প্রতি ব্যারেল অপরিশোধিত তেলের দাম ৮০ ডলার ছাড়াল

ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং সরবরাহের স্বল্পতার মধ্যে মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিশ্ব বাজারে তেলের দাম ৮০ ডলারের উপরে উঠেছে।
টানা পাঁচ দিন ধরে অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়তে বাড়তে ছাড়িয়ে গেছে ৮০ ডলার। যা বিগত তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আরো বেশ কিছুদিন এই অবস্থা বজায় থাকবে বিশ্বের তেল বাজারে।
মার্কিন ব্যাংক জেপি মরগানের তেল ও গ্যাস বিষয়ক প্রধান ক্রিস্টিয়ান মালেলের মতে, আগামী ২০২৩ সালের মধ্যে অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ১০০ ডলারকে ছাড়িয়ে যেতে পারে। আর তেলের বাজার, দামের এই স্তরে পৌঁছে যেতে পারে আগামী ছ'মাস থেকে এক বছরের মধ্যেই।
যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক বহুজাতিক বিনিয়োগ ব্যাংক ও ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান গোল্ডম্যান স্যাকস সপ্তাহের শুরুতে পূর্বাভাস দিয়েছে, এ বছরের শেষ নাগাদ তেলের দাম বেড়ে পৌঁছাতে পারে ৯০ ডলারে। তবে, এর আগে প্রতিষ্ঠানটি প্রতি ব্যারেল তেলের দাম ৮০ ডলারে উন্নীত হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছিল।
এদিকে, (প্রধানত) সৌদি আরব এবং রাশিয়ার নেতৃত্বাধীন ওপেক প্লাসের আউটপুট কৌশলে গত বছরের তুলনায় এ বছর তেলের দাম ৯০ শতাংশের বেশি বেড়েছে।
বিশ্বব্যাপী মহামারির কারণে গত প্রায় দেড় বছর যাবত তেলের চাহিদা কম ছিল। বড় বড় শিল্প উন্নত দেশগুলোয় লকডাউন চলার কারণে শিল্প কলকারখকানা সবই প্রায় বন্ধ ছিল বা চলেছিল সীমিত পরিসরে। ফলে গত বছর তেলের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়। তবে, মহামারির প্রভাব কিছুটা কমে আসায় বা চলমান পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার প্রবণতায় বিশ্ব বাজারে তেলের চাহিদা বাড়তে শুরু করেছে এখন। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মতো বড় শিল্প উন্নত দেশগুলোয় দিন দিন তেলের চাহিদা বাড়তে থাকায়, এবং সরবরাহের পরিমাণে সামঞ্জস্য না থাকায় একাধারে বেড়ে চলেছে অপরিশোধিত তেলের দাম।
মঙ্গলবার ওপেক তার ওয়ার্ল্ড অয়েল আউটলুকে পূর্বাভাস দিয়েছে, মহামারির প্রভাব থেকে বিশ্ব অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের ফলে আগামী কয়েক বছর তেলের চাহিদা তীব্রভাবে বৃদ্ধি পাবে; সেইসঙ্গে ব্যারেল প্রতি তেলের দামও থাকবে চড়া।
সংস্থাটি বলছে, নবায়নযোগ্য জ্বালানির উপর নির্ভরতা বাড়ানো সত্ত্বেও জ্বালানির ঘাটতি এড়াতে পুরো বিশ্বকে অবশ্যই তেল উৎপাদনে বিনিয়োগ অব্যাহত রাখতে হবে। মহামারিজনিত কারণে গত বছর তেলের বিনিয়োগ প্রায় ৩০ শতাংশ কমে ২৪০ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।
ওপেক মহাসচিব মোহাম্মদ বারকিন্দো জানিয়েছেন, অপরিশোধিত তেল খাতে বিনিয়োগ কমে যাওয়া তেলের দাম বৃদ্ধির আরেকটি অন্যতম কারণ। পর্যাপ্ত পরিমাণ বিনিয়োগ ছাড়া তেলের বাজারে স্থিতিশীলতা আসবে না এবং একইসঙ্গে ভবিষ্যতে দাম আরো বৃদ্ধি ও সরবরাহে আরো কমতি হতে পারে বলেও তিনি আশঙ্কা করছেন।
- সূত্র: আরব নিউজ