অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে রাজস্ব বৃদ্ধিতে ভুমিকা রেখেছে আমদানি বৃদ্ধি
গত কয়েক মাস করোনার প্রকোপ কম থাকা ও স্থানীয় পর্যায়ে চাহিদা বাড়তে থাকায় আমদানি বেড়েছে, যা কাস্টমস ডিউটি তথা রাজস্ব আদায়ে বড় ভুমিকা রেখেছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের হিসাব অনুযায়ী, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথমার্ধ জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজস্ব আদায় আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে ১৪.২২ শতাংশ বা প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা।
এর মধ্যে বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে শুল্ক আদায়ে। আলোচ্য সময়ে এককভাবে কাস্টমস ডিউটি আদায়ে প্রবৃদ্ধি হয় প্রায় ২০ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে আমদানি বেড়েছে ৫৪ শতাংশ।
দেশের আদায়কৃত শুল্কের বেশিরভাগই আসে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজ ও বেনাপোল কাস্টম হাউজের মাধ্যমে। কাস্টমস বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত কয়েক মাস ধরে আমদানি বাড়তির দিকে। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাজারে সম্প্রতি জ্বালানির তেলসহ বেশকিছু বাণিজ্যিক পণ্য ও কাঁচামালের বাড়তি দাম এবং জাহাজ ভাড়া বৃদ্ধিও শুল্ক আদায় বাড়াতে ভুমিকা রেখেছে।
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে আলোচ্য কারণগুলোর পাশাপাশি মিথ্যা ঘোষণায় পন্য আমদানি ঠেকাতে তাদের তৎপরতা বৃদ্ধিও শুল্ক আদায় বাড়ার অন্যতম কারণ বলে জানিয়েছেন। একই কথা জানিয়েছে বেনাপোল কাস্টম হাউজ সূত্রও।
সরকারের অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আদায়ের বেশিরভাগ অংশই আদায় হয় এনবিআরের মাধ্যমে। এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের মূল খাত ব্যক্তি ও কোম্পানির আয়কর, উৎপাদন ও স্থানীয় পর্যায়ে বিপণনের উপর মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ও আমদানি পর্যায়ে আদায়কৃত কাস্টমস ডিউটি বা শুল্ক।
এনবিআরের তৈরি করা প্রাথমিক তথ্যানুযায়ী, গত ছয় মাসে এনবিআরের আওতাধীন অফিসগুলো আদায় করেছে ১ লাখ ২৬ হাজার ২০৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে কাস্টমস ডিউটি ছাড়াও ভ্যাট ও আয়কর আদায় বেড়েছে যথাক্রমে ৯.৫৪ ও ১৪.৮৩ শতাংশ।
অবশ্য সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, গত বছরের এই সময়ে আদায় অনেক কম ছিল। ওই আদায়ের উপর এবার প্রবৃদ্ধির পরিমাণ কিছুটা বেশি দেখা যাচ্ছে।
গত বছরের প্রথম ছয় মাসে রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি ছিল ৪ শতাংশেরও কম। আলোচ্য সময়ে কাস্টমস ডিউটি, ভ্যাট ও আয়কর আদায়ে প্রবৃদ্ধি ছিল যথাক্রমে ৬.৭৭, ১.১৬ ও ৪.৮ শতাংশ। সে তুলনায় প্রবৃদ্ধি হলেও লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আদায় কম হয়েছে ১৭ হাজার কোটি টাকা।