইউএস ডলার) বেশি টাকা তুলতে পারবেন না। যারা লাইনে প্রথম ২০০ জনের মধ্যে জায়গা পাবেন না, তারা বুধবার আবার আসতে পারবেন।
ব্যাংক খোলা থাকলেই লোকজন সব টাকা তুলে নেবে- এমন গুজবের মধ্য দিয়েই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে বলা হচ্ছে, বেসরকারি ব্যাংকগুলো যেন সিডিএম-এ যোগ দেয়।
ইয়াঙ্গুন আঞ্চলিক কাউন্সিল বারবার ব্যাংকগুলোকে নিরাপত্তা প্রদানের ভরসা দিলেও বেশকিছু ব্যাংকিং স্টাফ সিডিএম-এ যোগ দিয়েছে এবং বেসরকারি ব্যাংকের শাখাগুলো বন্ধ রাখতে চাপ প্রয়োগ করেছে। এটিএম বুথ ছাড়া ব্যাংকগুলো বন্ধই রয়েছে।
মিয়ানমারে সেনানিয়ন্ত্রিত দুটি ব্যাংকের মধ্যে একটি মিয়াওয়াদ্দি ব্যাংক। সোমবার ব্যাংক খোলার পরই গ্রাহকদের অস্বাভাবিক ভিড় হওয়ায় কোভিড-১৯ পরিস্থিতি বিবেচনায় দুপুরের দিকে সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
ইয়াঙ্গুনের বেসরকারি কেবিজেড ব্যাংকের এক কর্মচারী জানান, তাদের ব্যাংকের বেশিরভাগ কর্মচারী অভ্যুত্থানবিরোধী প্রতিবাদ মিছিলে যোগ দেওয়ায় ব্যাংক বন্ধ রাখা হয়েছে।
মিয়ানমার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সরকারি মালিকানাধীন মিয়ানমার ইকোনমিক ব্যাংকের (এমইবি) বাইরে সেনাবাহিনী কড়া পাহারা নিয়োজিত করেছে। এমইবি ব্যাংকের কর্মচারীরা, যারা বর্তমান ও অবসরপ্রাপ্ত সিভিল সার্ভেন্টদের পে রোল এবং পেনশন সংক্রান্ত কার্যক্রম দেখাশোনা করায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন, তারাও সিডিএম-এ যোগ দিয়েছেন বলে জানা যায়।
মিয়ানমার সিটিজেন ব্যাংকের এক কর্মকর্তা নিজের ফেসবুক পেজে লিখেন, জনসাধারণ যেন ব্যাংকে নিজেদের টাকাপয়সা নিয়ে চিন্তিত না হয়। কারণ মিয়ানমারে কখনোই ব্যাংকগুলোর দেউলিয়া হয়ে যাবার মতো ঘটনা ঘটেনি। জনগণকে তিনি গুজবে কান দিতে নিষেধ করেন।
বেসরকারি একটি ব্যাংকের এক সিনিয়র অফিসারের বরাতে জানা যায়, বেসরকারি ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের যতদিন দরকার ততদিন পর্যন্ত এটিএম ও মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দিয়ে যাবে। তবে বেসরকারি ব্যাংকগুলো কবে নাগাদ তাদের সরাসরি কার্যক্রম শুরু করবে, সে ব্যাপারে তারা কিছুই জানায়নি।
মিয়ানমার কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকেও এ সংক্রান্ত কোনো নির্দেশ এখনো আসেনি।
- সূত্র: দ্য ইরাওয়াদ্দি