নীল ডেনিমের রং আসবে ব্যাকটেরিয়া থেকে

ব্যাকটেরিয়ার জৈব প্রকৌশলের মাধ্যমে জিন্সের নীল রং উদ্ভাবন করেছেন সান ফ্রান্সিসকোর একদল গবেষক। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
আমাদের সবার আলমারিতেই গোটা দুই নীল ডেনিমের প্যান্ট আছে। ১৮৭৩ সালে জ্যাকব ডেভিস এবং লেভি স্ট্রস বাণিজ্যিকভাবে প্রথম ডেনিম বা জিন্সের উৎপাদন শুরু করেন।
তারা যে ট্রাউজার তৈরি করেছিলেন তার নীল রং করতে তারা ব্যবহার করেছিলেন উদ্ভিদ থেকে তৈরি করা বেগুনী নীল রং। ১৮৮২ সাল নাগাদ এই বেগুনী নীল রঙ রাসায়নিক দিয়ে তৈরি করা শুরু হয়।
আর এখন ডেনিমের এই নীল রং আনতে ব্যবহার করা হয় রাসায়নিক বিভিন্ন উপকরণ, যাতে আছে বেশ ভালো পরিমাণ পেট্রোলিয়াম এবং ফরমালডিহাইড ও সায়ানাইডের মতো বিষাক্ত অনেক উপাদান।
নীল রং যেহেতু পানিতে দ্রবণীয় নয় তাই কাপড়ের গাড় নীল রং আনতে ও তরলে পরিণত করতে আরও বেশি পরিমাণ রাসায়নিক যুক্ত করা হয়। যা শ্রমিকদের জন্য ক্ষতিকর এবং জলজ প্রাণীদের জন্য প্রাণঘাতী।
কিন্তু এর সমাধান নিয়ে এসেছেন সান ফ্রান্সিসকোর জৈবপ্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিষ্ঠান টিঙ্কটোরিয়ামের একদল গবেষক। তারা বলছেন, দীর্ঘস্থায়ী নীল রং তৈরি করতে জৈব প্রকৌশলের মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়াকে ব্যবহার করা যেতে পারে। ঠিক যেমনটা জাপানের নীল উৎপাদনকারী উদ্ভিদ পলিগোনাম টিঙ্কটোরিয়াম থেকে করা যায়।
টিঙ্কটোরিয়ামের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী মিশেল ঝু বলেন, ‘যেহেতু ব্যাকটেরিয়া শক্তিশালী বিয়োজক, তাই এগুলোকে যদি সঠিক অবস্থায় রাখা যায় তাহলে এগুলোর সহায়তায় আমরা বেশি পরিমাণে রং তৈরি করতে পারি। এই রংগুলো দীর্ঘস্থায়ী হয় যা পেট্রোলিয়ামের উপর নির্ভরশীল নয়।’
তবে জৈবপ্রকৌশলের মাধ্যমে ক্ষতিকর রাসায়নিককে প্রতিস্থাপনের চেষ্টাকারী একমাত্র প্রতিষ্ঠান নয় টিঙ্কটোরিয়াম। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় ফ্রান্সের পিলি'র কথা, যারা বলছে যে, প্রতি টন পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে তাদের অণুজীব গাঁজন প্রক্রিয়া ব্যবহার করে ১০০ টন পেট্রোলিয়াম এবং ১০ টন বিষাক্ত রাসায়নিক বাঁচানো সম্ভব।
টিঙ্কটোরিয়াম এরই মধ্যে সুতা উৎপাদন শুরু করেছে এবং আগামী দুই বছরে তারা এমন প্রক্রিয়ায় জিন্স তৈরি করার পরিকল্পনা করছে যা ব্যয় এবং দামে প্রচলিত পদ্ধতির সাথে প্রতিযোগিতা করতে পারবে বলে মনে করেন মিশেল ঝু।