রপ্তানি খাতের জন্য প্রি-শিপমেন্ট ক্রেডিটের সুদহার এক শতাংশ কমল
কোভিডের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানকে 'প্রি-শিপমেন্ট রপ্তানি ঋণ সহায়তা' প্রদানের লক্ষ্যে গঠিত ৫ হাজার কোটি টাকার পুন:অর্থায়ন তহবিল থেকে নেয়া ঋণের গ্রাহক পর্যায়ে সুদহার ১ শতাংশ কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছে।
সোমবার (২৬ এপ্রিল) এ সংক্রান্ত সার্কুলার ইস্যু করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকিং রেগুলেশন এন্ড পলিসি ডিপার্টমেন্ট (বিআরপিডি)। এই নির্দেশ অবিলম্বে কার্যকর করা হবে বলে সার্কুলারে উল্লেখ করা হয়।
সুদহার হ্রাস করা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে, তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) নবনির্বাচিত সভাপতি ফারুক হাসান টিবিএসকে বলেন, 'রপ্তানিকারকদের জন্য এই ঋণ অনেকটা ইন্সুরেন্স কাভারেজ এর মত সুবিধা দেয়। কোভিডের কারণে ব্যবসা খারাপ যাওয়ায় অনেক গার্মেন্টস মালিকই ৬ শতাংশ সুদে এই ঋণ নিতে চাইছিল না'।
এখন এটি ৫ শতাংশ করায় ঋণের খরচ কিছুটা কমে গেল। এই হার আরো কমাতে পারলে ভালো হত উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'বিজিএমই সদস্যরা এখন এই ঋণ নিতে আগের চেয়ে আগ্রহী হবেন'।
বাংলাদেশ নিটওয়্যার প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিকেএমইএ) প্রথম সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, 'কোভিডের এই সময়ে রপ্তানি হুমকির মুখে আছে। এমন পরিস্থিতিতে এই সুদহার কমানোয় রপ্তানিকারকদের কিছুটা হলেও সুবিধা দিবে'। তাছাড়া ঋণের পরিমাণ বাড়ানোরও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
গেল বছরের ১৩ এপ্রিল এই পুন:অর্থায়ন তহবিল গঠন করা হয়েছিল। এই তহবিলের মেয়াদ ৩ বছর। তহবিল থেকে ঋণ নিয়ে ব্যাংকগুলো রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দিবে।
এক্ষেত্রে নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী গ্রাহকের কাছ থেকে ঋণের সুদ নেয়া হবে ৫ শতাংশ আর ব্যাংকগুলো ৩ শতাংশ মুনাফা হিসেবে নিজের কাছে রেখে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে পরিশোধ করবে ২ শতাংশ।
নির্দেশনায় বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের শিডিউল অব চার্জেস সংক্রান্ত বিদ্যমান নীতিমালার বাইরে গ্রাহকের নিকট থেকে কোন ধরনের চার্জ বা ফি আদায় করা যাবে না।
এই স্কিমে অংশগ্রহণকারী ব্যাংক প্রতিটি নিশ্চিত রপ্তানি আদেশ এর মূল্য হতে ব্যাক টু ব্যাক এলসির মূল্য, এক্সেসরিজ এর জন্য অর্থায়ন বাবদ অর্থ এবং এ সংক্রান্ত অন্যান্য অর্থায়ন বাবদ অর্থ বাদ দিয়ে অবশিষ্ট মূল্যের উপর ব্যাংক গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে প্রি-শিপমেন্ট ক্রেডিট প্রদান করতে পারবে।
তবে এক্ষেত্রে পণ্য জাহাজীকরণের পর যে মূল্য ধরা হয়েছে (কমার্শিয়াল ইনভয়েস ভ্যালু) সেই মূল্যের ১০ শতাংশের বেশি ঋণ প্রদান করা যাবে না।
একজন গ্রাহক এই তহবিল থেকে এক বছরের জন্য ঋণ সুবিধা পাবে। তবে ব্যাংকের কাছ থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পণ্য জাহাজীকরণের তারিখ হতে ১২০ দিন পর ঋণের টাকা সুদসহ নিয়ে নেবে। যদি কোন কারণে বিলম্ব হয় সেক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোকে ঋণ পরিশোধে অতিরিক্ত ৬০ দিন বা দুই মাস সময় দেয়া হবে।