আগামী সপ্তাহে এস আলম নিয়ন্ত্রণাধীন সব ব্যাংক বোর্ড পুনর্গঠন করা হবে: গভর্নর
আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এস আলমের নিয়ন্ত্রণাধীন ব্যাংকগুলোর বোর্ড পুনর্গঠন করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একইসঙ্গে বোর্ড পুনর্গঠনের পর ব্যাংকগুলোতে থাকা এলসি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ারও আশ্বাস দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) গভর্নরের সঙ্গে পোশাক খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ)— এর প্রতিনিধি দলের এক জরুরি বৈঠকে এ বিষয়গুলো জানানো হয়। সভায় উপস্থিত থাকা একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
গভর্নর বিজিএমইএ প্রতিনিধি দলকে জানান, "এক্সপোর্ট ডেভলেপমেন্ট ফান্ড (ইডিএফ) এ বর্তমানে থাকা তিন বিলিয়ন ডলার থেকে নিয়মিত ঋণ ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে। অপরদিকে, রপ্তানির চাকা সচল রাখতে পোশাক খাতের ব্যবসায়ীদের জন্য ৩ হাজার কোটি টাকার বিশেষ ফান্ড গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।"
এক সপ্তাহ আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আর্থিক খাতে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতি এবং ব্যাংক অনিয়মের কারণে এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকা ছয়টি ব্যাংকের এলসি কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। এসব ব্যাংকের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীদের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।
সভায় উপস্থিত থাকা একজন বিজিএমইএ কর্মকর্তা বলেন, "এলসি কার্যক্রম বন্ধ থাকা ব্যাংকগুলোর কার্যক্রম পুনরায় সচল করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আশ্বাস দেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে এসব ব্যাংকের বোর্ড পুনর্গঠন হয়ে যাবে। এরপর এলসি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে। ব্যবসায়ীদের আরও কয়েকদিন ধৈর্য ধরার পরামর্শ দিয়েছেন গভর্নর।"
এ সময় ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল এখনই বন্ধ না করে বিদ্যমান তিন বিলিয়ন ডলারের ফান্ড চালু রাখার আবেদন করা হয়। গভর্নর বিষয়টি বিবেচনার আশ্বাস দেন।
এরপর বিজিএমইএ'র পক্ষ থেকে তৃতীয় একটি দাবি তুলে ধরা হয়। তারা জানান, গত দুই মাস ধরে দেশে চলমান অস্থিরতায় পোশাক খাত মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রপ্তানির চাকা সচল রাখতে এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তা প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে ৩,০০০ কোটি টাকার একটি বিশেষ ফান্ড (সফট লোন) গঠন করার প্রয়োজনীয়তা জানান তারা। একইসঙ্গে, আগামী এক বছরের মধ্যে সুদসহ এ অর্থ ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ব্যবসায়ী নেতারা।
এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক শিগগিরই কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে।
বৈঠক শেষে বিজিএমইএর সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুল্লাহ হিল রাকিব সাংবাদিকদের বলেন, "বাংলাদেশ ব্যাংক তিন হাজার কোটি টাকার একটি সফট লোন প্যাকেজ চলু করতে সম্মত হয়েছে। এছাড়া, ইডিএফ কার্যক্রম চালু থাকবে। ছয় ব্যাংকের এলসি সমস্যা ও দ্রুত সমাধান করার আশ্বাস দিয়েছেন গভর্নর।"