রেমিট্যান্সে বড় ধাক্কা, কমলো ২০ শতাংশ

কোভিড-১৯ পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরার সঙ্গে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের প্রবাহ কমেছে প্রায় ২০ শতাংশ।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে ১ দশমিক ৭৩ বিলিয়ন ডলার। আগের বছরের সেপ্টম্বরে এর পরিমাণ ছিল ২ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার। যা শতাংশ হিসেবে কমেছে ১৯.৭৫ শতাংশ কম।
এছাড়া আগস্টে রেমিট্যান্স এসেছে ১ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলার। সে হিসেবে গত মাসের তুলনায় সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স কম এসেছে ৪.৬৩ শতাংশ।
রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
চলতি (২০২১-২২) অর্থবছরে জুলাই থেকে সেপ্টম্বর পর্যন্ত প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে ৫ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৬ দশমিক ৭১ বিলিয়ন ডলার। তিন মাসের হিসেবে রেমিট্যান্স কমেছে ১৯.৫২%।
বরাবরের মতো সেপ্টেম্বরে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। ব্যাংকটির মাধ্যমে রেমিট্যান্স আহরিত হয়েছে ৪৬ কোটি মার্কিন ডলার। এছাড়া ডাচ বাংলা ব্যাংকে এসেছে ২০ কোটি ৩৬ লাখ ডলার রেমিট্যান্স। অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে ১৪ কোটি ৮৮ লাখ ডলার, সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ কোটি ১২ লাখ ডলার এবং জনতার মাধ্যমে ৬ কোটি ডলার রেমিট্যান্স আহরিত হয়েছে।
২০২০-২১ অর্থবছরের জুলাই মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ২ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি। করোনা মহামারি স্বত্বেও গত বছর রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল এ যাবতকালের সর্বোচ্চ ২৪ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার।
এদিকে প্রবাসাীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের গতি কমে আসায় দেশের বাজারে ডলারের চাহিদা ও দাম বাড়ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকগুলোর চাহিদার আলোকে ডলার বিক্রি করলেও ডলারের দাম কমছে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর কাছে ৭৮৬ মিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, উল্লিখিত ব্যাংকগুলোতে ডলারের বিনিময় হার ছিল ৮৮ টাকা ৫০ পয়সা। তবে অধিকাংশ ব্যাংক ডলার বিক্রি করেছে ৮৭ টাকা ৮৮ পয়সায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, "বাংলাদেশ ব্যাংকে ডলারের পর্যাপ্ত রিজার্ভ রয়েছে। ব্যাংকগুলো তাদের চাহিদা অনুযায়ী আমাদের কাছ থেকে ডলার কিনতে পারবে।"
এ বিষয়ে সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, গত বছরের সারাদেশে কোভিডের প্রভাবে দেশে স্থবির অবস্থা বিরাজ করছিল। তখন প্রবাসীরা তাদের জমানো টাকা পরিবারের কাছে পাঠিয়েছে। এতে রেমিট্যান্সের প্রবাহ বেশি ছিল।
'ট্রাভেল এবং ট্রেড স্বাভাবিক অবস্থায় আসায় রেমিট্যান্সের প্রবাহটা কমছে। লকডাউনের সময় রেমিট্যান্স ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমেই আসতো। এখন ইনফরমাললি তথা হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশ থেকে টাকা আসায় ব্যাংকিং চ্যানেল রেমিট্যান্সের প্রবাহ কমছে', বলেও জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, "এখন বিদেশে প্রবাসীরা যাওয়ার পরিমাণ অনেক কমেছে। আগে বছরে প্রায় ৭ লাখ প্রবাসী যেতে এ বছরে সাড়ে তিন লাখের কম যাবে বলে পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে। এর কারণেও রেমিট্যান্স কম আসছে।"
- প্রতিবেদনটি ইংরেজিতে পড়ুন: Remittance inflow drops by 20% in Sept