গত বছরের তুলনায় এবারের সেপ্টেম্বরে বেড়েছে ব্যাংকের আমানত প্রবৃদ্ধি
সেপ্টেম্বরে ব্যাংক আমানতের প্রবৃদ্ধি ৯.৫১%, যা গত বছরের একই মাসের তুলনায় কিছুটা বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরে ব্যাংকগুলোতে মোট আমানত দাঁড়িয়েছে ১৬.২৩ লাখ কোটি টাকা, যেখানে আগস্টে আমানত ছিল ১৬.১৭ লাখ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক মাসে আমানত বেড়েছে প্রায় ৫ হাজার ৪৬৪ কোটি টাকা।
তবে গত জুলাই ও আগস্টের তুলনায় এই প্রবৃদ্ধি কিছুটা কম। ব্যাংকারদের মতে, এর প্রাথমিক কারণ চলমান মুদ্রাস্ফীতি।
অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান এবং ব্র্যাক ব্যাংকের এমডি ও সিইও সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, "ডিপোজিটের ইন্টারেস্ট রেটের ক্যাপ তুলে দিয়ে ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। লেন্ডিং রেট নির্ধারণে বিধিনিষেধ থাকলেও সেটি গত কয়েকমাসে কিছুটা বেড়েছে।
"এসব কারণে ব্যাংকগুলো এখন আমানত সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে গ্রাহকদের বেশি রেট অফার করতে পারছে। বর্তমানে ব্যাংকগুলো মেয়াদী আমানত সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে ৯% এর বেশিও অফার করছে। এর কারণে ডিপোজিট বাড়ছে। তবে সব ক্ষেত্রে ডিপোজিট সমানভাবে বাড়ছে না। গ্রাহকেরা বেশি ইন্টারেস্ট রেটের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের বর্তমান অবস্থাকে বিবেচনায় নিচ্ছে," বলেন তিনি।
মূল্যস্ফীতি বেশি হওয়ার কারণে সেপ্টেম্বরে ব্যাংকগুলোতে আমানতের প্রবৃদ্ধি কিছুটা কম উল্লেখ করে তিনি বলেন, "বর্তমানে মূল্যস্ফীতি প্রায় ১০%, সেখানে আমরা আমানতের ইন্টারেস্ট রেট সেভাবে বাড়াতে পারছি না। ব্যাংকে আমানতের ইন্টারেস্ট রেট মূল্যস্ফীতির তুলনায় কম হলে মানুষ ব্যাংকে টাকা রাখতে কিছুটা কম উৎসাহ বোধ করে।"
এদিকে, আমদানির জন্য লেটার অফ ক্রেডিট (এলসি) খোলা কমে আসা ও ব্যাংকগুলোতে ঋণযোগ্য তহবিল হ্রাসের কারণে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি টানা দশ মাস ধরে মন্থর আছে। সেপ্টেম্বরে এটি ২৩ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে পৌঁছেছে।
সেপ্টেম্বরে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ৯.৬৯%, যা ২০২২ সালের নভেম্বরে ছিল ১৩.৯৭%।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, শেষবার প্রবৃদ্ধি এরচেয়ে কম ছিল ২০২১ সালের অক্টোবরে, সেসময় প্রবৃদ্ধি ছিল ৯.৪৪%।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, "ঋণ এবং আমানত উভয় ক্ষেত্রেই প্রবৃদ্ধি প্রায় একই। বর্তমান প্রেক্ষাপটে এটি অবশ্যই সামগ্রিক ব্যাংকিং খাতের জন্য একটি ভালো সংকেত। আমাদের ঋণের একটি বড় অংশ আমদানি এলসি খোলার মাধ্যমে দেওয়া হয়। ডলার ঘাটতির কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়, ফলে এলসি খোলার পরিমাণ কমেছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়েছে ঋণের প্রবৃদ্ধিতে।"
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংকিং খাতে আমানতের সুদের হার আগস্ট-সেপ্টেম্বর দুই মাসেই ছিল ৪.৫২%।