ব্যবসা বৃদ্ধিতে সীমান্ত পেরিয়ে বিনিয়োগে যেতে হবে, কিন্তু তা সহজ নয়
স্বাগতিক দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং মহামারির চলমান প্রবণতায় বিদেশে বিনিয়োগ থেকে বাংলাদেশী বিনিয়োগকারীদের লাভবান হওয়ার সম্ভাবনাকে বাধাগ্রস্ত করছে। এমতাবস্থায় কেউ কেউ বিনিয়োগ সরিয়ে নিচ্ছেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রপ্তানি পণ্য বৈচিত্র্যকরণ এবং বিশ্বের নানা দেশের প্রদত্ত শুল্কমুক্ত সুবিধা পেতে বিদেশে বিনিয়োগ করা বাঞ্ছনীয়; এতে স্বল্প-আয়ের দেশ থেকে উত্তরণের সময় দেখা দেওয়া আসন্ন চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় সক্ষম হবে বাংলাদেশ।
এদিক থেকে বিদেশের বাজারে পুঁজি লগ্নীতে দেশের কিছু বিনিয়োগকারী ভালো পারফরম্যান্স অর্জন করলেও, অন্যরা উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন- কিন্তু মহামারিতে তাদের উদ্যোগ বাধাগ্রস্ত হয়েছে। তবে আগামী দিনে ঘুরে দাঁড়ানোর আশা করছেন তারা।
তারা বলছেন, মিয়ানমার ও ইথিওপিয়ার মতো কিছু বিনিয়োগের গন্তব্যস্থলে রাজনৈতিক অস্থিরতার শিকার হয়েছেন কিছু বাংলাদেশী বিনিয়োগকারী।
এ বাস্তবতায় বিনিয়োগকারী ও বিশ্লেষকরা বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বিদেশে বিনিয়োগের বিদ্যমান নীতিমালা আরও সহজ করার আহবান জানিয়েছেন। এর ফলে উদ্যোক্তারা এলডিসি গ্রাজুয়েশনের পর অন্যান্য স্বল্প আয়ের দেশের দেওয়া সুবিধা কাজে লাগিয়ে দূরদর্শী বিনিয়োগের মাধ্যমে শুল্কহীন রপ্তানির সুবিধা পাবেন। বিশেষজ্ঞরা আরও পরামর্শ দিচ্ছেন যে, বিশ্ব বাণিজ্যের সুবিধা পেতে হলে সম্ভাব্য বিনিয়োগের ক্ষেত্র চিহ্নিতকরণে ব্যবসায়ীদের আগে থেকেই ব্যাপক গবেষণা করা উচিত।
আগে থেকে সতর্ক না হয়ে ভিন দেশে বিনিয়োগ করে ফেলায় অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এখন তাদের বিনিয়োগ টিকিয়ে রাখা নিয়েই সমস্যায় পড়েছে। অনেকে বাধ্য হয়েই বিনিয়োগ প্রত্যাহার করেছে, সে তুলনায় সামান্য কিছু উদ্যোগ ভালো পারফর্ম করছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
২০১৩ সালে প্রথম বাংলাদেশি কোম্পানি হিসেবে এমজেএল বাংলাদেশ লিমিটেড মিয়ানমার ভিত্তিক একটি প্রেট্রোলিয়াম কোম্পানির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগের আওতায় ৫লাখ ১০ হাজার ডলার প্রতিবেশী দেশটিতে বিনিয়োগ করে। প্রাথমিকভাবে দেশীয় কোম্পানিটি ভালো মুনাফারও মুখ দেখে।
তবে দেশটির রাজনৈতিক সমস্যা, ব্যবসায়ীক নীতি পরিবর্তন ও স্বচ্ছতার অভাবের কারণে কয়েক বছর পরই লোকসানে পরে এমজেএল। বেশ বড় লোকসান দিয়ে ২০২০ সালে ব্যবসা গুটিয়ে ফেরত আসে তারা।
এনিয়ে ইস্ট কোস্ট গ্রুপের চেয়ারপার্সন এবং এমজেএল বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আজম জে চৌধুরী বলেছেন, দেশে তালিকাভুক্ত কোম্পানি হিসাবে সঠিক সময়ে আর্থিক বিবরণী প্রকাশ আমাদের জন্য বাধ্যতামূলক। মায়ানমারের সঙ্গে আমাদের আর্থিক হিসাব বছরের একটি বড় গড়মিল রয়েছে। জান্তা নির্ভর হওয়ার কারণে ওদের নীতিমালা ব্যবসা বান্ধব নয়। ওদের মুদ্রা বিনিময় হার খুব বেশি উঠানামা করার কারণে ব্যবসা করা কঠিন হয়ে পড়েছিল।
তিনি বলেন, "মিয়ারনমার থেকে বিনিয়োগ সরিয়ে নিয়ে সিঙ্গাপুরে ব্যবসা শুরুর পর ওখানে ভালো সাড়া পেয়েছি। কোম্পানিকে বৈশ্বিক রূপ দেয়ার পাশাপাশি ১০ শতাংশের বেশি রিটার্ন পাওয়া যাচ্ছে।"
