২ বছর পর গলায় আটকে থাকা টায়ার থেকে মুক্তি
গলায় গাড়ির টায়ার নিয়ে দিনের পর দিন পাহাড় থেকে পাহাড়ে ঘুরেছে একটি এলক (হরিণ পরিবারের প্রজাতিবিশেষ)। অবশেষে দুই বছরের চেষ্টার পর তাকে সেটি থেকে মুক্ত করা গেছে। ঘটনাটি যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডোর।
কলোরাডো পার্কস এন্ড ওয়াইল্ডলাইফ কর্তৃপক্ষ জানায়, সাড়ে চার বছর বয়সী এবং ২৭০ কেজি ওজনের এলকটিকে শনিবার সন্ধ্যায় ডেনভারের দক্ষিণ-পশ্চিমে পাইন জংশনের কাছে পাওয়া যায়; এরপর একে ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে সংজ্ঞাহীন করা হয়।
এলকটিকে সাহায্য করার উদ্দেশ্যে গত সপ্তাহে বন্যপ্রাণী কর্মকর্তাদের এটি চতুর্থ প্রচেষ্টা ছিল।
তবে দুঃখজনক হলো, টায়ারটি অপসারণের জন্য কর্মকর্তাদের এলকটির মাথার শিংয়ের (এন্টলার) বেশ খানিকটা অংশ কেটে ফেলতে হয়েছে। কারণ, কোনভাবেই টায়ারটির ইস্পাতের মধ্য দিয়ে তারা মেশিন চালাতে পারছিলেন না।
অফিসার স্কট মারডক জানান, "আমরা তার এন্টলারটি অক্ষত রেখে শুধু টায়ারটিই অপসারণ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পরিস্থিতি অন্য রূপ ধারণ করে এবং আমাদের যেকোন উপায়ে টায়ারটিকে সরিয়ে আনতে হয়"।
মারডক এবং তার সহকর্মী ডসন সোয়ানসন অনুমান করছেন, টায়ার, এন্টলার এবং সবকিছু মিলিয়ে এলকটির ওপর থেকে অন্তত ১৬ কেজি সমপরিমাণ বোঝা সরেছে।
সোয়ানসন বলেন, "আমি এমন একটি সম্প্রদায়ের মধ্যে কাজ করতে পেরে কৃতজ্ঞ যারা আমাদের রাজ্যের বন্যপ্রাণী সম্পদকে গুরুত্ব দেয়"। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে জেনে ৪০টি এলকের পালের মধ্য থেকে তিনি ঐ প্রাণীটিকে শনাক্ত করতে সক্ষম হোন।
তবে প্রায় দুই বছর গলার সাথে টায়ারটি ঝুলে থাকার পরেও এলকটির ঘাড়ের অবস্থা অনেক ভাল ছিল। আর এটা বিস্মিত করেছে সোয়ানসন এবং মারডককে। মারডকের ভাষ্যে, "ঘাড়ের পশমগুলোতে সামান্য ঘঁষা লেগেছিল। ছোটমতো একটু ক্ষতও দেখেছি, নিকেলের সাইজের হবে। এছাড়া তেমন কোন ক্ষতি চোখে পড়ে নি"।
"বরং এতটা ভাল অবস্থা দেখে অবাক হয়ে গেছি"।
অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে ডিসেম্বরের প্রথম দিককার সময়টুকু হলো হরিণদের প্রজননের সময়। এই মৌসুম চলায়ও এলকটিকে খুঁজে পেতে বেশি বেগ পেতে হয়নি বলে জানান মারডক।
২০১৯ সালে রকি মাউন্টেনে বড় শিংয়ের ভেড়া এবং ছাগলের সংখ্যার এক জরিপ চালাতে গিয়ে প্রথম এলকটির সন্ধান পান বন্যপ্রাণী কর্মকর্তারা।
কর্মকর্তাদের মতে, এবারই প্রথম নয়; এর আগেও বিভিন্ন সময় হরিণ, এলক, মু'জ, ভালুকসহ বিভিন্ন প্রাণীকে কাপড় শুকানোর দড়ি, হ্যামক, দোলনা, মরিচাবাতি, আসবাবপত্র, টমেটোর খাঁচা, পোল্ট্রি ফিড, লন্ড্রির ঝুড়ি, ফুটবল এবং ভলিবলের গোল দেয়ার জালে জড়িয়ে যেতে দেখেছেন তারা।
- সূত্র- দ্য গার্ডিয়ান