কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রেটে এলসি খোলেনি অধিকাংশ ব্যাংক

বাংলাদেশ ব্যাংকের আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে বেধে দেওয়া রেটে এলসি খোলেনি অধিকাংশ ব্যাংক। গতকাল সকল পর্যায়ে ডলারের দাম বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারণ করলেও এই রেটের চেয়ে বেশি দামে অনেক ব্যাংক এলসি খুলেছে। কারণ হিসেবে অনেক ব্যাংক জানিয়েছে, বেশি দামে ডলার কিনতে হয়েছে, একইসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের রেটের কোন নির্দেশনা পায়নি।
যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাংক এলসি খুলতে ৮৯.১৫ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে। অনেক ব্যাংক বড় পরিমাণে এলসি না খুললেও ছোট পরিমাণে এলসি খুলতে অধিকাংশ ব্যাংকের এর চেয়েও বেশি দামে এলসি খুলতে হয়েছে।
শীর্ষ পর্যায়ে রেমিট্যান্স সংগ্রহকারী একটি ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, তাদের ব্যাংক সোমবার ৯১ টাকায় এলসি খুলেছে। একইসঙ্গে চতুর্থ প্রজন্মের একটি ব্যাংক এলসি খুলেছে ৯৬ টাকায়, যা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেধে দেয়া রেটের অনেক বেশি।
এর আগে গতকাল কেন্দ্রীয় ব্যাংক মৌখিকভাবে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি মার্কিন ডলার ৮৯ টাকায় ও ব্যাংক বিলস ফর কালেকশন (বিসি) সেলিং রেট ৮৯ টাকা ১৫ পয়সা নির্ধারণ করেছে। আমদানিকারকদের কাছে ব্যাংকগুলোর এ দামে ডলার বিক্রি করার কথা ছিল।
ব্রাক ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের কর্মকর্তা শাহীন ইকবাল দ্য বিজনেস স্টান্ডার্ডকে বলেন, 'গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে আমরা সেই রেটেই আজ এলসি খুলেছি। তবে খুবেই প্রয়োজনীয় এলসিগুলো খুলেছি। মার্কেটে এ রেটে এলসি খোলা খুবই কঠিন হবে কারণ অনেক ব্যাংকের ডলার কিনতে হয়েছে এর চেয়েও বেশি দামে।'
তিনি আরও বলেন, বিদেশ থেকে এই রেটে আমাদের প্রবাসীদের রেমিট্যান্স সংগ্রহ অনেক কঠিন হচ্ছে। রেমিট্যান্স মূল্য কম হওয়ায় তারা যেখানে বেশি দাম পাচ্ছে তাদের মাধ্যমে দেশে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছে।
ডলার সংকটে গত বৃহস্পতিবার অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ (এবিবি) ও . বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) সঙ্গে সভায় বসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরামর্শে ব্যাংকগুলো এই সিদ্ধান্ত নেয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন গভর্নর ফজলে কবির।
সেদিনের সভায় থাকা একাধিক ব্যাংকার জানিয়েছেন, মার্কেটের ডলার সংকট কাটিয়ে উঠতে সভা ডাকা হয়েছিল। তবে সভায় যে সিদ্ধান্তের বিষয়ে উঠে এসেছে এর ফলে সংকট আরও বাড়বে। কারণ এত কম দামে প্রবাসী আয় বৈধ পথে দেশে আসবে না। ডলারের দাম কম হওয়ায় রপ্তানি আয়ও বাধাগ্রস্ত হবে। বাস্তবতাকে স্বীকার না করে এখনো ৯০ টাকার নিচে ডলারের দাম বেধে রাখতে চায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যদিও বাস্তবে ৯৫ টাকার উপরে ডলার কেনাবেচা হচ্ছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্রাংকের ট্রেজারি বিভাগের কর্মকর্তা মোকলেসুর রহমান বলেন, তাদের কাছে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কেন্দ্রীয় ব্রাংকের চিঠি আসেনি। তাছাড়া শনি-রবিবার ইন্টারন্যাশনাল মার্কেট বন্ধ থাকায় তাদের সোমবার এলসি খুলতে হয়নি।