কারখানা স্থাপনে জমির কম মূল্য ও সস্তা শ্রমের উপস্থিতি থাকায় যুক্তরাষ্ট্রে শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা নিতে ইথিওপিয়ার তাইগ্রে অঞ্চলে ২০১৮ সালে একটি গার্মেন্টস কারখানা চালু করে ডিবিএল গ্রুপ। এই কারখানার আর্থিক সমর্থনদাতা ছিল ইথিওপিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ও সুইডিশ ফ্যাশন ব্র্যান্ড এইচঅ্যান্ডএম।
দেশটিতে শুরু হওয়া গৃহবিববাদের কারণে ২০২০ সালে কারখানা বন্ধ করে বিশেষ ব্যবস্থায় শ্রমিকদের দেশে ফিনিয়ে আনে প্রতিষ্ঠানটি। গৃহযুদ্ধ শেষ না হওয়ায় কারখানার পুনরায় চালু হওয়ার বিষয়টি এখনও অনিশ্চিত।
নিজেদের কোম্পানিগুলোকে বহুজাতিক ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠার বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, এতে তাদের আত্মবিশ্বাসও বাড়বে।
তবে যে দেশে তাদের বিনিয়োগ করার আগ্রহ রয়েছে- সেখানে সহজে ব্যবসা করার সুবিধা, বিনিয়োগ পরিস্থিতি, বাজার প্রবেশ সুবিধা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার মতো বিষয়গুলি গভীর বিশ্লেষণ করে তারপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত বলে পরামর্শ দেন তিনি।
বিশিষ্ট এ অর্থনীতিবিদ আরও বলেন, বহির্মুখী বিনিয়োগ নিয়ে সরকারের একটি আলাদা বিভাগ চালু করাসহ বিদেশে বিনিয়োগের পরিপূর্ণ নীতিমালা প্রণয়ন করা উচিত। বর্তমানে কোনো ধরনের সুনির্দিষ্ট নীতিমালা ছাড়া এ ধরনের বিনিয়োগকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি কমিটি দ্বারা কেস-টু-কেস ভিত্তিতে অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।
তাঁর পরামর্শ হলো, কোন স্থানের কর আইন ও অন্যান্য বিধিমালা বিশ্লেষণ করে বিদেশী বিনিয়োগ বিভাগ বিনিয়োগের উৎস দেশ বা অঞ্চল নির্ধারণ করবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে ওই দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্কও বিবেচনা করার পরামর্শ দেন তিনি- এতে বিনিয়োগ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তার ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা যাবে।
এনিয়ে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট রিজওয়ান রহমান বলেছেন, "বিদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ভারতীয় মডেল অনুকরণ করতে পারে।"
অন্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ক্রয় করা এবং অন্য কোম্পানির সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার মাধ্যমে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানগুলো বিনিয়োগ করতে পারে। এর ফলে ভারতীয় কোম্পানিগুলো সরাসরি নতুন নতুন বাজার ও আরো উন্নত প্রযুক্তিগত সুবিধা পায়। যার ফলে তারা ভোক্তা সংখ্যা বাড়িয়ে বৈশ্বিকরূপ লাভ করতে পারে।
মেঘনা গ্রুপের অপারেশন্স ডিরেক্টর মো. লুৎফুল বারী বলেন, "এলডিসি গ্রাজুয়েশনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারের উচিত বিদেশে বিনিয়োগকে প্রস্তুতির অংশ হিসাবে রাখা।"
শুল্কমুক্ত বাজার প্রবেশের সুবিধা ছাড়া কিছু খাত তাদের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা হারাবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ভালো করেছেন যারা:
২০০৭ সালে ভারতের একটি শীর্ষস্থানীয় গার্মেন্টস প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে জর্ডানে বিনিয়োগ করে বাংলাদেশি পোশাক রপ্তানিকারক- স্প্যারো গ্রুপ।
