সরকার তেল-চিনির দাম নির্ধারণ করে দিলেও বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামেই
সরকার তেল-চিনির দাম বেঁধে দিলেও বাজারে বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও এমন পরিস্থিতিতে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ডাল, আটা, মুরগিতে কেজিপ্রতি দাম বেড়েছে ১০-২০ টাকা।
গত ৫ সেপ্টেম্বর প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১২৯ টাকা নির্ধারণ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। গত ৯ সেপ্টেম্বর প্রতিকেজি খোলা চিনির মূল্য ৭৪ টাকা ও প্যাকেটজাত চিনি ৭৫ টাকা ঠিক করে দেয় সরকার।
শুক্রবার কারওয়ান বাজারসহ রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি প্যাকেটজাত সাদা চিনি বিক্রি হচ্ছে ৮৫ থেকে ৮৬ টাকা। আর লাল চিনি বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা। খোলা সাদা চিনি ৮০ টাকা ও লাল চিনি ৯০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের লাল আখের চিনির প্যাকেটের গায়ে দাম লেখা ৭৫ টাকা। এ চিনি দোকানে বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা। মগবাজার আমবাগান এলাকার দোকানদার মো. খালেক বলেন, এ লাল চিনি প্যাকেট খুলে বিক্রি করলেও ৯০ টাকা বিক্রি করা যাবে।
১৫ দিনের ব্যবধানে সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে লিটারে ১০ থেকে ১২ টাকা। বাজার ঘুরে দেখা যায়, খোলা সয়াবিন তেল প্রতিকেজি ১৪২ টাকা লিটার আর বোতলজাত তেল ১৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। বিভিন্ন ব্রান্ডের ৫ লিটারের বোতলজাত তেল ৭১০ থেকে ৭৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ান বাজারের তুহিন জেনারেল স্টোরের দোকানদার মো. সাহদাত বলেন, ১৫ দিন আগে খোলা ময়দার কেজি ৩৮ টাকা ছিল এখন হয়েছে ৪৫ টাকা, আর বিভিন্ন ব্যান্ডের প্যাকেট ময়দা ২ কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা যেটা ছিল ৮৫ টাকা। খোলা আটা ৩০ টাকা ছিল, এখন ৩৬ থেকে ৩৮ টাকা। আর ২ কেজির প্যাকেট আটা বিক্রি হচ্ছে ৮১ টাকা, যেটা ৭১ টাকা ছিল।
ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিপ্রতি বেড়েছে ২০ টাকা
লকডাউন প্রত্যাহারের পর থেকেই দেশের মুরগির দাম বাড়তে শুরু করে। সেটা আর কমছে না। গত ১৫ দিনের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ টাকা।
কারওয়ান বাজারের বিক্রেতা আমজাদ হোসেন জানান, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম তাই দাম বেড়েছে। ১৫ দিন আগে ১৪০ টাকা ছিল, এখন প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকায়। সোনালী মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়, যা ছিল ২৫০ টাকা।
ফার্মের মুরগির ডিমের দামও কয়েক সপ্তাহ ধরে বাড়তি। এক মাসের ব্যবধানে প্রতি ডজনে ১৫-২০ টাকা বেড়ে এখন ১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ছোট দানার মশুর ডাল এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ১৫ দিনের ব্যবধানে কনডেন্সড মিল্কের দাম ২০ থেকে ২৫ টাকা বেড়ে হয়েছে ৮০ টাকা।
মগবাজার এলাকার চা বিক্রেতা মোহম্মদ সিদ্দিকের প্রতিদিন ৮ থেকে ১০টি কনডেন্সড মিল্ক শেষ হয়। তিনি বলেন, চিনির দামও বাড়তি, আবার কনডেন্সড মিল্কের দামও বেড়েছে। তাই দুধ চা প্রতি কাপ ৫ টাকা থেকে ৭ টাকা করেছি। আর রং চা ৬ টাকা।
প্রায় সব ধরনের সবজির দাম সপ্তাহ ব্যবধানে কেজিতে ১৫-২০ টাকা বেড়েছে। বেগুন, করলা, ঝিঙে, ঢ্যাঁড়স, ধুন্দল ৫৫-৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। আর সব মাছের দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়েছে বলে জানান কারওয়ান কাজারের এক বিক্রেতা।
সবজি, ভোজ্য তেল, চিনি, আটা, ডাল, মুরগি-ডিমের দাম বেড়ে যাওয়ায় হিমশিম খেতে হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষের।
কারওয়ান বাজারে পণ্য কিনতে আসা মানিক সিকদার বলেন, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বেড়েই চলছে; কিন্তু আমাদের আয় তো আর বাড়ছে না। এভাবে বাড়তে থাকলে সংসার কীভাবে চালাবো!