ভারতে কি আসলেই পুরুষের তুলনায় নারীর সংখ্যা বেশি?
সম্প্রতি প্রকাশিত ভারত সরকারের জনসংখ্যা হালনাগাদ 'ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভের' (এনএফএইচএস) তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশটিতে নারী-পুরুষের অনুপাত ১০২০:১০০০। অর্থাৎ এনএফএইচএস-এর তথ্যমতে, ভারতে এখন পুরুষের বিপরীতে নারীর সংখ্যা বেশি।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাম্প্রতিক সমীক্ষাটি ভারতের ৩০ কোটি পরিবারের মধ্যে মাত্র ৬ লাখ ৩০ হাজার পরিবারের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে চালানো হয়েছে। তাই এতে উঠে আসা চিত্র পূর্ণাঙ্গ নয়; আদমশুমারির তথ্য পেলেই বরং প্রকৃত চিত্র বোঝা যাবে।
ভারতের জনসংখ্যা তহবিলের পরিচালক পুনম মুত্রেজা বিবিসি-কে বলেন, "আদমশুমারিতে দেশের পুরো জনসংখ্যার জরিপ চালানো হয়, তাই এর মাধ্যমেই সামগ্রিক লিঙ্গ অনুপাতের আরও সঠিক তথ্য পাওয়া যাবে।"
তবে, সাম্প্রতিক সমীক্ষার ফল ভারতে আলোড়ল তুলেছে। অনেকেই দাবি করছেন, দেশটিতে সামাজিক পরিবর্তন আসতে শুরু করেছে। ভারত এমন একটি দেশ যেখানে বাবা-মা মেয়ে সন্তানের তুলনায় ছেলে সন্তানের প্রত্যাশাই বেশি করে থাকেন; এমনকি মেয়ে সন্তানের ভ্রুণ হত্যাও দেশটিতে সাধারণ ঘটনা। সেখানে নারীদের সংখ্যা বেশি হওয়ার অর্থ অনেকের কাছেই 'সামাজিক পরিবর্তনের ইঙ্গিত'।
এদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ভারতের ইতিহাসে এই প্রথম নারীদের সংখ্যা পুরুষদের জনসংখ্যাকে ছাড়িয়ে গেছে। দেশটির জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের কর্মকর্তা ও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বিকাশ শীল বলেন, "আদমশুমারি থেকে আসল চিত্র বোঝা গেলেও সাম্প্রতিক ফলের দিকে তাকিয়ে অন্তত এতটুকু বলতে পারি, নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে আমাদের পদক্ষেপগুলো ঠিক পথেই এগোচ্ছে।"
কর্মকর্তারা বলছেন, নারী ক্ষমতায়নের জন্য সরকারের নেওয়া পদক্ষেপের ফলেই জনসংখ্যার এমন অনুপাত উঠে এসেছে সমীক্ষায়। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতেও এটিকে বিশাল এক অর্জন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
একজন সাংবাদিক তার প্রতিবেদনে লিখেছেন, ভারত এখন উন্নত দেশগুলোর কাতারে প্রবেশ করেছে। তবে, সমালোচকরা সরকার ও সরকারের সমর্থক মিডিয়ার এমন দাবিকে 'অযৌক্তিক' এবং এমন ফলাফলকে 'প্রায় অসম্ভব' হিসেবে দাবি করেছেন।
সূত্র: বিবিসি