ভিনগ্রহে নাসার হেলিকপ্টারের ঐতিহাসিক উড্ডয়ন
মঙ্গল গ্রহে উড্ডয়ন করে কিছুক্ষণ উড়ে বেড়ানোর পর সফলভাবে অবতরণ করেছে মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসার ক্ষুদ্রাকৃতির হেলিকপ্টার রোবট- ইনজেন্যুইটি। এক শতাব্দী আগে রাইট ভ্রাতৃদ্বয় প্রথম যান্ত্রিক বিমানের উড্ডয়নের মাধ্যমে যে ঐতিহাসিক মুহূর্ত সৃষ্টি করেছিলেন, নাসার সাম্প্রতিক সফলতা যেন নতুন করে সেই মুহূর্তকেই জন্ম দিল। কারণ, এই প্রথম অন্য কোনো গ্রহের বুকে মানুষের তৈরি আকাশযানের যান্ত্রিক শক্তিচালিত ফ্লাইট পরিচালিত হলো বলে জানায় নাসা কর্তৃপক্ষ।
উপর নিচে দুই সাড়ি রোটর ব্লেড সজ্জিত যানটি লাল গ্রহের বুকে যে সফলতা দেখিয়েছে তা আগামীতে মঙ্গল ও সৌরজগতের অন্যান্য স্থান যেমন; ভিনাস এবং শনির উপগ্রহ টাইটানে অভিযানে নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে জানায় মহাকাশ সংস্থাটি।
মঙ্গল থেকে ইনজেন্যুইটির ইঞ্জিনিয়ারিং ডেটা তরঙ্গ আসার সঙ্গে সঙ্গেই উল্লাসে মেতে ওঠেন নাসার জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরি (জেপিএল) এর কর্মকর্তারা। ওই তথ্যে পাঠানো স্থির ছবি ও ডিভিওতে ৪ পাউন্ড বা ১.৮ কেজি ওজনের হেলিকপ্টারটির ৪০ সেকেন্ড ধরে ওড়ার দৃশ্য ছিল। ঘণ্টা তিনেক আগে ঠিক যেভাবে পৃথিবী থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, নিখুঁতভাবে সেই নির্দেশ পালন করে রোবটটি।
রোবট হেলিকপ্টারকে মাটি থেকে ১০ ফুট উপরে উঠে প্রথমে স্থিরভাবে এক স্থানে থেকে তারপর মঙ্গলের পৃষ্ঠের উপরে ৩০ সেকেন্ড ঘুরে বেড়ানোর জন্য পোগ্রাম করা হয়েছিল। পরিকল্পিত ফ্লাইটের পর ইনজেন্যুইটি তার চার পায়ে ভর করে অবতরণ করে।
এনিয়ে নাসার আনুষ্ঠানিক উপস্থাপনার কালে জেপিএল সদর দপ্তর থেকে সরাসরি সম্প্রচারিত ঐতিহাসিক মুহূর্তটির দৃশ্য দেখানো হয়। উড়ন্ত অবস্থায় রোবট যানটির ক্যামেরায় তোলা কিছু ছবিও প্রদর্শন করেন মিশন ম্যানেজাররা।
যানটিতে স্থাপিত নিচের দিকে তাক করা একটি ক্যামেরার সাদাকালো এক ছবিতে দিনের বেলায় মঙ্গলের মাটি থেকে ওপরে ওঠার পর যানটির ছায়া পড়ার দৃশ্য দেখা যায়।
তবে ইনজেন্যুইটি থেকে ২০০ ফুট দূরে থাকা নাসার মার্স রোভার পারসেভারেন্স- এ স্থাপিত ক্যামেরার তোলা রঙিন ভিডিও ফুটেজে মঙ্গলের কমলা রঙা পৃষ্ঠের ওপরে হেলিকপ্টারটির উড়ে বেড়ানোর চমৎকার দৃশ্য দেখা গেছে।
বিষয়টির গুরুত্ব তুলে ধরে জেপিএল-এ কর্মরত ইনজেন্যুইটি প্রজেক্ট ম্যানেজার মিমি অং বলেন, "ভিনগ্রহের বুকেও মানুষ একটি আকাশযান উড়িয়েছে, আমরা এখন তা গর্বভরে বলতে পারব।"
- সূত্র: রয়টার্স