এক সফটওয়্যারে মদশূন্য দেশ!
দেশে মদের বাজারে বন্ডেড ওয়্যারহাউজগুলো মূলত কূটনীতিকদের জন্য শুল্কমুক্ত অ্যালকোহল আমদানি করে থাকে। তবে এই আমদানি যে প্রায়শই কূটনৈতিক পাসবুকের অপব্যবহারের মাধ্যমে অবৈধভাবে হয়ে থাকে, তা কারও অজানা নয়।
অবশেষে, চলতি বছরের ২ জুলাই থেকে মদের ব্যবসা ডিজিটালাইজ করার মাধ্যমে এই বেআইনি ঘটনা বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। কিন্তু, যথারীতি এর বিরোধিতা করে আসছে ওয়্যারহাউজগুলো। সফ্টওয়্যারের ব্যবহার তাদের ক্লায়েন্টদের গোপনীয়তা রক্ষার ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে, এমন ঠুনকো যুক্তিতে তারা একটি মামলাও করেছে।
এক তদন্তের মাধ্যমে রাজস্ব বোর্ড এই অবৈধ বাণিজ্যের উপর নতুনভাবে আলোকপাত করেছে। তদন্তে উঠে এসেছে, অ্যালকোহল আমদানিতে দেশে সর্বোচ্চ ৬০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক দিতে হয়, যা অযৌক্তিকভাবে অনেক বেশি। এটি কেবল ওয়্যারহাউজগুলোকে চোরাকারবারিদের সঙ্গে অবৈধ ব্যবসায় জড়িত হতে উৎসাহিত করছে।
কর কর্মকর্তারা এ ব্যাপারে সম্পূর্ণরূপে সচেতন যে, উচ্চ শুল্ক হার এই অবৈধ ব্যবসাকে উৎসাহিত করছে। কিন্তু তারপরেও তারা শুল্ক কমাতে নারাজ। তাদের বক্তব্য 'রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত' মদের ব্যবসার কালো বাজারকে আরও স্থিতিশীল করছে।
এদিকে, অবৈধ মদের বাজারের বিশাল আকার দেখা গেছে এক পরিসংখ্যানে।
২০১৮-১৯ অর্থবছরে কূটনৈতিক মর্যাদাসম্পন্ন প্রায় দেড় হাজার ব্যক্তির জন্য ওয়্যারহাউজগুলো ৪৭ লাখ লিটার মদ আমদানি করেছে। অর্থাৎ গড় হিসেবে প্রতিদিন একজন ব্যক্তি সাড়ে ৮ লিটারের বেশি অ্যালকোহল সেবন করেছে, যা সত্যিই অকল্পনীয়।
এর মাধ্যমেই পরিষ্কারভাবে বোঝা যায়, আমদানির সিংহভাগই প্রবেশ করছে কালোবাজারে।
কমেছে বৈধ আমদানি, বেড়েছে চোরাচালান
এনবিআরের চেয়ারম্যান আবু হেনা মোঃ রহমাতুল মুনীম বলেন, "বন্ডেড ওয়্যারহাউজগুলো যে অবৈধ মদ ব্যবসায় সংক্রান্ত কর্মকাণ্ডে জড়িত, সে ব্যাপারে তাদের কাছে তথ্য রয়েছে।" তবে তিনি মনে করেন, সফটওয়্যারটির বাধ্যতামূলক ব্যবহার কূটনৈতিক ওয়্যারহাউজগুলোতে মদের ব্যবসাকে বৈধতা দেবে।
অবৈধ ব্যবসা ঠেকাতে এনবিআর ওয়্যারহাউজগুলোর আমদানি সীমা কমিয়ে দেওয়ার দুই বছর পরেই মদ আমদানি প্রায় অর্ধেকে নেমে আসে। কিন্তু বৈধ আমদানি কমে গেলেও, বেড়েছে মদের চোরাচালান।
এই বন্ডেড ওয়্যারহাউজগুলো ছাড়াও আরও ৩৭টি ফার্মকে মদ আমদানির লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান গত বছর শুল্ক পরিশোধ করে প্রায় ৪৫ হাজার লিটার মদ আমদানি করেছে। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে, তারা বিক্রি করেছে ৬ লাখ লিটার মদ। অতিরিক্ত প্রায় ৫ লাখ ৫০ হাজার লিটার মদ তারা কোথায় পেল সেই প্রশ্নের কোনো উত্তর নেই।
দেশে মদের বাজারের আকার সম্পর্কে এনবিআরের চেয়ারম্যান রহমাতুল মুনীম বলেন, এ বিষয়ে তাদের কাছে কোনো তথ্য-উপাত্ত নেই। এর কারণ হিসেবে, বর্তমান ম্যানুয়াল সিস্টেমে যথাযথ তথ্য পাওয়া সম্ভব নয় বলে তিনি ব্যাখ্যা করেন।
এদিকে মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবদুস সবুর মন্ডল জানান, তার বিভাগ কখনই মদ আমদানি সংক্রান্ত কোনো তথ্য সংরক্ষণ করেনি। এটি অ্যালকোহল আমদানিকারকদের অবৈধ কার্যকলাপের উপর নজরদারি করা সংস্থার প্রধান দুর্বলতাগুলোর মধ্যে অন্যতম।
