১ লাখ কোটি ডলার ক্ষতি শীর্ষ ধনীদের

নিউইয়র্ক থেকে প্যারিস, সাও পাওলো থেকে হংকং- বিশ্বের সেরা ধনীদের জন্য সবখানে এখন লোকসানের পাহাড়ের উচ্চতাটাই বাড়ছে। করোনা ভাইরাসের এমন প্রভাব বিস্মিত করেছে অনেককেই। কিন্তু বিস্মিত হলেও তাতে বৃহৎ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো বাজারের দরপতন থেকে বাঁচতে পারছে না।
গত বৃহস্পতিবার বিশ্বের শীর্ষ ৫০০ ধনী আরও ৩৩ কোটি ডলার সম্পদমূল্য হারান। লোকসানে শীর্ষে ছিলেন ফরাসি ধনকুবের এবং বিখ্যাত ফ্যাশন ব্র্যান্ড লুই ভিটোর মালিক বার্নার্ড আর্নল্ট। গত ১০ মার্চ পর্যন্ত হিসাবে দেখা গেছে, বাজার ধ্বসের জেরে ইউরোপের এই শীর্ষ ধনী মোট ৪৪০ কোটি ডলার লোকসান দেন। পরের দুই দিনও সেই ধারা অব্যাহত থাকে।
করোনা চীনের পর এখন থাবা বাড়িয়েছে ইউরোপ ও আমেরিকা মহাদেশের উন্নত দেশগুলোর দিকে। এই অবস্থায় বাজারঝুঁকি খুবই বেশি- এমন বিবেচনায় অনেক বিনিয়োগ তহবিলও তাদের পুঁজি খাটানোর ক্ষেত্রে লাগাম টেনে ধরেছে। দুর্বল চাহিদা, সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়া এবং উৎপাদন কেন্দ্রগুলো বন্ধ থাকার প্রেক্ষিতে বিনিয়োগকারীদের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার থেকে আগ্রহ হারানো খুবই যৌক্তিক।

গত আট বছরে ব্লুমবার্গের বিলিয়নিয়ার ইনডেক্সে থাকা সেরা ধনীদের সম্পদের এত বড় দরপতন আর দেখা যায়নি। ইনডেক্সটি অনুসারে গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত শত কোটি ডলার বা তার বেশি সম্পদের মালিকরা চলতি বছর সর্বমোট ৯৫ হাজার কোটি ডলার সম্পদমূল্য হারিয়েছেন।
চলতি সপ্তাহের এই ধ্বসকে এক দশক ধরে ফুলে ফেঁপে ওঠা বিশ্ব পুঁজিবাজার পরিস্থিতির পতনের নির্দেশক হিসেবে দেখছেন অনেক বিশেষজ্ঞ। আলোচিত সময়ে মুদ্রানীতির শিথিলতা এবং কর রেয়াতের মতো অন্যান্য প্রণোদনার সুবাদে বিশ্বজুড়ে পুঁজিবাজার শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি অর্জন করে। তবে করোনা ভাইরাস সেই ধারায় বিরতি আনতে বাধ্য করছে। খবর ব্লুমবার্গের।
সেরা ধনীরা বড় বড় প্রতিষ্ঠানের মালিক হওয়ায় তাদের ক্ষতিটাও অন্যদের চেয়ে বেশি। মাত্র দুই মাস আগেও শীর্ষ ৫০০ ধনীর মোট সম্পদমূল্য ছিল প্রায় ৬ লাখ ১০ হাজার কোটি ডলার। সেই সম্পদমূল্যই গত চারদিনে পতনের শিকার হয়েছে। এর ফলে শীর্ষ ৫০০ ধনী চলতি বছর মোট সম্পদের ১৬ শতাংশ মূল্য হারালেন।
প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস বিশ্ব অর্থনীতিকে আরও অচল করে দেবে- এই আশঙ্কা প্রবল হয় শীর্ষ অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্রে এটির বিস্তারের পর থেকেই। তখন থেকে পুঁজি এবং জ্বালানি তেলের বাজার নিম্নমুখী প্রবণতার ঘূর্ণিচক্রে আবদ্ধ হয়। এই অবস্থায় সম্পদমূল্য হারানো ধনীদের মধ্যে সকল খাতের ব্যবসায়ী এবং উদ্যোক্তারা রয়েছেন।