ফ্রি চিকিৎসা নিতে গিয়ে খরচ ৭০ হাজার
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানের ১৩ বছরের স্বপ্না চৌধুরী, ক্যানসারে একটি পা বাদ গিয়েছে তার। বর্ধমান থেকে তাকে কলকাতায় সরকারি হাসপাতালে আনতে অ্যাম্বুল্যান্সে খরচ প্রতি বার ২২০০ টাকা।
কিন্তু যে দিন আসা, সে দিন হয়তো শুধু আউটডোরে ডাক্তার দেখলেন। তার পর পরীক্ষার জন্য আসতে হল আরও দু’দিন। তার পর কেমো। তার পর কিছু দিন রেডিয়োথেরাপি।
সরকারি ফ্রি চিকিৎসা পেতে শুধু গাড়িভাড়া বাবদই পরিবারের খরচ হয়েছে প্রায় ৭০ হাজার টাকা!
এমনই অবস্থা কলকাতার সরকারি হাসপাতালগুলোর। মঙ্গলবার আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা যায়।
স্বপ্নার বাবা সঞ্জয় ফুল বিক্রি করেন। আনন্দবাজারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, শুধু অ্যাম্বুল্যান্স নয়, অস্ত্রোপচারের সময়ে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি স্বপ্নার পরিবারকে বহু ওষুধ এবং সরঞ্জাম বাইরে থেকে কিনে দিতে হয়েছে। অথচ সমস্ত ঔষধপত্রই সরকারের তরফ থেকে বিনামূল্যে দেওয়ার কথা।
যাতায়াতের ভাড়া, থাকা-খাওয়ার খরচ আর কাজের দিন নষ্ট হওয়ায় এই আর্থিক লোকসান হয়। ক্যানসারের চিকিৎসা করাতে কলকাতায় আসার পথে মূল বাধা এগুলিই।
প্রাক্তন সরকারি চিকিৎসক সুবীর গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ক্যানসার রোগীদের জন্য সমস্ত সরকারি পরিবহণ ফ্রি করা জরুরি। তা হলে যাতায়াতের চিন্তা অনেকটাই কমে।
জেলা হাসপাতাল থেকে বিনা খরচে শহরে পাঠানোর জন্য প্রয়োজনে অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থাও করা যেতে পারে। এ ছাড়া ক্যানসার রোগীরা যে দিন হাসপাতালে যাবেন, পরীক্ষাগুলো যথা সম্ভব যেন সে দিনই করা হয়, এই মর্মে সরকারি আদেশনামা জরুরি। এতে একাধিক দিন আসার হয়রানি কমবে।’’
আর এক প্রবীণ সরকারি চিকিৎসকের কথায়, ‘‘যারা দৈনিক পারিশ্রমিকের ভিত্তিতে কাজ করেন, চিকিৎসার জন্য তাদের কাজের দিন নষ্ট হয়। হাসপাতালের প্রশংসাপত্রের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসন থেকে চিকিৎসা চলাকালীন তাদের জন্য এককালীন ভাতার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
চোলাই মদ খেয়ে মৃত্যু হলেও যেখানে ক্ষতিপূরণ মেলে, সেখানে ক্যানসার রোগী বা তার সহায়ক কেন এই ভাতা পাবেন না, সেই প্রশ্ন তোলার সময় এসেছে।’’