তবে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে বিভাগে যোগদানের পর, তিনি মদ আমদানি সংক্রান্ত তথ্য সংরক্ষণ করতে একটি ডেটা স্টোরেজ তৈরির উদ্যোগ নিয়েছেন বলে জানান।
এদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মোঃ মোকাব্বির হোসেন বলেন, "যেসব আমদানিকারকরা মদ আমদানির লাইসেন্সপ্রাপ্ত, তারা আমদানির পরিবর্তে বরং বন্ডেড ওয়্যারহাউজ থেকেই পণ্যটি সংগ্রহে বেশি আগ্রহী।"
বৈধ মাধ্যমে মদ আমদানিতে উৎসাহিত করতে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন, তা জানতে মাদকদ্রব্য বিভাগ লাইসেন্সপ্রাপ্ত আমদানিকারকদের কাছ থেকে আমদানি সংক্রয়ান্ত তথ্য সংগ্রহ করছে বলেও জানান তিনি। সেইসঙ্গে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বৈধ চ্যানেলে মদ সরবরাহ বাড়াতে আমদানি লাইসেন্স সহ বার সংক্রান্ত নতুন প্রস্তাব বিবেচনা করছে বলেও জানা গেছে।
মদ বিক্রির সঠিক পরিসংখ্যান জানতে এনবিআর এর সফটওয়্যার
এই অবৈধ বাজার বন্ধে ওয়্যারহাউজগুলোতে তদারকি জোরদার করতে ও শুল্কমুক্ত আমদানি সুবিধার অপব্যবহার ঠেকাতে সফটওয়্যার তৈরি করেছে এনবিআর।
ছয়টি কূটনৈতিক বন্ডেড ওয়্যারহাউজ লাইসেন্সধারীদের জন্য এই সফটওয়্যারের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ওয়্যারহাউজ ছয়টি শুল্কমুক্ত মাধ্যমে মদ আমদানি করে সেগুলো দেশের কূটনীতিক ও সুবিধাভোগী ব্যক্তিদের সরবরাহ করে থাকে।
বন্ডেড ওয়্যারহাউজগুলোর মধ্যে রয়েছে- ঢাকা ওয়্যারহাউজ লিমিটেড, ইস্টার্ন ডিপ্লোমেটিক সার্ভিসেস, এইচ কবির অ্যান্ড কো লিমিটেড, ন্যাশনাল ওয়ারহাউজ, সাবির ট্রেডার্স লিমিটেড এবং টিওএস বন্ড (প্রাইভেট) লিমিটেড।
এনবিআরের তথ্য অনুসারে, ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে দেশের মোট মদ আমদানির ৮০ শতাংশের বেশি সম্পন্ন হয়েছে এই ছয়টি বন্ডেড ওয়্যারহাউজের মাধ্যমে।
বর্তমানে, ওয়্যারহাউজগুলো পাসবুকের হার্ডকপি দেখে মদ বিক্রি করে থাকে। এর মধ্যে আবার প্রায়শই জাল পাসবুক কিংবা এমন পাসবুক দেখে মদ বিক্রি করা হয়। যেসব পাসবুকের মালিকরা (কূটনীতিক) দেশ ছেড়ে চলে গেছেন কিন্তু তাদের পাসবুকগুলো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ফেরত দেননি, সেসব ব্যবহার করা হয় এক্ষেত্রে।
ওয়্যারহাউজগুলো এসব পাসবুকের বিরুদ্ধে বিক্রি দেখিয়ে বড় অংকের মুনাফায় কালোবাজারে মদ বিক্রি করে। পরবর্তীতে, সরকারের বিভিন্ন দপ্তর এর সুবিধা ভোগ করে।
কিন্তু যখন সফ্টওয়্যারের মাধ্যমে এই বিক্রয় ট্র্যাক করা হবে, তখন ওয়্যারহাউজগুলোকে প্রয়োজনীয় তথ্য ইনপুট দিতে হবে সিস্টেমে। প্রতিটি কূটনৈতিক ওয়্যারহাউজকে বন্ড অটোমেশন সিস্টেমে আমদানি সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য যেমন - বিল অফ এন্ট্রি নম্বর, আমদানির তারিখ, অফিস কোড, চালান নম্বর ও তারিখ, ক্রয়কৃত পণ্যের নাম, ভলিউম ও মূল্য ইত্যাদি লিখতে হবে।
পরবর্তীতে বিক্রয়ের সময় তাদের সিস্টেমে লগ ইন করতে হবে এবং সফ্টওয়্যারে পাসবুক বা ট্যাক্স এক্সেম্পশন সার্টিফিকেট (টিইসি) নম্বর, বিক্রি হওয়া পণ্যের নাম, ভলিউম, বিল অফ এন্ট্রি নম্বর ও মূল্য সম্পর্কে প্রয়োজনীয় সকল তথ্য ইনপুট দিতে হবে।
সফটওয়্যার ব্যবহারে বন্ডেড ওয়্যারহাউসের আপত্তি
এতদিন ধরে এনবিআরকে ম্যানুয়ালি তথ্য সরবরাহ করতো বন্ডেড ওয়্যারহাউসগুলো। কিন্তু নতুন করে সফটওয়্যার ব্যবহার শুরু করায় আগের নিয়মে কাজ চালাতে পারছে না তারা।
এদিকে ব্যবসায়িক কার্যক্রমে সফ্টওয়্যার বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় এনবিআরের বিরুদ্ধে একটি রিট দায়ের করে ইস্টার্ন ডিপ্লোম্যাটিক সার্ভিসেস। তাদের দাবি অনুযায়ী, কোনোরকমের আইনি ভিত্তি বা কোনো পরামর্শ, যাচাইকরণ এবং নিরাপত্তা পরীক্ষা ছাড়াই ওয়্যারহাউসগুলোকে সফ্টওয়্যার ব্যবহার করতে বাধ্য করা হয়। তবে, এই আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়েছে।
বন্ডেড ওয়্যারহাউসগুলো পর্যবেক্ষণ করার জন্য এনবিআরের সফটওয়্যারটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মতি নিয়েই তৈরি করা হয়েছে। দেশে বসবাসকারী কূটনীতিক এবং বিদেশিদের জন্য অ্যালকোহল ক্রয়ের সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণে কাজ করবে এই সফটওয়্যার।
কিন্তু, কূটনৈতিক বন্ডেড ওয়্যারহাউসগুলোর মদের বিক্রি বন্ধ করা আদতে নিয়মের পরিপন্থী। লাইসেন্সের শর্তানুযায়ী নিরবচ্ছিন্নভাবে কূটনীতিক এবং সুবিধাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের পণ্য সরবরাহ করতে বাধ্য এই ওয়্যারহাউসগুলো।
চলতি বছরের ২৪ অক্টোবর এনবিআর ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে এ বিষয়ে নিয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠকের কার্যবিবরণী অনুযায়ী, যেসব গুদাম বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে নিয়ম মেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু এক মাসের বেশি সময় ধরে বিক্রি বন্ধ থাকলেও এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের কমিশনার কাজী মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, "বন্ডেড ওয়্যারহাউসগুলো বিক্রি বন্ধ করে দিলেও গ্রাহকদের কাছ থেকে অভিযোগ না পাওয়া পর্যন্ত আমরা কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছি না।"
মদের আমদানিতে উচ্চ কর ব্যবসার জন্য ক্ষতিকারক
বর্তমানে, মদ আমদানিতে ৩০০ থেকে ৬০০ শতাংশ আমদানি শুল্ক দিতে হয় আমদানিকারকদের।
আমদানিকারকদের জন্য একটি সময়োপযোগী শুল্ক নির্ধারনের উদ্যোগ নিয়েছিল এনবিআর। কিন্তু বন্ডেড ওয়্যারহাউসগুলোর প্রতিরোধের কারণে তা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন রাজস্ব বোর্ডের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা। বিদ্যমান উচ্চ আমদানি শুল্কের প্রধান সুবিধাভোগী এই ওয়্যারহাউসগুলো।
অ্যালকোহলের উপর উচ্চ আমদানি শুল্ক নির্ধারিত থাকায় আমদানিকারকরা বন্ডেড ওয়্যারহাউস থেকে তাদের চাহিদা সংগ্রহ করতে বাধ্য হন।
রাজস্ব বোর্ডের ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, "আমদানি শুল্ক কমানো হলে এই খাত থেকে সরকারের রাজস্ব বাড়ার পাশাপাশি বন্ডেড ওয়্যারহাউসগুলোর অবৈধ বাণিজ্য বন্ধ করাও সহজ হবে।"
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, বিদ্যমান চাহিদা মেটাতে মদের সরবরাহ বাড়ানোর জন্য কর আরোপের বিষয়ে মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের যে কোনো প্রস্তাব ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করতে পারে রাজস্ব বিভাগ।
