করোনার মধ্যেই ডেঙ্গুর হানা সিঙ্গাপুরে ছাড়িয়ে যাচ্ছে পুরনো সব রেকর্ড
করোনোভাইরাসের সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউকেও অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছে শহর রাষ্ট্র নিয়ে গড়ে ওঠা এশিয়ার ছোট্ট দেশ সিঙ্গাপুর। কিন্তু দেশটি এবার মুখোমুখি হয়েছে আরেক ভাইরাল ইনফেকশন ডেঙ্গুর।
দেশটির ন্যাশনাল ইনভায়রনমেন্ট এজেন্সি (এনইএ) এর তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ১৪ হাজার মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, চলতি বছরেই এটি ২০১৩ সালের ২২ হাজার ১৭০ জন আক্রান্ত হওয়ার সীমা ছাড়িয়ে যাবে, যা হবে সিঙ্গাপুরের ইতিহাসে একবছরে সর্বোচ্চ ডেঙ্গু আক্রান্তের রেকর্ড।
ডেঙ্গু হচ্ছে এক ধরণের ভাইরাসজনিত রোগ যা এডিস মশার কামড়ের মাধ্যমে মানুষের দেহে ছড়ায়। এই একই মশার কারণে জিকা, চিকুনগুনিয়া এবং ইয়েলো ফিভার হয়। সাধারণত উষ্ণ এবং আদ্র ক্রান্তীয় অঞ্চলগুলোতে বর্ষা মৌসুমে এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। আক্রান্তদের মাত্র ২৫ শতাংশের মধ্যে রোগের লক্ষণ দেখা যায়। এর মধ্যে রয়েছে অতিরিক্ত জ্বর, মারাত্মক মাথাব্যাথা এবং পেশিসহ সারা শরীরে ব্যাথা। তবে সংক্রমণের মাত্রা মারাত্মক হলে রক্তপাত, শ্বাসকষ্ট, অরগ্যান ফেইলিওর এমনকি মৃত্যুও হতে পারে।
সিঙ্গাপুরে চলতি বছরে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে যা ২০১৩ সালের মোট মৃত্যুর দ্বিগুণ।
নগর রাষ্ট্র সিঙ্গপুরে সাধারণত জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত এই গ্রীষ্ম মৌসুমে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের পরিমাণ বেশি থাকে। কিন্তু চলতি বছরের মাত্রা অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক বেশি।
গত তিন সপ্তাহেই সিঙ্গাপুরে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা সপ্তাহে ১ হাজার করে ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে গত সপ্তাহেই আক্রান্ত হয় ১৪৬০ জন, যা সিঙ্গাপুরে সপ্তাহপ্রতি ডেঙ্গু সংক্রমণের দিক থেকে একটি রেকর্ড।
ক্রমবর্ধমান আক্রান্তের মধ্যেই সিঙ্গাপুর সরকার ডেঙ্গুর আবাসস্থল ও পাবলিক এরিয়াগুলোতে মশা ধ্বংসের পদক্ষেপ নিয়েছে।
ন্যাশনাল ইনভায়রনমেন্ট এজেন্সি (এনইএ) জানিয়েছে, গত তিন সপ্তাহে তারা ৬ হাজার ৯০০টি স্থানকে পরীক্ষা করেছে এবং নিয়ন্ত্রণে এনেছে।
বৃহস্পতিবার এজেন্সিটির এক বিবৃতিতে বলা হয়, "আবাসিক এলাকা, চত্বর এবং ভবনগুলোতেই ডেঙ্গু মশা বেশি ডিম পাড়ে বলে দেখা গেছে।"
যারা বাসাবাড়ি এবং এর আশপাশের এলাকা পরিষ্কার রাখবে না আগামী ১৫ জুলাই থেকে তাদের জরিমানা করার বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে পরিবেশ এজেন্সিটি।