৫ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে জাপানের ৭১ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ
সরকারি বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) আওতায় পাঁচটি নির্মাণ প্রকল্পে ৮.৩৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে জাপান, বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ৭১ হাজার কোটি টাকা।
বাংলাদেশ-জাপান যৌথ পিপিপি প্ল্যাটফর্মের চতুর্থ বৈঠকে আজ এ বিষয়ে আলোচনা হবে। ঢাকা মহানগরীর চারপাশে আউটার রিংরোড নির্মাণের অংশ হিসেবে দক্ষিণ অংশের কাজ করতে ব্যয় হবে ২.৭০ বিলিয়ন ডলার।
কমলাপুর রেলস্টেশনে মাল্টিমোডাল ট্রান্সপোর্ট হাবের নির্মাণকাজে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী জাপানের কাজিমা করপোরেশন। বিমানবন্দর টার্মিনালের উন্নয়ন, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে মিতসুবিশি করপোরেশন। এ দুই প্রকল্পে বিনিয়োগ আসবে ৫১৫ মিলিয়ন ডলার।
গাবতলী থেকে বসিলা, মোহাম্মদপুর, ঝিগাতলা, সাইন্স ল্যাব, পলাশী, পুলিশ হেডকোয়ার্টার, গোলাপ শাহ মাজার, মতিঝিল, কমলাপুর ও মান্ডা হয়ে চট্টগ্রাম রোড পর্যন্ত মেট্রো রেল লাইন-২ এর প্রকল্পে বিনিয়োগ আসবে ৩.৪৭ বিলিয়ন ডলার।
পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা জানান, জিটুজি ব্যবস্থাপনায় জাপানের বিনিয়োগে এ সব প্রকল্প বাস্তবায়নের বিষয়ে আগেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে সম্ভাব্যতা যাচাই না হওয়ায় প্রকল্পের প্রকৃত ব্যয় এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
সম্ভাব্যতা যাচাই, প্রকল্পের প্রাথমিক ডিজাইনসহ মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু করার আগের ধাপগুলো এগিয়ে নিতে এ সভার আয়োজন করা হচ্ছে বলে জানান তারা।
সভার আলোচ্য সূচীতে থাকা চট্টগ্রাম- কক্সবাজার মহাসড়ক উন্নতিকরণ প্রকল্পের অনুমিত ব্যয় ধার্য করা হয়েছে ১.৬৯ বিলিয়ন ডলার।
সাভারের নবীনগর থেকে দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য চিহ্নিত পাটুরিয়া পর্যন্ত বিদ্যমান সড়কটি পিপিপি'র ভিত্তিতে চার লেনে উন্নীত করতে চায় সরকার। এ প্রকল্পে জাপানের বিনিয়োগ চাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পিপিপি কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা।
তারা আরও জানিয়েছেন, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষনের প্রস্তাব দিয়েছে জাপানের মিতসুবিশি করপোরেশন। সভায় নতুন এই দুই প্রকল্পের বিষয়েও আলোচনা হবে।
এ সভায় বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেবেন মুখ্য সচিব আহমেদ কায়কাউস। আর জাপানের পক্ষে সভায় উপস্থিত থাকবেন একজন ভাইস মিনিস্টার।
পিপিপি অফিস সূত্র জানিয়েছে, ২০১৭ সালে অনুষ্ঠিত পিপিপি কর্তৃপক্ষের বোর্ড অব গভর্নরস এর প্রথম সভায় 'পলিসি ফর ইমপ্লেমেন্টিং পিপিপি প্রজেক্টস থ্রু গভমেন্ট-টু-গভমেন্ট (জিটুজি) পার্টনারশিপ অনুমোদন দেওয়া হয়।
সে বছরই বাংলাদেশ-জাপান যৌথ পিপিপি প্ল্যাটফর্মের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জাপানি বিনিয়োগে বাস্তবায়নের জন্য ১৮টি প্রকল্প চিহ্নিত হয়েছিল।
পিপিপি কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী এবং বাংলাদেশ সরকারের সচিব সুলতানা আফরোজ বলেন, বাংলাদেশের অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগের ঘাটতি মেটাতে সবচেয়ে বড় দ্বিপাক্ষিক সহযোগী দেশ জাপান এগিয়ে আসছে। শুরুর দিকে প্রকল্প বাছাই, প্রক্রিয়াকরণে ধীরগতি, বিনিয়োগকারীদের অনাগ্রহসহ বিভিন্ন কারণে পিপিপি প্রকল্পে গতি পাওয়া যায়নি। তবে বেশ কিছু জটিলতার অবসান হওয়ায় বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ছে।
তিনি আরও বলেন, জাপানের বিনিয়োগের জন্য চিহ্নিত প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন শেষ হলে দেশের পরিবহন ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন হবে।