প্রবল বৃষ্টিতে স্বর্ণ খনিতে ভয়াবহ ধস, মৃত অন্তত ৫০
কঙ্গোয় ভয়াবহ সোনার খনি দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ৫০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। সে দেশের পূর্বাঞ্চলের দক্ষিণ কিভু প্রদেশে কামিতুগা শহরের কাছে তিনটি স্বর্ণ খনিতে ধস নামে। সে সময় ওই সমস্ত খনিতে ৫০ জনের বেশি কাজ করছিলেন। মাটির স্তূপের তলায় তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই চাপা পড়ে গিয়েছেন।
গত কয়েকদিন থেকে ওই এলাকায় একনাগাড়ে প্রবল বৃষ্টিপাত হচ্ছে, যার জেরে এই বিপর্যয় বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে।
কামিতুগার মেয়র অ্যালেক্সজান্দ্রে বুন্দিয়া জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় শুক্রবার বিকাল ৩টা নাগাদ হঠাৎ দেওয়াল ভেঙে খনিতে জল ঢুকতে শুরু করে। খনিতে কর্মরত শ্রমিক ও পরিবহন কর্মীরা জলের তোড়ে ভেসে যান বলে জানিয়েছেন তিনি।
মেয়র আরও জানিয়েছেন, উদ্ধারকাজের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। পাম্পের মাধ্যমে দুর্ঘটনাগ্রস্ত খনিগুলি থেকে জল ছেঁচে বের করার কাজ চলছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ধসে পড়া খনি তিনটি ৫০ মিটার গভীর। দুর্ঘটনার সময় অন্তত ৫০ জন সেখানে কাজ করছিলেন।
কঙ্গোতে অনেক ছোট ছোট খনি আছে। এই সমস্ত খনিগুলি সরকারি খাতায় কোন সংস্থার মালিকানাধীন নয়। তবুও বেআইনিভাবে বছরের পর বছর সেখানে খনন কাজ হয়। কোনও ব্যক্তি বা সংস্থা এই সমস্ত খনি পরিচালনা করে। তারাই শ্রমিক নিয়োগ করে। আধুনিক প্রযুক্তি তো দূরের কথা, শ্রমিকদের জন্য ন্যূনতম সুরক্ষার বন্দোবস্ত পর্যন্ত নেই। ফলশ্রুতিতে দুর্ঘটনা এখানকার রোজকার ঘটনা।
প্রতি বছর এই সমস্ত দুর্ঘটনায় অসংখ্য মানুষের প্রাণ যায়। তবুও এই বেআইনি খনিগুলি বন্ধ করা বা সেগুলি সরকারি নিয়ন্ত্রণের আওতায় আনার ক্ষেত্রে কোনও তৎপরতা নেই প্রশাসনের।
এই সমস্ত এলাকা অর্থনৈতিক ভাবে খুব পিছিয়ে। দারিদ্র্য এখানকার মানুষের নিত্যদিনের সঙ্গী। যে কারণে রুটিরুজির টানে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হলেও অবৈধ খনিতে কাজ করতে বাধ্য হন বহু মানুষ। এমনকী মহিলা এবং নাবালকদেরকেও এই সমস্ত খনিতে কাজ করতে দেখা যায়।
চলতি বছরের প্রথম দিকে মানিএমা এবং কাতাঙ্গায় ভয়াবহ খনি ধসে কমপক্ষে ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছিল। যে খনিতে দুর্ঘটনা হয়েছিল সেটি অবৈধ ছিল, বলে পরবর্তী সময়ে তদন্তে জানা যায়।
- সূত্র: এই সময়