স্প্যারো গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শোভন ইসলাম বলেন, "জর্ডান রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে মার্কিন বাজারের জন্য কিছু উচ্চ মূল্যের পোশাক উৎপাদনের জন্য আমরা কারখানাটি প্রতিষ্ঠা করেছি।"
তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে পোশাকের দোকানগুলি খুলে যাওয়ায় জর্ডানে তাদের মহামারি-প্রভাবিত কারখানা এখন স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বর্তমানে প্রায় ১৬০০ জন বাংলাদেশী এবং ৫০০ জন স্থানীয় নাগরিক কারখানাটিতে কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, আমাদের বার্ষিক লেনদেন ছিল ৭ কোটি ডলার।
সার্ভিসইঞ্জিনবিপিও বা সেবপো নামের একটি সংস্থা বিশ্বের বৃহৎ সব বিজ্ঞাপনী প্রতিষ্ঠান, গণমাধ্যম ও প্রযুক্তি কোম্পানির শীর্ষস্থানীয় আউটসোর্সিং পার্টনার। মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি নির্ভর হওয়ায় এ প্রতিষ্ঠানের ব্যবসাও মহামারির মন্দা পরিস্থিতি থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর পর আরো চাঙ্গা হয়েছে।
তবে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন গ্রুপের অঙ্গঃপ্রতিষ্ঠান সেবপো।
আবদুল মোনেম গ্রুপের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর এ এস এম মহিউদ্দিন মোনেম বলেছেন, এখন মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের দেশগুলোতে ক্লায়েন্ট বেজ বাড়াতে বিনিয়োগ করছে সেবপো।
সেবপো প্রদত্ত সেবার বিশেষায়িত দিকগুলো হচ্ছে; অ্যাড অপারেশন্স, ডেটা সলিউশন্স, মিডিয়া প্ল্যানিং অ্যান্ড কোয়ালিটি অ্যাসিউরেন্স ইত্যাদি। সংস্থাটি সংশ্লিষ্ট শিল্পের দক্ষতা এবং পরিচালনা পরামর্শ দেয় যাতে করে গ্রাহক প্রতিষ্ঠান পরিমাপ, উদ্ভাবন এবং ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
দেশের বেসরকারি খাতের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় সংগঠন আকিজ গ্রুপ, রবিন রিসোর্সেস নামে একটি মালয়েশিয়ার কোম্পানিকে ২ কোটি ডলারে অধিগ্রহণ করেছে। কোম্পানিটি এ বিনিয়োগ থেকে ভাল রিটার্ন পেয়েছে।
আকিজ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস কে বশিরউদ্দিন বলেন, তারা একটি পুরনো কোম্পানি অধিগ্রহণ করায় ব্যবসা পরিচালনায় নতুন কোনো চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হননি। ইক্যুইটি বিনিয়োগে রিটার্ন সন্তোষজনক। বর্তমানে, পাঁচ শতাধিকের বেশি লোক এতে কাজ করছে।
ভালো করতে আশাবাদী যারা:
বাংলাদেশের ওষুধ বিশ্ববাজারে পৌছে দিতে বিদেশে বিনিয়োগ করে দেশীয় ওষুধের সবচেয়ে বড় জায়ান্ট স্কয়ার।
২০১৭ সালে কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে ১৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত কারখানা স্থাপন শুরু করে কোম্পানিটি। এক বছর আগেরই সব অবকাঠামো শেষ করেছে তারা। তবে করোনার কারণে উৎপাদন আটকে গেছে তাদেরও।
কোম্পানিটির কর্মকর্তারা বলছেন, ২০২০ সালেই কারখানায় উৎপাদন শুরু করার লক্ষ্যমাত্রা ছিল। করোনার কারণে কার্যক্রম বন্ধ থাকায় সঠিক সমযে পারেনি তারা। তবে সব কাজ শেষ করে এখন ওই দেশের সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে শিগগিরই উৎপাদন শুরু হবে।
এ কারখানায় কারখানায় ওষুধ উৎপাদন শুরুর মাধ্যমে কেনিয়াসহ পূর্ব আফ্রিকার ছয়টি দেশের ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার বা সাড়ে ২৫ হাজার কোটি টাকার ওষুধের বাজার ধরতে চায় তারা।
