একটা ডিমের দাম এখন ১১.২৫ টাকা!

এক বছর আগের ঠিক এই সময়ে একটা ব্রয়লার মুরগির ডিম কিনতে খরচ পড়তো ৭.৫০ টাকা, যা আজকের দিনে কিনতে গেলে খরচ করতে হচ্ছে ১১.২৫ টাকা।
দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে ডিমের উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত খামারিরা বলছেন, ভালো কোম্পানির এক বস্তা মুরগির খাবারের দাম এখন ৩ হাজার টাকার বেশি। যা এক বছর আগে ছিল দুই হাজার টাকার নিচে। খাবারের দাম বৃদ্ধির প্রধান কারণ উপাদানের দাম বৃদ্ধি। ভুট্টা, সয়াবিন মিল, রাইস পলিশ সহ যা যা দরকার সবকিছুর দামই বেড়েছে। ফিড তৈরিতে ৫০-৫৫ শতাংশ ভুট্টা এবং ৩০-৩৫ শতাংশ সয়াবিন মিলের দরকার হয়। পোল্ট্রি ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত বছরের মার্চে প্রতি কেজি সয়াবিন মিলের দাম ছিল ৪৯ টাকা। যা এখন কিনতে হচ্ছে ৬৫-৬৬ টাকায়। ভুট্টার দাম গত বছরের একই সময়ে ছিল ২৮ টাকা, যা এখন ৩৫ টাকায়।
ফিডের দাম বৃদ্ধির প্রভাব কিভাবে মুরগি পালনের উপর পড়ছে তার একটি ব্যখ্যা পাওয়া যায় রংপুর সদর উপজেলা পোল্ট্রি শিল্প মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আরমানুর রহমান লিংকনের কাছ থেকে।
এই খামারি জানান, ছয় মাস আগে একটি ডিম উৎপাদনের খরচ ছিল ৬.৩০ পয়সার মত। তখন খুচরায় ৮-৮.৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এখন একটি ডিম উৎপাদন করতে খরচ হচ্ছে ৮.৩০ পয়সা, যা খামারিরা বিক্রি করছে ৯ টাকায়। যেটা খুচরায় গিয়ে এখন ১১ টাকার বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
ফিডের দাম বৃদ্ধির এই মাশুল গুনতে হচ্ছে ভোক্তাকে। এখন এক হালি ব্রয়লার মুরগির ডিমের দাম ৪৫ টাকায় উঠেছে। যা এক বছর আগে ছিল ৩০ টাকায়। অর্থাৎ হালিতে ১৫ টাকা বেড়েছে। যারা একটু বেশি করে ডিম কিনেন, তাদের অবশ্য প্রতি ডজন ডিম কিনতে হচ্ছে অন্তত ১৩০ টাকায়, যা মাসদুয়েক আগেও ছিল ১০০-১১০ টাকার মধ্যে।
ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজার বিশ্লেষণের তথ্য বলছে, এক বছরের ব্যবধানে ৩২.২৬ শতাংশ বাড়তি দাম দিয়ে ডিম কিনতে হচ্ছে।
বাড্ডা এলাকার মাহতাব জেনারেল স্টোরের দোকানি মাহতাব হোসেন টিবিএসকে বলেন, 'প্রতিদিনই ডিমের দাম বাড়ছে। যারা ডিম সরবরাহ করছেন তারা নতুন নতুন রেটা দিচ্ছেন বলেই আমাদেরকে বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এখন ৪৫ টাকা হালি হিসেবে ডিম বিক্রি করছি। দাম বৃদ্ধির কারণে মানুষও কম কিনতে শুরু করেছে।
চাল, ডাল, তেল, চিনি, পেঁয়াজ, মাংস, বিস্কুট, চানাচুর থেকে শুরু করে সব ধরনের খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে সস্তায় যে ডিম খাওয়া যেত তার দামটাও বেড়ে গেল। যা ভোক্তার উপর বাড়তি চাপ তৈরি করলো।