ক্যাম্প পরিচালনায় ভূমিকা রাখতে চায় রোহিঙ্গারা
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ নেই বলে ক্যাম্পের বাহিরে এক জায়গায় জড়ো হয়েছিলেন তরুণ প্রজন্মের কিছু রোহিঙ্গা অধিকার কর্মী। কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর ইন্টারনেট সংযোগ পেতেই তাদের মাঝে কর্মচাঞ্চল্য লক্ষ্য করা গেছে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ইন্টারনেট সংযোগ বাংলাদেশ সরকারের আরোপিত নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষিতে বিচ্ছিন্ন থাকার কারণেই নতুন প্রজন্মের রোহিঙ্গা অধিকার কর্মীরা আশেপাশের শহর বা গ্রামে গিয়ে এভাবে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন।
বুধবার এই বিষয়ে বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করে দ্য গার্ডিয়ান।
অবশ্য এর পেছনে তাদের কোনো অসৎ উদ্দেশ্য নেই। এসব তরুণেরা খুব সাধারণ মানের মুঠোফোনের ব্যবহার করেন। মুঠোফোন দিয়ে ফেসবুক, টুইটার এবং হোয়াটস অ্যাপের মতো অনলাইন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে তারা মিয়ানমারের নির্যাতন ও গণহত্যার নানা সংবাদ বিশ্বের কাছে তুলে ধরছেন।
তবে তারা মনে করেন, গত বছরের আগস্ট মাস থেকে আরোপিত প্রযুক্তি নিষেধাজ্ঞা না থাকলে তারা আরও সহজেই বিশ্ববাসীর কাছে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরতে পারতেন। সাহায্য করার জন্য যেসব আন্তর্জাতিক সংস্থা এসেছে তারাও রোহিঙ্গাদের নিজস্ব মতামতকে পাত্তা দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে।
মোহাম্মদ আরাফাত একজন রোহিঙ্গা তরুণ, যিনি ২০১৭ সালে তার জাতিগোষ্ঠীর ওপর পরিচালিত সহিংসতা তুলে ধরতে শর্ট ফিল্ম তৈরি করেন। তিনি গার্ডিয়ান প্রতিনিধিকে বলেন, দেখুন রোহিঙ্গা সম্প্রদায় দুর্বল নয়, কিন্তু বরাবরই প্রতিকূল পরিবেশ আমাদের দুর্বল করে রাখছে।
আরাফাত অন্য রোহিঙ্গাদেরও নিজ ভবিষ্যৎ সুরক্ষায় নানা পদক্ষেপ নিতে উৎসাহিত করছেন। এর মাঝে শিক্ষার প্রসার, শিল্পকর্মে অংশগ্রহণসহ নানা ইতিবাচক দিক রয়েছে। তবে রোহিঙ্গাদের এসব নিজস্ব উদ্যোগে সাহায্য দেওয়ার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বরাবরই উদাসীন।
আরাফাত বলেন, রোহিঙ্গা তরুণরা খুবই মেধাবী, কিন্তু কেউ আমাদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চায় না। তাই এখন রোহিঙ্গারাও তাদের ব্যাপারে নিঃস্পৃহ মনোভাব দেখাচ্ছে।
আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলোর কার্যক্রম ও ভূমিকা নিয়ে গত আগস্ট থেকেই সমালোচনা চলছে। ওই সময় বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নেয়। কিন্তু ফেরত যাওয়ার জন্য কোনো রোহিঙ্গা শরণার্থী স্বেচ্ছায় এগিয়ে আসেনি। এরপর থেকেই রোহিঙ্গাদের চলাচল এবং যোগাযোগের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।