গত ছয় মাসে ব্যাংকের টাকা, গ্যাস-বিদ্যুতের সরবরাহ ছিল মাথাব্যথার বড় কারণ: ডিসিসিআই সভাপতি
শিল্প প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য গত ছয় মাসে ব্যাংকের টাকা ও গ্যাস-বিদ্যুতের সংকট সবচেয়ে বড় মাথা ব্যথার কারণ ছিল বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রির (ডিসিসিআই) প্রেসিডেন্ট আশরাফ আহমেদ।
শনিবার ডিসিসিআই আয়োজিত 'বাই-ইকোনমিক স্টেট অ্যান্ড ফিউচার আউটলুক অব বাংলাদেশ ইকোনমি- প্রাইভেট সেক্টর পার্সপেক্টিভ' শীর্ষক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের সময় তিনি এ কথা বলেন।
ডিসিসিআই প্রেসিডেন্ট আশরাফ আহমেদ বলেন, 'এখনো আমরা গ্যাস-বিদ্যুতের সমস্যার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। লেবার আনরেষ্ট (শ্রমিক অসন্তোষ) ও জ্বালানির সমস্যা সমাধান করতে না পারলে এবং দিনে অন্তত যদি ৪ ঘণ্টাও একটানা কারখানা চালানো না যায়– তাহলে এক্সপোর্টে বড় ধাক্কা আসবে। এমএসএমইতেও (অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠান) উৎপাদন কমে আসছে। এটাকে স্থিতিশীল করতে না পারলে শুধু এক্সপোর্টেই নয়, কর্মসংস্থানেও বড় ধাক্কা আসবে।
এই সংকটটা শুধু যে আরএমজিতে (তৈরি পোশাকখাত) তা নয়, নন-আরএমজিতেও প্রকট। এরমধ্যেই আমরা খবর পাচ্ছি গ্যাসের মজুদ কমে আসছে। তবে এ বছরের শেষে যদি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন সরবরাহ ব্যবস্থায় আসে তাহলে একটা ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে। এই অবস্থার উত্তরণে দ্রুত বিকল্প ব্যবস্থার দরকার বলে জানান ডিসিসিআই প্রেসিডেন্ট।
তিনি বলেন, শ্রমিক অসন্তোষ শুধু আশুলিয়াতে ছিল, এটা এখন এর বাইরেও দেখা যাচ্ছে। এই অবস্থায় যদি অবস্থার পরিবর্তন করে যদি আস্থা ফেরানো না যায় তাহলে তা বিনিয়োগেও আঘাত করবে। এমনিতেই গত তিন-চার বছর ধরে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগের প্রবৃদ্ধি ২৪ শতাংশের আশপাশেই থমকে রয়েছে।
সেমিনারের মূল প্রবন্ধে বলা হয়, অন্তবর্তীকালীন সরকার আর্থিকখাত সংস্কারে এরমধ্যেই কিছু সংষ্কার প্রস্তাব হাতে নিযেছে। এগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে তার ইতিবাচক প্রভাব অর্থনীতিতে আসবে। হয়তো সেটা সময়সাপেক্ষ। সরকার যদি এখন কর রাজস্ব বাড়াতে পারে— তাহলে বৈশ্বিক যে ঋণ রয়েছে, সেটা প্রদানের সক্ষমতা বাড়বে। এর জন্য রাজস্ব আহরণে জোর দিতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক নীতি সুদহার বাড়িয়েছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে যাচ্ছে, এটার ফল পেতে হলেও অবশ্য আমাদেরকে ৩-৬ মাস অপেক্ষা করতে হবে। তাছাড়া যে ১০-১০টি দুর্বল ব্যাংক নিয়ে সংস্কারের কথা হচ্ছে— তার প্রভাবটা যাতে ব্যাংকখাতের সব ব্যাংকের ওপর না পরে, সেদিকে নজর রাখতে হবে এবং শিল্প ও এমএসএমইতে যে ব্যাংকের ঋণ— সেটাকে স্বাভাবিক রাখার সুপারিশও করেছে ডিসিসিআই।