একই ভাবে আমেরিকার বিশাল ওষুধের বাজার ধরার লক্ষ্যে ২০১৫ সালে ৪০২ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে বাংলাদেশের এসিআই গ্রুপ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনের (এফডিএ) শর্ত মেনে অটেোমেটেড কারখানা স্থাপনের কাজ দুই বছর আগে শেষ করে তারা। তবে এখনো উৎপাদনে যেতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি।
এসিআই গ্রুপের একজন কর্মকর্তা বলেন, সব যন্ত্রপাতি স্থাপনের পর ২০২০ সালের জুন মাসে এফডিএ-র প্রতিনিধি দলের সর্বশেষ কারখানা পরিদর্শনের কথা ছিল। করোনার কারণে তারা আর পরিদর্শনে আসেননি। ফলে উৎপাদন পিছিয়ে যায়।
কেনিয়ায় ইস্পাতখাতে বিনিয়োগের জন্য বিএসআরএমকে ২০১৬ অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। প্রতিষ্ঠানটিকে শর্ত সাপেক্ষে রপ্তানি প্রত্যাবাসন কোটা (ইআরকিউ) থেকে ৪৬ লাখ ডলার বিনিয়োগের অনুমোদন দেওয়া হয়।
বিনিয়োগের টাকায় যৌথ মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত কেনিয়া ইস্ট আফ্রিকা স্টিল লিমিটেডের শেয়ার কিনে উৎপাদনে যাওয়ার কথা ছিল বিএসআরএমের। আফ্রিকার বাজার ধরতে প্রাথমিকভাবে বছরে ৫ লাখ টন এমএস রড উৎপাদনের লক্ষ্যও নির্ধারণ করে। তবে অনুমোদনের ৫ বছর পরও কারখানা স্থাপন শুরু করতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি।
এনিয়ে গ্রুপ সিএফও এবং বিএসআরএম কোম্পানি সেক্রেটারি প্রকাশ রঞ্জন কর দ্য বিজনেস স্টান্ডার্ডকে বলেন, দেশটিতে জমি কিনতেই বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। ওই দেশের নিয়ম কানুনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সব কাজ সমাধান করা বেশ কঠিন।
করোনার কারণে প্রক্রিয়াটি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এভাবে এগোলে কারখানা স্থাপন করে উৎপাদনে যেতে কমপক্ষে আরো তিন বছর সময় লাগবে, বলেও যোগ করেন তিনি।
বিনিয়োগের অনুমতি পেয়েও যারা বিনিয়োগ করেননি:
বাংলাদেশ থেকে বিদেশে বিনিয়োগের অনুমোদন পাওয়া অনেকটা সোনার হরিণ হাতে পাওয়ার মত। আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় দেরীতে অনুমোদন পাওয়ার পর অনেকে বিনিয়োগ করতে পারেনি বা বিনিয়োগ গন্তব্য দেশের নীতি আর বিনিয়োগ সয়হায়ক থাকেনি।
দেশের ফার্মাসিটিক্যাল খাতের অন্যতম প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মাসিটিক্যালস লিমিটেড শ্রীলংকায় বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে আবেদন করে। আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রিতা শেষে অনুমোদন ফেলেও প্রতিষ্ঠানটি শ্রীলংকায় বিনিয়োগের সুযোগ হারায়। কারণ ততদিনে দেশটি এই খাতে বিদেশী বিনিয়োগের সুযোগ বন্ধ করে দেয়। সম্প্রতি এক ভার্চুয়াল আলোচনায় প্রধানমন্ত্রীর বেসকারি খাত বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ক্ষোভের সঙ্গে এ তথ্য জানান।
এর আগে ২০১৪ সালে দেশের বাইরে বিনিয়োগের অনুমতি পায় ওষুধ খাতের ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস।
প্রতিষ্ঠানটির প্রাথমিকভাবে এস্তোনিয়াতে একটি যৌথ বিনিয়োগকারী কোম্পানি গঠনের কথা ছিল। তবে বাংলাদেশ সরকারের কঠিন শর্তারোপের সরকারের কারণে এখনও তা কাগুজে অনুমোদনেই রয়েছে।
ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল মুক্তাদীর বলেন, বিদেশে বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ২০-২২টি শর্ত দিয়েছে। এসব শর্ত মেনে বিনিয়োগ করা সম্ভব নয়।