‘সাইবার মানডে’ কী?
বিশ্বজুড়ে শপিংপ্রেমীদের কাছে 'ব্ল্যাক ফ্রাইডে সেল' এক জনপ্রিয় নাম। কিন্তু শপিংপ্রেমীদের জন্য আরো একটি বহুল প্রতীক্ষিত বিষয় হলো 'সাইবার মানডে' যা সম্পর্কে আমরা খুব কমই জানি।
এই দুটি দিনেই সবার জন্য সুযোগ থাকে খুব কম খরচে প্রচুর জিনিস কেনার। ক্রিসমাসকে উপলক্ষ্য করে গেমিং এর জিনিস থেকে শুরু করে ল্যাপটপ পর্যন্ত সবকিছুর উপরেই থাকে দারুণ সব অফার।
কিন্তু যেহেতু ব্ল্যাক ফ্রাইডের সময় শেষ হয়েই গেছে তাই এই মুহূর্তে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড, যেমন- আমাজন, আর্গোস, কারিস পিসি ওয়ার্ল্ড, জন লেভিস অ্যন্ড পার্টনারস ও অ্যাপল ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান যারা তাদের হাজারো পণ্যের উপর প্রায় ৮০% পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছে, সেখান থেকে কেনাকাটার জন্যে সাইবার মানডেই ক্রেতাদের জন্য শেষ সুযোগ।
যদিও ব্ল্যাক ফ্রাইডে ও সাইবার মানডে দুই জায়গায়ই পণ্যের প্রায় একই ধরণের অফার থাকে, তবুও দুটির মধ্যে সামান্য বৈশিষ্ট্যগত পার্থক্য রয়েছে।
প্রতিবছর সাইবার মানডে অনুষ্ঠিত হয় থ্যাংকসগিভিং এর ঠিক পরের সোমবারে এবং তার মানে হচ্ছে এই বছরে সেই দিনটি ছিল গত ৩০শে নভেম্বর!
সাইবার মানডে সর্বপ্রথম অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০০৫ সালে। সেই বছর একদল অনলাইন রিটেইলার বলে যে 'খুব শীঘ্রই সাইবার মানডে হতে যাচ্ছে বছরের সবচে বড় শপিং ডে।'
সাইবার মানডে দিনটি ঠিক করার পেছনে একটি কারণ রয়েছে। ২০০৪ সালে এক গবেষণায় দেখা যায় যে থ্যাংকসগিভিং এর ঠিক পরের সোমবারেই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ কেনাকাটা করে। সেখান থেকেই 'সাইবার মানডে' শব্দটি এসেছে।
কেন সাইবার মানডে দিনটি ব্ল্যাক ফ্রাইডে থেকে আলাদা?
ব্ল্যাক ফ্রাইডে ও সাইবার মানডের মধ্যে পার্থক্য হলো এই যে প্রথমটি শুধুমাত্র দোকানে গিয়ে পণ্য কেনার ক্ষেত্রে ডিসকাউন্ট প্রযোজ্য; অপরদিকে সাইবার মানডের ছাড় অনলাইন কেনাকাটায় প্রযোজ্য যা সেই বছরটিকে পুরোপুরি বদলে দিয়েছে।
কিন্তু বিগত বছরগুলোতে এই সামান্য পার্থক্যও ধীরে ধীরে মিলিয়ে যাচ্ছে কারণ ব্ল্যাক ফ্রাইডে ডিলগুলোও এখন অনলাইনের ক্ষেত্রে সহজলভ্য হয়ে উঠেছে।
ব্ল্যাক ফ্রাইডে ডিল আসলে শুরু হয়েছিল একটি একদিনের ইভেন্ট হিসেবে কিন্তু দ্রুতই এটি একটি এক সপ্তাহব্যাপী ইভেন্ট হয়ে ওঠে যেখানে বড় বড় ব্র্যান্ডগুলো তাদের পণ্যসমূহে বড় রকমের ছাড় দেয়।
অ্যাডোবি অ্যানালিটিকস গত কয়েকবছর ধরে সাইবার মানডে তে হওয়া খরচের হিসাব রাখছে, যেখানে দেখা গেছে যে এই ব্যয় প্রতি বছর বেড়ে চলেছে। যেমন ২০১৯ সালে এর সেল ছিল ৯ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার যা ২০১৬ ও ২০১৮ এর তুলনায় সমান গতিতে বেড়েছে।
সাধারণত সাইবার মানডে একটি ২৪ ঘন্টার শপিং উইন্ডো যা অনেকটাই ব্ল্যাক ফ্রাইডের মত। কিছু রিটেইলার হয়ত এর পরেও কিছুদিন পণ্যছাড় চালু রাখে যাকে তারা সাইবার উইক বলে।
তাই আগেপরে যে জিনিসগুলো আপনি কিনতে পারেননি কিংবা সহজলভ্য ছিলনা, সাইবার মানডেতে আপনি সহজেই সেসব পণ্য অসাধারণ সব মূল্য ছাড়ে কিনে নিতে পারবেন।