এদিকে বন্ডেড ওয়্যারহাউসগুলো কেবল ডিজিটালাইজ করতেই অনিচ্ছুক নয়, এমনকি তারা নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষকেও আমদানি ডেটা সরবরাহ করতে চায় না। এটি মূলত তাদের অস্পষ্ট ব্যবসায়িক কার্যক্রমের প্রতিচ্ছবি।
উদাহরণস্বরূপ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বিরুদ্ধে পিটিশন দাখিলের বিষয়টি উল্লেখ করা যায়। নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর তাদের মাদকদ্রব্য আমদানি সম্পর্কে ডেটা সরবরাহ করতে বলায় লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে পিটিশন দাখিল করেছিল বন্ডেড ওয়্যারহাউসগুলো।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী, বন্ডেড ওয়্যারহাউসগুলো মদ আমদানির জন্য মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের অনুমতি নিতে বাধ্য। কিন্তু তারা নিয়ম অমান্য করে মদ আমদানি করছে। ফলে, ঠিক কি পরিমাণ মাদকদ্রব্য আমদানি হচ্ছে তার সঠিক তথ্য নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হাতে।
এর আগে ২০১৮ সালের আগস্টে, অনুমতি ছাড়া আমদানিকৃত মদ বাজেয়াপ্ত করার জন্য বন্ডেড ওয়্যারহাউসগুলোর বিরুদ্ধে একটি অফিস আদেশ জারি করে মাদকদ্রব্য বিভাগ। পাশাপাশি আইন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করে তারা।
বন্ডেড ওয়্যারহাউস লাইসেন্সধারীরা সেসময় এই মামলাকে চ্যালেঞ্জ করে একটি রিট পিটিশন দায়ের করে। বিষয়টি এখনও অমীমাংসিত।
মদের বাজারে খরা
চলতি বছরের ২ জুলাই থেকে সফ্টওয়্যার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করে এনবিআর। এরপর থেকেই বন্ডেড ওয়্যারহাউসগুলো ধর্মঘট ডাকে। এতে করে মদের বাজারে চলছে খরা। বর্তমানে দেশে ১৯০টি বার চালু থাকলেও সেখানে মদ পাওয়া যায় না।
এ বিষয়ে একাধিক মালিকদের সাথে কথা বলে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড। জানা গেছে, বাজারে এখন মদের সংকট থাকায় অনেকেই তাদের সীমিত স্টক থেকে উচ্চ দামে মদ বিক্রি করছে।
মদের অবৈধ ব্যবসার প্রধান কারণ হিসেবে উচ্চ আমদানি শুল্কের কথা উল্লেখ করে তারা বলেন, মদ আমদানির লাইসেন্স থাকা সত্ত্বেও ব্যবসায়ীরা হয় বন্ডেড ওয়্যারহাউস থেকে মদ সংগ্রহ করে অথবা মিথ্যা ঘোষণার মাধ্যমে আমদানি করে।
এই অবস্থায় আমদানি শুল্কের পরিমাণ যৌক্তিকভাবে পরিবর্তন না করা হলে এবং বন্ডেড ওয়্যারহাউসের জন্য সফ্টওয়্যার বাধ্যতামূলক করা হলে মদের বাজারে একটি গুরুতর সংকট তৈরি হবে বলে আশঙ্কা রয়েছে সংশ্লিষ্টদের।
এদিকে সফ্টওয়্যার ব্যবহার বিষয়ে জোর দেওয়ায় ২০২০-২১ অর্থবছরে বন্ডেড ওয়্যারহাউসগুলোর মদ আমদানি ব্যাপকভাবে কমেছে।
২০২০-২১ অর্থবছরে, ২৫ লাখ লিটার বিদেশী মদ আমদানি করেছে বন্ডেড ওয়্যারহাউসগুলো। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এর প্রায় দ্বিগুণ মদ আমদানি হয়েছিল বলে জানায় এনবিআর।
বৈধ আমদানির কমে যাওয়ায় গত অর্থবছরে বেড়েছে চোরাচালান।চলতি বছরের প্রথম ১০ মাসে বিভিন্ন সরকারী সংস্থা প্রায় ২ লাখ বোতল এবং ৩ হাজার লিটার বিদেশী মদ বাজেয়াপ্ত করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বিভাগ। গত পাঁচ বছরের মধ্যে এটি সর্বোচ্চ।
এমতাবস্থায় অবৈধ ব্যবসা ও বন্ডেড ওয়্যারহাউস থেকে লিকেজ বন্ধের লক্ষ্যে মদের আমদানি শুল্ক কমিয়ে আনার পরিকল্পনা করছে এনবিআর। এছাড়া, বৈধভাবে সরবরাহ নিশ্চিত করতে বার লাইসেন্স বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।