জাতিসংঘের অধিবেশনে অংশ নিতে চায় তালেবান

সম্প্রতি আফগানিস্তানের রাজনৈতিক ক্ষমতা দখল করে নেওয়া তালেবান গোষ্ঠী, জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে অংশগ্রহণের ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। চলতি সপ্তাহে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে জাতিসংঘের ৭৬তম সাধারণ অধিবেশন। সেখানে বিশ্ব নেতাদের উদ্দেশে নিজেদের বক্তব্য উপস্থাপনের সুযোগ চেয়েছে দলটি।
দেশটির বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী সোমবার এক চিঠিতে এই অনুরোধ জানান। অনুরোধের ভিত্তিতে জাতিসংঘের একটি কমিটি বিষয়টি তদারকি করবে বলে জানা গেছে।
তালেবান দল তাদের দোহা ভিত্তিক মুখপাত্র সুহাইল শাহীনকে আফগানিস্তানের জাতিসংঘের রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনীত করেছে।
গত মাসে আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ দখলকারী এই দলটি বলছে, ক্ষমতাচ্যুত সরকারের দূত এখন আর তাদের দেশের প্রতিনিধিত্ব করে না।
এদিকে, জাতিসংঘের মুখপাত্র জানিয়েছে, উচ্চ পর্যায়ের এই বিতর্কে অংশ নেওয়ার অনুরোধটি নয় সদস্যের একটি কমিটির বিবেচনাধীন রয়েছে। কমিটির সদস্যদের মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, চীন এবং রাশিয়ার প্রতিনিধিরা।
তবে আগামী সোমবার সাধারণ পরিষদের অধিবেশন শেষ হওয়ার আগে তাদের দেখা হওয়ার তেমন সম্ভাবনা নেই। ততদিন পর্যন্ত জাতিসংঘের নিয়ম অনুযায়ী, গোলাম ইসাকজাই বিশ্বব্যাপী আফগানিস্তানের রাষ্ট্রদূত হিসেবে জাতিসংঘে তার দেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন।
তিনি ২৭ সেপ্টেম্বর, সভার শেষ দিনে ভাষণ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তবে তালেবান সরকার বলছে, তার মিশন এখন আর আফগানিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করে না।
তারা আরও বলেছে, বেশ কয়েকটি দেশ এখন আর সাবেক প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনিকে নেতা হিসেবেও স্বীকৃতি দেয় না।
১৫ আগস্ট রাজধানী কাবুলে দিকে তালেবাদের অগ্রসর হওয়ায় প্রেক্ষিতে সাবেক প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি হঠাৎই আফগানিস্তান ত্যাগ করেন। এরপর থেকে তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতে আশ্রয় নিয়েছেন।
এদিকে মঙ্গলবার জাতিসংঘের বৈঠকে বিশ্ব নেতাদের প্রতি তালেবানের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে কাতার।
দেশটির শাসক শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি বলেন, "তাদের (তালেবানদের) বয়কট করলেই বরং মেরুকরণ ও প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হবে; সেখানে আলোচনা হতে পারে ফলপ্রসূ।"
কাতার আফগানিস্তানের মূল সমর্থক হয়ে উঠেছে। দেশটির মধ্যস্থতায়ই ২০২০ সালে তালেবান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দোহা চুক্তি সম্পন্ন হয়, যার ভিত্তিতে এ বছর আফগানিস্তান থেকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো বাহিনী প্রত্যাহার করে নিয়েছে পশ্চিমারা।
এছাড়া, তালেবান দখলের পর থেকে আফগান ও বিদেশি নাগরিকদের আফগানিস্তান থেকে সরিয়ে নিতেও বড় অবদান রেখেছে কাতার এবং বর্তমানে আন্তঃসরকার শান্তি আলোচনাও চালিয়ে যাচ্ছে দেশটি।
- সূত্র- বিবিসি