বাংলাদেশে ডিজেল রপ্তানি অব্যাহত রয়েছে: অয়েল ইন্ডিয়া’র চেয়ারম্যান
বাংলাদেশে ভারতের ডিজেল রপ্তানি অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে অয়েল ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক রঞ্জিত রাঠ। ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, বাংলাদেশে তাদের রিফাইনারি প্রকল্পের জন্য সরঞ্জাম সরবরাহও চলমান রয়েছে।
রঞ্জিত রাঠ বলেন, "ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী পাইপলাইনের কাজ চলছে এবং ডিজেল পরিবহণে কোনো বাধা-বিপত্তি নেই।" কোম্পানির ৬৫তম বার্ষিক সাধারণ সভার পর গণমাধ্যমকে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা সত্ত্বেও ডিজেল সরবরাহের জন্য একটি ঋণপত্র চালু আছে।
অয়েল ইন্ডিয়ার সহযোগী প্রতিষ্ঠান আসাম-ভিত্তিক নুমালিগড় রিফাইনারি লিমিটেড (এনআরএল) ১৩১ কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপলাইনের মাধ্যমে প্রতি মাসে ৬,০০০ থেকে ৭,০০০ মেট্রিক টন ডিজেল বাংলাদেশে রপ্তানি করে। বাংলাদেশ প্রান্তে পার্বতীপুর থেকে এটি সংগ্রহ করা হয়। গত বছরের মার্চ মাসে উদ্বোধন হওয়া এই পাইপলাইন প্রতি বছরে এক মিলিয়ন টন ডিজেল পরিবহনের সক্ষমতা রাখে।
এনআরএল তাদের বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা ৩ মিলিয়ন টন থেকে বাড়িয়ে ৯ মিলিয়ন টন করতে যাচ্ছে। নির্মাণকাজ ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হবে বলে জানিয়েছেন রাঠ। তিনি বলেন, "স্থিতিশীলতার জন্য আরও ছয় মাস প্রয়োজন হবে, তাই আমরা ২০২৭ সালের মার্চের মধ্যে রিফাইনারিটি পূর্ণ সক্ষমতা নিয়ে পরিচালনার লক্ষ্যে কাজ করছি।"
ইউক্রেন সংঘাতের কারণে আরোপিত নিষেধাজ্ঞার পর থেকে রাষ্ট্রীয় পরিচালিত এ তেল অনুসন্ধানকারী প্রতিষ্ঠানটি রাশিয়ার দুটি তেল ও গ্যাস প্রকল্প থেকে ২৫০ মিলিয়ন ডলার লভ্যাংশ সংগ্রহ করেছে। বর্তমানে এই অর্থ মস্কোর স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়াতে রাখা হয়েছে এবং তা এখনো দেশে ফেরানো হয়নি বলে জানিয়েছেন রাঠ।
অয়েল ইন্ডিয়ার রাশিয়ার দুটি ঊর্ধ্বমুখী প্রকল্প- ভানকর্নেফ্ট এবং তাস-ইউরিয়াখে অংশীদারিত্ব রয়েছে। তিনি বলেন, "ভানকর্নেফ্টর থেকে আমরা প্রায় ৮৬ শতাংশ এবং তাসর থেকে ১০০ শতাংশ লভ্যাংশ পেয়েছি। এই তহবিল ফেরত আনার বিষয়ে রাশিয়ান কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা চলছে।"
ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন লিমিটেড এবং ভারত পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন লিমিটেডের মতো অন্যান্য ভারতীয় কোম্পানিও এই দুটি প্রকল্পে অংশীদারিত্ব রয়েছে। মোট প্রায় ৯০০ মিলিয়ন ডলার লভ্যাংশ এখনো কোম্পানিগুলো পায়নি।
গত অর্থবছরে অয়েল ইন্ডিয়া রেকর্ড পরিমাণ, ৬১টি কূপ খনন করেছে। এর মধ্যে ১৭টি তেল অনুসন্ধানকারী এবং বাকি ৪৪টি উন্নয়নমূলক। এ বছর, প্রতিষ্ঠানটি ৭৫টির বেশি কূপ খননের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।
রাঠ জানান, কোম্পানিটি একটি বিকল্প জ্বালানি পোর্টফোলিও তৈরি করছে। এনআরএল দেশের প্রথম বায়োফুয়েল রিফাইনারি স্থাপনের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। এর বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা ৫০,০০০ টন এবং এটি ইথানল উৎপাদনের জন্য বাঁশকে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করবে। এই বায়ো রিফাইনারিটি চলতি মাসের শেষের দিকে উৎপাদন শুরু করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
২০৩০ সালের মধ্যে অয়েল ইন্ডিয়া বিভিন্ন প্রকল্পে বিশেষত পরিশোধিত জ্বালানিতে ২৫,০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে।