এপ্রিলের ১৫ দিনেই রেমিট্যান্স আয় ১.১৫ বিলিয়ন ডলার
কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ এর মাঝেই এপ্রিলের ১৫ দিনে গেল বছরের পুরো এপ্রিল মাসের চেয়েও বেশি রেমিট্যান্স আয় এসেছে। গেল বছরের এপ্রিলে প্রবাসীরা যেখানে ১.০৯ বিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছিলেন সেখানে চলতি এপ্রিল মাসের ১৫ দিনেই পাঠিয়েছেন ১.১৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি রেমিট্যান্স।
এর মধ্যে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৮৪৭ মিলিয়ন ডলার, সরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে প্রায় ৩০২ মিলিয়ন ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৪.২৫ মিলিয়ন ডলার।
উল্লেখ্য, করোনার মাঝেও চলতি অর্থবছরের শুরুতে রেমিট্যান্সের যে উচ্চ প্রবৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে, পরবর্তী মাসগুলোতে সেটি কমতে থাকলেও গত মার্চ মাসেই তা আবারো ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠে। মার্চ শেষে রেমিট্যান্স আয় হয় ১.৯২ বিলিয়ন ডলার।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাধারণত রমজান ও ঈদকে সামনে রেখে বরাবরই প্রবাসীরা অন্য মাসের তুলনায় একটু বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়ে থাকেন। এর সাথে বর্তমানে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ যুক্ত হওয়ায় রেমিট্যান্স প্রবাহ অনেক বেড়েছে।
এপ্রিলের ১৫ দিনে ইসলামী, অগ্রণী ও ডাচ-বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে প্রায় অর্ধেক রেমিট্যান্স এসেছে। ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠানো রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ৩৩৪ মিলিয়ন ডলার, অগ্রণী ব্যাংকের ১৩০ মিলিয়ন ডলার এবং ডাচ-বাংলার ১২০ মিলিয়ন ডলার।
রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে ইসলামী ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) মোশাররফ হোসেন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'রমজান ও ঈদকে সমানে রেখে পরিবারের খরচ মোটানোর জন্য বাড়তি অর্থ পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা'।
অন্যদিকে, করোনার ফলে চিকিৎসা ব্যয় মেটানোর জন্যও বাড়তি অর্থ পাঠাচ্ছেন অনেকে। এছাড়া বিশ্বের অনেক দেশেই কোভিড এর দ্বিতীয় ঢেউ চলমান থাকায় অনেক প্রবাসী অনিশ্চয়তায় আছেন, তাদের একটি অংশ হাতে থাকা সঞ্চয় পাঠিয়ে দিচ্ছেন।
এর বাইরে সরকার ঘোষিত ২ শতাংশ প্রণোদনার পাশাপাশি অনেক ব্যাংক বাড়তি এক শতাংশ করেও প্রণোদনা দিচ্ছে। ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট আউটলেট একাউন্টে রেমিট্যান্স পাঠালে বাড়তি এক শতাংশ প্রণোদনা দেয়া হয়।
এর ফলে ১ লাখ টাকায় যেখানে ২ হাজার টাকা প্রণোদনা পাওয়া যায় সেখানে এজেন্ট আউলেটে আরো বাড়তি এক হাজার টাকা যোগ হয়ে মোট তিন হাজার টাকা পাওয়া যাচ্ছে। অতিরিক্ত প্রণোদনার ফলেও অনেক প্রবাসী আগের চেয়ে বেশি রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন বলে মনে করেন এই ব্যাংকার।
রেমিট্যান্স প্রবাহ নিয়ে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সাম্প্রতিক এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে কোভিডের ফলে স্বাভাবিক যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হওযায় অবৈধ পথে আসা রেমিট্যান্স প্রায় পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। তাই আগের তুলনায় অনেক বেশি রেমিট্যান্স বৈধ পথে আসছে, সরকারি হিসাবে তা যোগ হয়ে পরিমাণ বেশি দেখাচ্ছে। এর পাশাপাশি ২ শতাংশ প্রণোদনাও রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে ভূমিকা রেখেছে।